১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে বিশেষ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

বরিশাল বাণী: দিনে দিনে অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যক্ষমতা কমে যাচ্ছে। সামাণ্য রোগেই গুরুত্বর রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। আর দীর্ঘ মেয়াদী এই অসুস্থ্যতায় মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার করার ফলেই শরীরে নিরব ঘাতকের সৃস্টি হচ্ছে। মঙ্গলবার বিশ্ব অ্যান্টিবায়োটিক সচেতনা সপ্তাহ উপলক্ষ্যে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজী বিভাগে বিশেষ আলোচনা সভায় এ তথ্য তুলে ধরেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
সভায় বক্তারা বলেন, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ সেবন করা ঠিক নয়। এটির মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার ক্ষতিকর। অ্যান্টিবায়োটিক ঠান্ডা বা ভাইরাসজনিত রোগে কোনো কাজ করে না। যদি ভাইরাসজনিত রোগে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা হয়, তবে বিপজ্জনক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এ ধরনের চিকিৎসা চলতে থাকলে একটা সময় আসবে যখন ব্যাকটেরিয়াকে মারা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
বক্তারা বলেন, জীবনরক্ষাকারী ঔষধ হিসেবে এন্টিবায়োটিকের কোন বিকল্প নেই। ব্যাকটেরিয়া দিয়ে যে ইনফেকশন হয়, তার প্রতিকারে এন্টিবায়োটিক প্রয়োজন। তবে বিনা প্রয়োজনে, ডোজ সম্পূর্ণ না করে তা ব্যবহার করলে এন্টিবায়োটিক রেসিস্ট্যান্ট জীবাণু তৈরি করে; পরবর্তিতে যার ক্ষেত্রে বেশিরভাগ এন্টিবায়োটিক কাজ করে না। সুতরাং এন্টবায়োটিক ব্যাবহারে সচেতন হতে হবে।
মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে দিনভর আলোচনা সভা মধ্য দিয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে পালিত হলো বিশ্ব অ্যান্টিবায়োটিক সচেতনতা সপ্তাহ। শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের ১নং লেকচার গ্যালারীতে মাইক্রোবায়োলজী বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডাঃ মোঃ জাহাঙ্গির আলম’র সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের প্রধান অতিথি ছিলেন, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ ফায়জুল বাশার। বিশেষ অতিথি ছিলেন, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ এইচ এম সাইফুল ইসলাম। সভায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্যানেলে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজী বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডাঃ এমটি জাহাঙ্গীর হুসাইন, ডাঃ নাসির উদ্দিন মাহমুদ, বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ এ কে এম আকবার কবির। এছাড়া অতিথি হিসেব উপস্থিত ছিলেন কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যপক ডাঃ মোঃ নাজিমুল হক, প্রভাষক ডাঃ নাসরিন নাহার, ডাঃ রেজওয়ান কায়সার ও ডাঃ ইসরাত জাহান।
মেডিকেল কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক শিক্ষার্থী ও হাসপাতালের চিকিৎসকদের উপস্থিতিতে আলোচনা সভায় শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজী বিভাগের বিশেষজ্ঞরা আরো বলেন, আমাদের দেশে রোগীরা ওষুধের দোকান (ফার্মেসি) থেকে মুখস্থ অ্যান্টিবায়োটিক কিনে নিয়মবহির্ভূতভাবে সেবন করে থাকেন। ফলে ওষুধটির যথার্থ প্রয়োগ না হওয়ায় জীবাণুগুলো ধীরে ধীরে রেজিসট্যান্স হয়ে পড়ছে। কারন অ্যান্টিবায়োটিকের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা অন্য ওষুধের সঙ্গে এর কোনো ইন্টারঅ্যাকশন আছে কি না তা সাধারণ মানুষ জানেন না। তাই চিকিৎসকের পরামর্শের বাইরে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করতে গিয়ে অনেকে অন্যান্য সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন। বর্তমানে এন্টিবায়োটিকের অপব্যবহার শুধু বাংলাদেশই নয়, বিশ্বজুড়ে এটি একটি জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে।
উল্লেখ্য “সকলে মিলে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স প্রতিরোধ করি” শ্লোগান নিয়ে এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে প্রতি বছর ১৮ থেকে ২৪ নভেম্বর সপ্তাহব্যাপী বিশ্ব অ্যান্টিবায়োটিক সচেতনতা সপ্তাহ পালনের সহযোগীতা করে আসছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ আইডিসিআর, এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) সার্ভিলেন্স ইন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন সংগঠন।

সর্বশেষ