১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সরকারি সুবিধাসহ একজন সচিব এর রাজনীতি করা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন?

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

বরিশাল বানী ডেক্স :

সরকারি সুবিধাসহ রাজনীতি করা নিয়ে প্রশ্ন গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের
যুব ও ক্রীড়া  সচিবের পদ থেকে গত বছরের ১ জানুয়ারি অবসরে যাওয়া মেজবাহ উদ্দিন রাজনৈতিক বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহন করায় চাকুরির পিআরএল বিধি লঙণ নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন।

জাতীয় নির্বাচন সংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুসারে, কোন সরকারি কর্মকর্তা অবসরে যাওয়ার তিন বছরের মধ্যে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন না। তবে রাজনীতিতে অংশ নেওয়ার বিষয়ে কিছু বলা নেই।

অন্যদিকে সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর রাজনীতি করা যাবে কি না, এ বিষয়ে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-তে স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। ভোলা-৪ আসনে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে সদ্য অবসরে যাওয়া ক্রীড়া  সচিবের দায়িত্ব থেকে অবসরে যাওয়া মেজবাহ উদ্দিন  দলীয় রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার চাকুরি বিধি লঙন হওয়ার ঘটনাটি এখন আলোচনা সমালোচনায়!

যুব ও ক্রীড়া  সচিবের পদ থেকে ১ জানুয়ারি অবসরে যাওয়া মেজবাহ উদ্দিন কে এখনও কোনদলে আনুষ্ঠানিকভাবে কোন দলের সদস্য পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। ঈদুল ফিতরের পরে তিনি তার এলাকায় কয়েকদিন যাবৎ তার কতিপয় সমর্থকদের নিয়ে একটি দলের রাজনৈতিক শ্লোগান দিয়ে বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন তিনি। গতকাল সোমবার বিভিন্ন হাট বাজারে নিজেকে একটি রাজনৈতিক দলের দলীয় সংসদ সদস্য পদে নিজেকে প্রার্থী দাবি করে হাটবাজারে গণসংযোগে অংশ নিয়েছেন। জনমনে প্রশ্ন সদ্য অবসরে যাওয়ার পরে এখনও তিনি সরকারি গাড়ি বেতন-ভাতা ও সরকারি সুবিধা ভোগ করছেন, তিনি কীভাবে একটি রাজনৈতিকদলের রাজনীতিতে যুক্ত হতে পারেন? এমন প্রশ্ন সচেতন ব্যক্তি মহলের।
এনিয়ে তার নৈতিকতার প্রশ্ন উঠেছে।

সব ধরনের সরকারি সুবিধা নিয়ে সদ্য অবসরে যাওয়া মাত্রই কোন রাজনৈতিক দলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হওয়া কতটা যুক্তিক সেসব নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা সমালোচনায় তিনি।সরকারি চাকুরি বিধি অনুযায়ী, মেজবাহ উদ্দিন অবসরে যাওয়ার এক বছর অবসরোত্তর ছুটি (পিআরএল) ভোগ করবেন। পিআরএল থাকা অবস্থায় সরকারি চাকরিজীবীরা তাঁদের ছুটি চলাকালীন ১২ মাস মূল বেতন, বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতাসহ অন্যান্য প্রাপ্যতা পেয়ে থাকেন। ছুটি শেষে পেনশন-গ্র্যাচুইটি পান। সরকারি সুবিধা নেওয়া অবস্থায় কোন একটি রাজনৈতিক দলের হয়ে রাজনীতি করার অপ প্রয়াস সেই প্রশ্ন এখন জনমনে।

২০১৫ সালের আগে সরকারি কর্মকর্তারা অবসর প্রস্তুতিকালীন ছুটিতে বা এলপিআরে (লিভ প্রিপারেশন ফর রিটায়ারমেন্ট) যেতেন। ২০১৫ সালে এর নাম হয় অবসর–পরবর্তী ছুটি বা পিআরএল পোস্ট রিটায়ারমেন্ট লিভ। সরকারি চাকরি আইন ২০১৮ অনুসারে, ‘চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার পর চুক্তিভিত্তিক কর্মরত থাকা ব্যতীত, কোনো ব্যক্তির, বৈদেশিক বা বেসরকারি চাকরি বা কোনও প্রকল্পে চাকরি গ্রহণ, অন্য কোনো পেশা গ্রহণ, ব্যবসা পরিচালনা এবং বিদেশ যাত্রার জন্য সরকার বা কর্তৃপক্ষের অনুমতি গ্রহণের প্রয়োজন হবে না। তবে শর্ত থাকে যে সরকার বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ, কোনো বিশেষ ক্ষেত্রে, অনুরূপ ভিন্ন চাকরি বা পেশা গ্রহণ, ব্যবসা পরিচালনা বা বিদেশ যাত্রা বারিত করে অনুমতি নেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করতে পারবে।’
এনিয়ে নিরুৎসাহিত করেছে আইন।

সাবেক সচীব মেজবাহ উদ্দিন গত বছরের ১২ জানুয়ারি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে যোগদেন। এরপর গত ১ জানুয়ারি  তার ৫৯ বছর বয়স পূর্তিতে ১ জানুয়ারি ২০২৩ থেকে তিনি অবসরে যায়।অবসরের পরে সরকারি চাকরি বিধি অনুযায়ী চাকরিতে আরও ১ বছর পিআরএলে থাকবে।

অবসরে গিয়েই রাজনীতিতে মেজবাহ উদ্দিনের যুক্ত হওয়ার বিষয়ে বিশিষ্ট এক আইনজীবী বলেন, একজন সরকারি কর্মকর্তা অবসরের তিন বছরের মধ্যে কনও নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।মহান জাতীয় সংসদে এনিয়ে আইন পাস করেছে। এর অর্থ হচ্ছে, আমলাদের রাজনীতিতে না আসার ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে নির্বাচনের মতো লাভজনক পদে অংশ নেয়ার ব্যাপারে প্রকারান্তরে নিষেধ করা হয়েছে।

পিআরএলে যাওয়ার পরই রাজনীতিতে যুক্ত হওয়াকে বেআইনিও মনে করেন এই আইনজীবী। তাঁর মতে, যে ব্যক্তি সরকারি বেতন-ভাতা ও সুবিধা ভোগ করছেন, তিনি কীভাবে রাজনীতিতে যুক্ত হতে পারেন? এটা আইন সমর্থন করে না। তিনি বলেন, আইনের সবকিছু সাদা-কালো এভাবে লেখা সম্ভব নয়। তাহলে আইন করতে হাজার হাজার পৃষ্ঠা লাগবে। আইনের ধ্যান ধারণায় পিআরএলে থাকা অবস্থায় উচ্চপদস্থ আমলার রাজনীতি করাকে সমর্থন করে না।

সর্বশেষ