২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
কলাপাড়ায় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবিতে মানববন্ধন মাদারীপুরে মশলার বাজারে আগুন, দাম নিয়ন্ত্রনের বাইরে থাকায় ক্ষুব্ধ ক্রেতারা বানারীপাড়ায় চলমান ফেরিতে উঠতে গিয়ে মোটরসাইকেল নদীতে, রক্ষা পেল আরোহী দুর্নীতি রুখি --- লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল কাউখালীতে আবহাওয়া অফিসের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন বানারীপাড়ায় চলমান ফেরিতে উঠতে গিয়ে মোটরসাইকেল নদীতে, অল্পের জন্য রক্ষা আরোহীর চন্দ্রমোহনে সামাজিক বনায়নের গাছ কেটে বিক্রি করলেন প্রভাবশালীরা পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীর ব্যতিক্রমী আয়োজনে মুগ্ধ বরিশালবাসী বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের সহ-সভাপতি তরিকের অব্যাহতি প্রত্যাহার কাঁঠালিয়ায় সাপের কামড়ে ব্যবসায়ীর মৃ*ত্যু

সর্পদংশন প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় যা ‘জানতে হবে

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

প্রেস বিজ্ঞপ্তি:

সাপে কাটা দেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য সমস্যা। গ্রামাঞ্চলে গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে এবং বন্যার সময় বিভিন্ন প্রকারের সাপের উপদ্রব দেখা দেয়। কখনও কখনও সাপের কামড়ে লোক মারা যায়। সাপের কামড়ে মৃত্যু, পঙ্গুত্ব এবং অন্যান্য গুরুতর শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। বাংলাদেশে গ্রামে সাধারণত মে-অক্টোবর মাসে সাপে কাটার ঘটনা ঘটে। সাপে কাটা রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা ও প্রতিরোধে যা করবেন।

গবেষক অধ্যাপক মো. আবুল ফয়েজ, অধ্যাপক এ কে এম ফজলুর রহমান, অধ্যাপক অনিরুদ্ধ ঘোষ, ডা. চিন্ময় হাওলাদার, ডা. সায়রা খান, ডা. আবু শাহীন মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, ডা. এফ এম আতিকুর রহমান, ডা. আব্দুল্লাহ আবু সাঈদ, ডা. রুমানা রশীদ, ডা. নুসায়ের চৌধুরী, ডা. গীতা রানী দেবী ‘কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করে বাংলাদেশে সর্পদংশন প্রতিরোধ ও প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান’ বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা জানিয়েছেন। চলেন জেনে আসি এসব তথ্য।

বাংলাদেশের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষধর সাপ:
১. গোখরা বা কোবরা- ফণা তোলে এবং ফোস ফোস শব্দ করে। ইঁদুর খেতে বাড়ি-ঘরের আশে পাশে আসে।
২. চন্দ্রবোড়া/উলুবোড়া (রাসেলস্ ভাইপার)- শরীরে গোল গোল চাক বা শিকলের মতো ছাপ থাকে। চাষের জমি বা বাড়ী-ঘরের আশে পাশের জঙ্গলে থাকতে পারে।
৩. শঙ্খিনী বা শাঁকিনী গায়ে হলুদ ও কালো ডোরা কাটা থাকে। লাকড়ির স্তুুপ ও ছোট জঙ্গলে থাকতে পারে, খাবারের খোঁজে রাতে বসত ঘরে ঢুকতে পারে।
৪. সবুজবোড়া, বাঁশবোড়া/গাল টাউয়া- গায়ের রং সবুজ ও মাথা তিন কোনা চ্চা। সাধারণত গাছে ঝোপ-ঝাড়ে থাকে।

বিষধর সর্পদংশনের গুরুত্বপূর্ণ উপসর্গ সমূহ:
১. দংশিত স্থান দ্রুত (তাড়াতাড়ি) ফুলে যাওয়া।
২. দংশিত স্থানে ক্রমাগত (অনেক ক্ষণ) রক্তপাত হওয়া।
৩. ঘুম ঘুম ভাব। চোখের উপরের পাতা ভারী হওয়া বা বুজে আসা।
৪. প্রস্রাব কমে যাওয়া, কালো রং এর প্রস্রাব হওয়া।

সর্পদংশনের প্রাথমিক চিকিৎসা: আশ্বস্থকরণ-শান্ত থাকুন
১. দংশিত অঙ্গ নড়াচড়া করা যাবে না (বিশ্রাম/অচল করা, স্প্লিট দিয়ে)
২. মোটর যানে রোগীকে দ্রুত উপজেলা হাসপাতালে নিন: সিএনজি, এ্যাম্বুলেন্স, বাইক, ইঞ্জিন নৌকা/স্থানীয় প্রচলিত যানবাহন দিয়ে হাসপাতালে নিবেন।
৩. অযথা সাপ মারবেন না। দংশন করা সাপটি কেউ মেরে থাকলে সনাক্তকরণের জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাবেন। তবে সাপ মারার জন্য কিংবা ধরার জন্য অযথা সময় নষ্ট করবেন না। সাবধান! খালি হাতে সাপ ধরবেন না।

সর্পদংশনে যা করবেন না:
১. ভয় পাবেন না, সর্পদংশনের চিকিৎসা আছে।
২. বমি করানোর চেষ্টা করবেন না। কথা বলতে অসুবিধা হলে খেতে দিবেন না।
৩. ‘ওঝা’/বৈদ্যের চিকিৎসা নিবেন না।
৪. দংশিত অঙ্গ কাঁটা ছেড়া করবেন না।
৫. দংশিত অঙ্গে গিঁট দিবেন না।

কিভাবে সর্পদংশন এড়ানো যায়-

১. সাবধানে হাঁটা: আলো-লাঠি, বুট। ঘাসের মধ্যে কিংবা ঝোপ-ঝাড়ের ভিতর আপনাকে যদি হাঁটতে হয় তাহলে খুব সাবধানে হাঁটুন ও লম্বা জুতা কিংবা বুট জুতা পড়ুন। গর্তের মধ্যে হাত-পা ঢুকাবেন না।
২. চৌকি-মশারী: ঘুমের সময় বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করুন- খাটের উপর ঘুমাবেন, মশারী ব্যবহার করুন, মেঝেতে ঘুমাবেন না। মশারী তোশকের নিচে ভালো করে গুঁজে দিন।
৩. বসতবাড়ী: প্রাণী ও খাবার সামগ্রী মুক্ত, শোয়ার ঘরে মুরগী/শস্য রাখবেন না। শোয়ার ঘরের সাথে খাবার যেমন- ধান-চাল, হাঁস-মুরগী, কবুতর রাখবেন না। এসব ইঁদুরকে আকর্ষণ করে যার খোঁজে সাপ ঢুকতে পারে।
৪. বাড়ীর চারপাশ পরিষ্কার: আঙ্গিনা ময়লা-আর্বজনা মুক্ত রাখুন। বাড়ী ও চাষ করার জমির মধ্যে দূরত্ব রাখুন।
৫. শস্য পাহাড়া-সাবধানতা: রাতের বেলায় শস্য, ফলের বাগান কিংবা মাছ পাহাড়া দেওয়ার সময় মাটিতে কিংবা মাচায় ঘুমানোর বা শোয়ার ব্যাপারে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করুন।
৬. মাছ ধরার সাবধানতা: মাছ ধরার সময় ‘চাঁই’ বা জালের মধ্যে হাত দেওয়ার আগে সাপ আছে কিনা দেখে নিন।
৭. স্তুপাকৃত/জমাকৃত সামগ্রী সাবধানে নাড়াচাড়া করুন। পতিত গাছ, লগ, জ¦ালানী লাকড়ি, খড়, ইট, উঁইয়ের ঢিপি সরানোর সময় বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করুন।
৮. গর্তে হাত না দেয়া। সাপ বসত বাড়ীর গর্তে বা ফাটলে লুকিয়ে থাকতে পারে কাজেই এগুলো মেরামত করুন।

বিষধর সর্পদংশনের সফল চিকিৎসা আছে। সর্পদংশন প্রতিরোধ ও প্রাথমিক চিকিৎসায় কমিউনিটি হস্তক্ষেপ সমূহঃ পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার ৩০টি কমিউনিটি এলাকা। যেখানে উঠান বৈঠক করা হয়েছে ৪৫০টি, কমিউনিটি ক্লিনিক স্টেকহোল্ডার সভা-৩০টি, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য শিক্ষা ২ সপ্তাহ অন্তর, স্কুল/কলেজ/মাদ্রাসা সেমিনার/ক্লাস- ৯০টি, বয়াতী সংগীত- ৩০টি, রেডিও নাটিকা ম্যাসেজ বছর ব্যাপী, ভিডিও এসএমএস- বিভিন্ন স্থান, মোবাইল, ক্যাবল টিভি, ৪ ধরনের পোষ্টার- ৭০০০ কপি; ফ্লিপচার্ট’; লিফলেট- ১০০০০ কপি সাথে পত্র-পত্রিকায় লেখা।

সর্পদংশন প্রতিরোধ করুন, নিকটস্থ হাসপাতালে দ্রুত চিকিৎসা নিন, জীবন বাঁচান। উপজেলা হাসপাতালে বিষধর সর্পদংশনের ঔষধ এন্টিভেনম ও অন্যান্য বৈজ্ঞানিক চিকিৎসা আছে। অন্যকে জানান। আপনাদের সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ।

সর্বশেষ