১২ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সাজানো মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাবাসঃ মোস্তফার পরিবারের বিষাদময় ঈদ

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

স্টাফ রিপোর্টার: দীর্ঘ দিনের জমিজমা বিরোধের মামলায় সুবিধা করতে না পেরে অবশেষে অভিনব কৌশলে সাজানো মামলায় ঈদের আগ মুহুর্তে প্রতিপক্ষকে ফাঁসিয়ে কারাগারে পাঠাতে পেরে যেন তৃপ্তির ঢেকুর তুলছেন বোরহান উদ্দিন। বিজ্ঞ আদালতের দুই দফা নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও প্রতিপক্ষকে কারাগারে পাঠিয়ে দ্রুত গতিতে ভবন নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। ঈদের দিনগুলোতে কারান্তরিণ থেকে জামিনে বের হয়ে এসব কথা বলেন ভুক্তভোগী বিসিসি ২৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত মোজাফফর খলিফার পুত্র মোস্তফা কামাল। তিনি আরো বলেন, যে মামলায় আমি হাজতবাস করেছি সেই ঘটনার সাথে আমার কোন প্রকার সম্পৃক্ততা নেই। পুলিশ প্রশাসন মামলাটি গ্রহণের পূর্বে সরেজমিনে সত্যতা যাচাই করলে আমাকে হাজতবাস করতে হতো না। তিনি আরো জানান, কিছুদিন পূর্বে মৃত আবুল হোসেনের পুত্র বোরহান উদ্দিন আমার বিরূদ্ধে হয়রানী মূলক একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় আমাকে হেনস্তা করতে না পেরে আমার বিরূদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করে বোরহান উদ্দিন। বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে নির্মাণ কাজ চালানোর জন্যই আমাকে এভাবে হেনস্তা করা হয়। বোরহান উদ্দিনের পাতানো আত্মীয় আলমগীর মৃধা আমার বিরূদ্ধে এয়ারপোর্ট থানায় মামলা দায়ের করে। এখন আবার আমাকে হুমকি ধামকিও দেওয়া হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত ২৪ মার্চ নগরীর কাশিপুর আনসার অফিসের বিপরীত পার্শ্বে নির্মাণাধীন ভবনের শ্রমিকরা গোসল করতে যায় পাশের একটি পুকুরে। সেখানে স্থানীয় রুবেলের রেখে যাওয়া সাবান নিয়ে যায় শ্রমিকরা। পরে রুবেল এসে সাবান খুজে না পেয়ে শ্রমিকদের সাথে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয়। কয়েকজন শ্রমিক মিলে রুবেলকে বেধরক মারধর করে। খবর পেয়ে রুবেলের বাড়ির লোকজন আসলে পাল্টাপাল্টি মারামারি হয়্। স্থানীয়দের মধ্যস্থতায় সাবান চুরির ঘটনার তাৎক্ষণিক সমাধান হয়।উক্ত সাবান চুরির কাহিনীকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে স্বার্থ  হাসিলের উদ্দেশ্যে বোরহান উদ্দিন শ্রমিক আলমগীরকে দিয়ে এয়ারপোর্ট থানায় মামলা করান।  সেই মামলায় মোস্তফা কামালকে ১নং  আসামী করা হয় এবং ঈদের আগ মুহুর্তে মোস্তফাকে গ্রেফতার করেন এসআই সুমন চন্দ্র মজুমদার। যা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। এমনকি যাদের সাবান চুরি হয়েছে তারাও মোস্তফা কামাল আসামী হওয়ায় হতবাক। তারা আরো বলেন, একটি জমি নিয়ে ফেরদৌসি গং এবং গাজী মাইনদ্দিন গংদের মধ্যে একটি দেওয়ানী মামলা, সংযুক্ত হেবা ঘোষণা ও বাটোয়ারা মামলা চলমান। সেই মামলার গাজী মইনদ্দিন গংদের প্রতিনিধি হিসেবে মামলা পরিচালনা ও দেখাশোনা করছেন মোস্তফা কামাল।
নির্মাণাধীন ভবন মালিক বোরহান উদ্দিন বলেন, জমিতে নিষেধাজ্ঞা আছে কিনা সেটা দেখবে আদালত। মোস্তফা গংরা আমার নির্মাণাধীণ ভবনের শ্রমিকদের উপর হামলা চালায় ও মালামাল নিয়ে যায়। এ কারণে আমার শ্রমিক আলমগীর বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছে। তাতে একজন আটক হয়েছে শুনেছি। তিনি আরো বলেন, আমার স্ত্রী বিসিসির সংরক্ষিত আসনের একজন কাউন্সিলর। আমরা যাকিছু করি তা বুঝেশুনেই করি।
মামলার বাদী আলমগীর হোসেন বলেন, এই মারামারিটা মোস্তফা কামালই নাকি তার লোকজন দিয়ে করিয়েছে। সে কারনে তাকে আসামী করা হয়েছে। আমি ঘটনাস্থলে একটু পরে গিয়েছি তাই মোস্তফাকে ওখানে দেখিনি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এয়ারপোর্ট থানার এসআই সুমন চন্দ্র মজুমদার বলেন, মামলা দায়েরের পর ১নং আসামী মোস্তফা কামালকে গ্রেফতার করি। অন্যান্য আসামীরা জামিনে রয়েছে। তদন্তপূর্বক প্রকৃত দোষীরাই আইনের আওতায় আসবে। যেহেতু উক্ত জমিতে স্থিতাবস্থা বজায়ের আদেশ রয়েছে, সেখানে কাজ চললে তা বিজ্ঞ আদালতকে জানানো উচিৎ।
বিএমপি এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাসুদ আলম চৌধুরী বলেন, মামলাটি তদন্তনাধীন। এখানে কোন নিরাপরাধ ব্যক্তি হেনস্তা হবেনা। তাছাড়া বিজ্ঞ আদালতের স্থিতাবস্থা বজায়ের নির্দেশের মধ্যে যদি এই দাগ থাকে তাহলে অবশ্যই কাজ চলার কথা না।

সর্বশেষ