১৬ই জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সাবেক আইজিপি বেনজীরের সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামস জগলুল হোসেন বৃহস্পতিবার (২৩ মে) এ আদেশ দেন।দুদকের প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।আদালত সূত্রে জানা যায়, আদেশে বেনজীরের নামে গোপালগঞ্জ সদর, কোটালিপাড়া ও কক্সবাজারের ৮৩টি দলিলে বিভিন্ন স্থাবর সম্পদ ক্রোক ও ৩৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বেনজীরের সম্পদ ক্রোক ও হিসাব জব্দের জন্য দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিচালক মো. হাফিজুল ইসলাম আদালতে এই আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের সম্পদ ক্রোক ও জব্দ না করা গেলে তা হস্তান্তর হয়ে যেতে পারে। পরে রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা সম্ভব হবে না।সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক ও হিসাব জব্দের আদেশ দেন। আদালত আদেশে বলেন, মানি লন্ডারিং আইন ২০১২ এর ১৪ ধারা এবং দুদক বিধিমালা ২০০৭ এর বিধি ১৮ অনুযায়ী সব স্থাবর সম্পদ ক্রোক এবং অস্থাবর সম্পদ ফ্রিজের আদেশ দেওয়া হলো। ক্রোক হওয়া সম্পত্তি হস্তান্তর করা যাবে না এবং জব্দকৃত ব্যাংক হিসাবে টাকা জমা দেওয়া গেলেও উত্তোলন করা যাবে না। সেই মর্মে সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রার, এসি ল্যান্ড বিএসইসি ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংক সমূহের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের নির্দেশ দেওয়া হয়।এর আগে গত ৩১ মার্চ দৈনিক কালের কণ্ঠে ‘ঢাকায় বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হলে নতুন করে আলোচনায় উঠে আসেন পুলিশের সাবেক আইজিপি ও র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, স্ত্রী জিশান মির্জা এবং দুই মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর ও তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে অঢেল সম্পদ গড়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক।

ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেনজীরের অঢেল সম্পদের মধ্যে গোপালগঞ্জের সাহাপুর ইউনিয়নে সাভানা ইকো রিসোর্ট নামে এক অভিজাত ও দৃষ্টিনন্দন পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে। এ ছাড়া তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের নামে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ছয়টি কোম্পানির খোঁজ পাওয়া গেছে। পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে তার বিনিয়োগের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকার বেশি হতে পারে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঢাকার অভিজাত এলাকাগুলোতে বেনজীর আহমেদের দামি ফ্ল্যাট, বাড়ি আর ঢাকার পাশে বিঘার পর বিঘা জমি রয়েছে। দুই মেয়ের নামে বেস্ট হোল্ডিংস ও পাঁচতারা হোটেল লা মেরিডিয়ানের রয়েছে দুই লাখ শেয়ার।

পূর্বাচলে রয়েছে ৪০ কাঠার সুবিশাল জায়গাজুড়ে ডুপ্লেক্স বাড়ি, যার আনুমানিক মূল্য কমপক্ষে ৪৫ কোটি টাকা। একই এলাকায় আছে ২২ কোটি টাকা মূল্যের আরও ১০ বিঘা জমি।

অথচ গত ৩৪ বছর সাত মাসের দীর্ঘ চাকরিজীবনে বেনজীর আহমেদের বেতন-ভাতা বাবদ মোট আয় এক কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার ২০০ টাকার মতো হওয়ার কথা।

এদিকে, দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) চিঠি পাঠিয়ে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনও জানান, বেনজীর আহমেদ তার পদের অপব্যবহার করে তার আয়ের তুলনায় প্রতিবেদনে উল্লিখিত সম্পত্তিগুলো অধিগ্রহণ করেছেন বলে বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক এই মহাপরিদর্শক, তার স্ত্রী, বড় মেয়ে এবং ছোট মেয়ের নামে থাকা অঢেল সম্পদ কীভাবে অর্জিত হয়েছে, তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুদককে অনুরোধ করেন তিনি।

সর্বশেষ