প্রিয়াংকা ইসলাম: আধুনিক এই ইন্টারনেটের যুগে এসে, ডিজিটাল পদ্ধতির কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে বাঙালির শত বছরের ঐতিহ্য হাতে গড়া শৈল্পিক নান্দনিক ঈদ কার্ডের ব্যবহার। একটা সময় ছিল বন্ধুবান্ধব বা প্রিয়জনকে ঈদের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য ঘরে বসেই তৈরি করা হতো নিপুন কারুকাজ করা হাতে তৈরি ঈদ কার্ড গুলো। যার মাঝে ছিল ভালোবাসার ছোঁয়া। মনের মাধুরী মিশিয়ে নিপুণতার সাথে কাজগুলো করা হতো। যেখানে ছিল না যান্ত্রিক ছাপের ছোঁয়া। অনেক যত্ন নিয়ে, সময় নিয়ে সাধারণ মানুষ ঈদ কার্ড গুলো তৈরি করতেন। প্রিয়জনরাও প্রিয়জনের কাছ থেকে পাওয়া এই ঈদ কার্ডের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকতেন পুরো একটি বছর। কালের বিবর্তনে হাতে গড়া ঈদ কার জন্য এখন ইতিহাসের কালের সাক্ষী হয়ে যাচ্ছে। সময়ের বিবর্তনের সাথে সাথে ঈদ কার্ডের প্রচলন অনেকটাই কমে গেছে। ঈদ কার্ড এখন আর আগের মতো মর্যাদা পায় না।
আজকাল আর অলিগলিতে এতো দোকানও বসেনা আর আগের মতন। প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে মানুষও যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছে দিন দিন। কার্ড কিনে নিজের হাতে ২ লাইন লেখার চাইতে মোবাইলের কী-প্যাড আর কম্পিউটারের কী-বোর্ডে লিখতেই সবাই এখন স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। মোবাইলের ম্যাসেজ অপশনে গিয়ে একটি ম্যাসেজ লিখে সবাইকে ফরওয়ার্ড করা অথবা ফেসবুকে একটি ‘ঈদ মোবারক’ লিখা ছবিতে সবাইকে ট্যাগ করে দেয়াটা বর্তমানে ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু হাতে লেখা কার্ডের সাথে কি আর অনলাইন উইশের তুলনা হয়? সেটা কয়জনই বা ভাবছি আমরা!
হাতে গড়া ঈদকার্ড যারা বানাতে পারবেন না তারা
রকমফের অনুযায়ী বিভিন্ন দামের কার্ড পাওয়া যায় যেসব দোকানে সেখান থেকে কিনে নিতে পারেন যেমন, আর্চিস, হলমার্ক, হ্যারডস্ ইত্যাদি গিফটশপ গুলোতে পেয়ে যাবেন নানা মানের ও ডিজাইনের কার্ড। মিউজিক্যাল কার্ডও পাবেন এসব দোকানে। এছাড়াও রাস্তায় ছোট ছোট কিছু দোকান বসে হরেক রকমের কার্ড নিয়ে। চলার পথে এসব জায়গা থেকেও কার্ড কিনে ফেলতে পারেন।
তবে বর্তমানে করোনার ক্রান্তিকালে দোকান থেকে কিনতে পাওয়া ঈদ কার্ড পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। আর রাস্তায় ছোট ছোট দোকান বিষয়টি এবার কল্পনারও বাইরে। করোনার কারনেই যেন এই ঈদে দীর্ঘদিন পর ফিরে পাবে হাতে তৈরি ঈদ কার্ডের সেই পুরনো ঐতিহ্য! ( প্রতিবেদনে ব্যবহারিত হাতে তৈরি ঈদ কার্ড প্রস্তুতির ছবিটি প্রতিবেদক প্রিয়াংকা ইসলামের হাতে ঈদ কার্ড বানানোর সময তোলা। ছবি তুলেছেন অাল শাহারিয়ার নাবিল)