২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
বরিশালে ব্রেক ফেল করা বাসেরচাপায় হেলপার নিহত হবিগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের ৪ জন গলাচিপার গলাচিপায় বিভিন্ন শ্রমজীবীদের মে দিবসে সমাবেশ ও আলোচনা গলাচিপায় জাতীয় স্বাস্থ্য ও ৫০ তম কল্যাণ দিবস পালিত গলাচিপায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আব্দুল বারেক মিয়ার ২৮ তমতম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত মেহেন্দিগঞ্জে নির্মাণাধীন ঘরে পানি দিতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে রাজমিস্ত্রির মৃত্যু বরিশালে মসজিদ থেকে ১৩ কেজি গরুর মাংস চুরি মহান মে দিবসে জনতা ব্যাংক পিএলসি,এরিয়া কমিটি সি,বি,এর উদ্যোগে নানা কর্মসূচী পালন দুমকিতে চেয়ারম্যান প্রার্থী মেহেদী মিজান'র নির্বাচনী অফিস উদ্বোধন প্রাণ জুড়াতে কাঁচা আমের আইসক্রিম

হিজলায় স্বেচ্ছাসেবকদলের কমিটি গঠন নিয়ে চলছে কাদা ছোড়াছুড়ি

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

স্টাফ রিপোর্টারঃ
বরিশালের হিজলা উপজেলায় বিএনপির অঙ্গ সংগঠন জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবকদলের কমিটি গঠন নিয়ে দলের অভ্যন্তরে চলছে কাদা ছোড়াছুড়ি। বিশেষ করে মূলধারার বাহিরে থাকা স্থানীয় বিএনপির গুটি কয়েক নেতা প্রতিপক্ষ ঘায়েলে নানান কল্পকাহিনী সাজিয়ে পাঠক শূণ্য কথিত অনলাইনে সংবাদ ছাপিয়ে সেগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পদ প্রত্যাশীদের হয়রানি করছে। ফলে একদিকে যেমন দলের নেতাকর্মীদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে, অপরদিকে কুৎসা রটনাকারি ওই সমস্ত নেতাদের প্রতি ক্ষোভে ফুঁসছে সংগঠনের পদ প্রত্যাশী এবং তৃনমূলের নেতাকর্মীরা।
স্বেচ্ছাসেবকদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা জানান, বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ এই অঙ্গ সংগঠনের নেতৃত্ব প্রদানে যেমন চুলছেড়া বিশ্লেষন করতে হচ্ছে, তেমনিভাবে এখানে নেতৃত্ব গ্রহণেও তরুনদের একটি বিশাল কর্মীবাহিনী প্রতিযোগিতায়।
জানা যায়, গত কয়েকমাস পূর্বে বরিশালের হিজলা উপজেলাসহ জেলার দশ উপজেলা এবং ৬ পৌর স্বেচ্ছাসেবকদলের কমিটি গঠনের জন্য তৃনমূল পর্যায় থেকে পদ প্রত্যাশীদের বায়োডাটা (সিভি) জমা নেয় জেলা স্বেচ্ছাসেবকদল।
জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের দপ্তর থেকে জানা যায়, হিজলা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের কমিটিতে আহবায়ক ও সদস্য সচিব পদে বেশ কয়েকজন সাবেক ছাত্রদল নেতা বায়োডাটা জমা দিয়েছেন। তাদের মধ্যে সাংগঠনিকভাবে যোগ্য, সুপরিচিত ও ক্লিন ইমেজধারী, যারা রাজপথের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হবেন তাদের নেতৃত্বে নিয়ে আসা হচ্ছে। বিশেষ করে বিগত দিনের আন্দোলন-সংগ্রামে কার কি ভূমিকা ছিলো কেন্দ্রের নির্দেশে তা বিবেচনা করা হচ্ছে।
জানা যায়, হিজলা উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের অন্যতম মরহুম আব্দুল মন্নান খান ও উপজেলার গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির বর্তমান আহবায়ক মোসা: সালমা বেগমের ছেলে মো. আসাদুজ্জামান খান সজল সহ বেশ কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবকদলের আহবায়ক পদ প্রত্যাশী।
জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের বর্তমান কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক সজল সম্প্রতি ঘোষনা করা উপজেলা ছাত্রদলের একমাত্র আহবায়ক প্রার্থী ছিলেন। কিন্তু বয়সের কারণে ওই কমিটিতে আসতে না পারায় দীর্ঘদিন যাবত জেলা এবং উপজেলা শহরে দলীয় প্রতিটি কর্মসূচিতে নেতাকর্মীসহ সর্বদা ভূমিকা রাখায় স্থানীয় বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ অন্যান্য সংগঠনের শীর্ষ নেতারা ঐক্যবদ্ধভাবে আসাদুজ্জামান খান সজলকে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের আহবায়ক হিসেবে সুপারিশ করেন। কিন্তু স্থানীয় বিএনপির মূল ধারার বাহিরে অবস্থানকারি পদহীন মুষ্টিমেয় কয়েকজন নামধারী বিএনপি নেতা জেলা ও উপজেলা বিএনপিকে সাংগঠনিকভাবে দুর্বল করার মিশনে নেমেছে। স্বেচ্ছাসেবকদলের শীর্ষ পদে সজল খান আসতে না পারে এজন্য তারা বিভিন্ন মাধ্যমে কুৎসা রটাচ্ছে। অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকায় উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের কমিটিতে আহবায়ক হিসেবে অন্যান্য পদ প্রত্যাশীদের চেয়ে এগিয়ে থাকায় সজল খানকে ঠেকাতে তারা মরিয়া।
আহবায়ক পদের জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে চেষ্টা-তদ্বির করছেন সাবেক ছাত্রদল নেতা আব্দুর রশিদ, আব্দুল হামিদ, সাবেক ইউপি সদস্য নূরুল ইসলাম আকনসহ বেশ কয়েকজন। এদের মধ্যে সজল খান বিগত আন্দোলন-সংগ্রাম করতে গিয়ে বেশ কয়েকটি মামলার আসামী হলেও বাকিদের নামে নেই কোনো রাজনৈতিক মামলা। বরং তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ রয়েছে দলের মধ্যে ও স্থানীয় পর্যায়ে। একজনের বিরুদ্ধে রয়েছে বিদেশে পাঠানোর নামে বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে আত্মসাত করা। টাকা নিয়েও বিদেশ পাঠাতে না পারায় প্রতারণার শিকার পরিবারগুলোর হাত থেকে রক্ষা পেতে আহবায়ক পদ প্রত্যাশী সেই নেতা রাজধানীতে পালিয়ে ছিলেন দীর্ঘদিন। সাধারণ লোকজনের টাকা আত্মসাতকারিসহ বাকী পদ প্রত্যাশীরা কেন্দ্রীয় বিএনপির অনুমোদিত বরিশাল উত্তর জেলা এবং জেলা কমিটির অনুমোদিত হিজলা উপজেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের মূল ধারার কমিটির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে দলের মধ্যে দীর্ঘদিন বিভাজন সৃষ্টি করার মিশনে রয়েছে।
এদিকে সম্প্রতি হিজলা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের পদ প্রত্যাশী সজল খানকে নিয়ে পাঠকশূণ্য তথাকথিত বিভিন্ন অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখির বিষয়ে জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান খান সজল জানান, স্কুলজীবন থেকে ছাত্রদলের রাজনীতি শুরু করেছি। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্যের পরিবার আমাদের। পিতা-মাতা এবং ভাই-বোন সকলে দলের মাঠের কর্মী হয়ে অনেক হামলা-মামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছি। কোনদিনও পরিবারের কাউকে আ.লীগ বা অন্য দলে যোগদান করিয়ে সুবিধা আদায় করতে যাইনি।
তিনি আরও বলেন, তৃনমূলের নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন করায় সাবেক সভাপতি আলী আহম্মেদ হওলাদার ওরফে আলী ক্বারি’র প্রতি অসন্তোষ হয়ে ওয়ার্ড নেতারা আমার মা কে ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক নির্বাচিত করেছেন। এই কারনে আলী ক্বারি আমার বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে। এছাড়া যুবদলের সাবেক নেতা আলতাফ হোসেন খোকনের ছোট ভাই আব্দুর রশিদ স্বেচ্ছাসেবকদলের আহবায়ক পদে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ায় তিনি আমার বিরুদ্ধে বক্তব্য দিচ্ছেন।
হিজলা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক এ্যাডভোকেট নুরুল আলম রাজু বলেন, আসাদুজ্জামান সজল দলের পরিক্ষিত একজন কর্মী। উপজেলার সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সাথে তার সার্বক্ষনিক যোগাযোগ ও চমৎকার সর্ম্পক রয়েছে। জেলা ও উপজেলায় দলীয় প্রতিটি কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের নিয়ে সর্বসময় স্বত:ফূর্তভাবে অংশগ্রহন করে বলেও জানান তিনি।
হিজলা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আব্দুল গাফফার তালুকদার বলেন, স্বেচ্ছাসেবকদলের শীর্ষপদে আসাদুজ্জামান সজলের বিকল্প নেই। দল ও কর্মী পরিচালনার যোগ্যতা, রাজনীতির মাঠে সরব এবং বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে জেলা ও উপজেলা শহরের কর্মসূচিগুলোতে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিলো। এছাড়া যারা পদপ্রত্যাশী তারা রাজনীতির মাঠে অনুপস্থিত বলে জানান তিনি।
বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি মেজবা উদ্দিন ফরহাদ বলেন, যারা আসাদুজ্জামান সজলকে দলীয় নেতা নয় বলে বেড়ায় তাদের একেকজনের বয়সের চেয়ে দলের কর্মসূচিতে মাঠে নেমেছে সজল।
অপ্রতিদ্বন্দ্বি থাকা সত্বেও বয়সের কারণে ছাত্রদলের সভাপতি হতে পারেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, দলের জেলা কমিটির সভা-সমাবেশ বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করায় দলের মূল ধারার বিরুদ্ধে অবস্থানকারি ও সজলের প্রতিদ্বন্দ্বিরা বিভিন্ন ধরনের কথা বলছে।

সর্বশেষ