নিজস্ব প্রতিবেদক ::: পবিত্র রমজান মাস শুরু হতে এখনও ১৭ দিন বাকি। ইতোমধ্যে বরিশালের বাজারে রমজান মাসের নিত্যপণ্য চিনি, গুড়, ছোলা, ডাল, খেজুরসহ প্রায় সব পণ্যের দাম বেড়ে গেছে।
সরেজমিনে বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
এ অবস্থায় সবচেয়ে অসহায় পরিস্থিতিতে পড়েছে সাধারণ ক্রেতারা। দ্রুত বাজার মনিটরিং করে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার দাবি জানিয়েছে তাঁরা। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, সরকার দাম কমানোর কথা বললেও এখনো পাইকারিতে তাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।
রমজানে রোজাদারদের ইফতারে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় ছোলা বুট। এই ছোলার দাম গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ৮০ টাকার থেকে ২০ টাকা বেড়ে এখন ১০০ টাকায় কেজি বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি দাম বেড়েছে ইফতার তৈরিতে ব্যবহার করা ডালেরও।
বরিশালের বাজারগুলোয় মসুর ডাল ১১০ থেকে ১৪০, খেসারি ১০০, মুগডাল ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ৭০ টাকা কেজির বেসন এখন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। প্রকারভেদে চিড়া ৬০-৭০, মুড়ি ৮০-১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
কয়েকদিনের ব্যবধানে খুচরা বাজারে মানভেদে খেজুরের দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে ২০ থেকে ৫০ টাকা। প্রকারভেদে বাজারে ২৮০ টাকা থেকে ১৬০০ টাকা কেজি দরে কিনতে হচ্ছে খেজুর।
দাম বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে মুদি দোকানি আব্দুল মালেক বলেন, ‘বাজারে কয়েকদিন যাবত ডালের দাম ঊর্ধমুখি। তেল, চিনি আগের দামে বিক্রি হলেও ডালের দাম প্রতিদিনই ২-৩ টাকা করে বাড়ছে। আমরা ব্যবসায়ীরাও দাম বাড়ানোর পক্ষে নই।’
বিক্রেতা মো. রাসেল বলেন, ‘খেজুরের দাম আগের চেয়ে বেড়েছে। আমাদের বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে। পাইকারি বাজারেই এখন ১৫০ থেকে ২০০ টাকা বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তাই খুচরা বাজারেও দাম বেশি। আমদানি থাকলে দাম কমতে পারে।’
এদিকে পাইকারি বাজারে গুড়ের দাম নাগালের মধ্যে থাকলেও খুচরা বাজারে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজারে পাটা গুড় ১০৫ টাকা হলেও খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। এছাড়া খেজুরের পাটালি গুড় ২২০, তালের গুড় ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
গুড় বিক্রেতা মিঠুন বলেন, ‘রমজান মাসে গুড়ের চাহিদা বেশি থাকে। বর্তমানে পাইকারি বাজারে গুড়ের দাম নিয়ন্ত্রণে আছে। এই দাম রমজাম মাসেও থাকতে পারে। তবে আড়ৎদাররা যদি দাম বাড়িয়ে দেয় সেক্ষেত্রে বেশি দামে বিক্রি করতে হবে।’
জাকির হোসেন ও খোকন হাওলাদার নামের দুই ক্রেতার ভাষ্য, ‘রমজান মাস এলেই বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেড়ে যায়। অন্যসব দেশে রমজানে দাম কমে আর আমাদের দেশে দাম বাড়ে। যারা নিম্ন আয়ের মানুষ তাদের খুব কষ্ট হয়। এখনই বাজারে সব জিনিসের দাম বেশি। রমজানে এই দাম আরও বেড়ে গেলে সাধারণ মানুষের কষ্ট বাড়বে। তাই সরকারে উচিত বাজার মনিটরিং করা, যাতে দাম নিয়ন্ত্রণে থাকে।’
বরিশালের সুশীল সমাজের প্রতিনিধি আনিসুর রহমান খান স্বপন বলেন, ‘প্রতি বছর রমজান মাসে রমজান কেন্দ্রিক ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়। ব্যবসায়ীরা নিয়ন্ত্রণের কথা বললেও তা কার্যকর হয় না। তবে এ বিষয়ে জোরদার মনিটিরং দরকার। সরকারের উচিত রমজান মাসে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখা। এতে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে।’
বাজার পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশালের জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মাহে রমজানের সময় কিছু পণ্যের বাড়তি চাহিদা তৈরি হবে। এই সুযোগে সে সময় অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে দাম বাড়াতে না পারে। আমাদের মনিটরিং কার্যক্রম আরও বাড়ানো হবে, যাতে সাধারণ ক্রেতারা বিড়ম্বনায় না পড়ে।’