৫ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

বদলী আদেশের পরও স্বপদে থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের হয়রানী করছেন অধ্যক্ষ

স্টাফ রিপোর্টার :বরিশাল সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ সাহিদুর রহমান মজুমদারকে প্রত্যাহার করা হলেও এখনো দায়িত্বভার অর্পন না করে শিক্ষক ও কর্মচারীদের হয়রানী করে যাচ্ছেন। এমন অভিযোগ এনে তার প্রতিবাদে ২৭ মে বৃহস্পতিবার শিক্ষকরা কলেজ অভ্যান্তরে বিক্ষোভ করে। এছাড়া শিক্ষকরা শিক্ষা সচিব বরাবর একটি আবেদনপত্র বরিশালের জেলা প্রশাসককে প্রদান করেন।

২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে একাধিকবার সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন অধ্যক্ষ সাহিদুর রহমান।

২২ এপ্রিল ‘২১ তারিখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ স্বাক্ষরিত এক পত্রের মাধ্যমে অধ্যক্ষ কে প্রত্যাহার করে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে ন্যস্ত করা হয়। ২৯ এপ্রিল ২০২১ তারিখে সামরিক সচিবের পক্ষে লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবু হায়াত মোঃ রীশাদ মোরশেদ স্বাক্ষরিত পত্রের মাধ্যমে তাকে বিএমএ পদায়ন করা হয়। কিন্তু অদ্যাবধি তিনি বরিশাল সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্বভার অর্পণ করে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করেননি। বরং তিনি এই সময়ে  শিক্ষকদের হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ করছেন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তিনি কারণে অকারণে শিক্ষকদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এই বিষয় অবহিত করে প্রতিষ্ঠানের ৪০ জন স্থায়ী শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারী সচিব শিক্ষা মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করেছেন। একই আবেদন তারা সচিব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, জিওসি শেখ হাসিনা সেনানিবাস, মহাপরিচালক মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর, বিভাগীয় কমিশনার বরিশাল বিভাগ, প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, জেলা প্রশাসক বরিশাল, চেয়ারম্যান শিক্ষা বোর্ড বরিশাল, আঞ্চলিক পরিচালক মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর বরিশাল বরাবর প্রেরণ করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে প্রভাষক আবু মামুন জানান, অধ্যক্ষ মহোদয় এই প্রতিষ্ঠানে যোগদানের পর থেকেই বিভিন্ন ধরণের অনিয়ম-দুর্নীতি করে প্রতিষ্ঠানের সুনাম শূন্যের কোঠায় নিয়ে এসেছেন। তার বদলির আদেশ হলেও তিনি দায়িত্ব অর্পণ করে পদ ছাড়ছেন না বরং শিক্ষকদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করছেন।
প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক রেজাউল করিম খান বলেন, অধ্যক্ষ মহোদয় যোগদানের পর থেকেই বেশিরভাগ সময় ঢাকায় অবস্থান করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা গেলেও প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব কারো উপর দিয়ে যান না যে কারণে আমরা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হই এবং শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের তাঁদের প্রয়োজনীয় কাজকর্ম করতে এসে হয়রানির শিকার হতে হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাসুম বিল্লাহ বলেন, অধ্যক্ষ মহোদয় এই কলেজের জন্য একটি বিষফোঁড়া। যত বেশিসময় তিনি এই প্রতিষ্ঠানে থাকবে প্রতিষ্ঠানের ততোই বেশি ক্ষতি হবে। যেহেতু তার বদলির আদেশ হয়ে গেছে সেহেতু আমরা চাই যত দ্রুত সম্ভব সে যেন দায়িত্ব হস্তান্তর করে প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করে। আমার দুই তিন দিন অপেক্ষা করবো তিনি যদি এর মধ্যে দায়িত্ব অর্পণ করে প্রতিষ্ঠান ত্যাগ না করে তাহলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।

এই নিয়ে প্রতিষ্ঠান শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সারাদিন কলেজে বিক্ষোভ করে এবং পরবর্তীতে জেলা প্রশাসকের সাথে দেখা করে শিক্ষা সচিব কে দেয়া আবেদন পত্র জেলা প্রশাসককে হস্তান্তর করেন।

উল্লেখ্য,সাহিদুর রহমান মজুমদার ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর এক প্রজ্ঞাপনের আদেশের মাধ্যমে বরিশাল মডেল স্কুল এন্ড কলেজে প্রেষনে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। যোগদান করার পরেই আর্থিক অনিয়ম অর্থ আত্মসাৎ অর্থ তসরুপসহ বিভিন্ন  অভিযোগ উঠতে থাকে তার বিরূদ্ধে। তার বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক,কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা, অভিভাবক,-শিক্ষার্থী , সুশীলসমাজ সহ সর্বস্তরের লোকজন ক্ষুব্ধ ছিলো। অধ্যক্ষ সাহিদুর রহমান মজুমদারের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ সহ বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকান্ডের জন্য মাউশি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, ডিজি এফ আই,শিক্ষা মন্ত্রনালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয় বিভিন্ন সময় তদন্ত করে।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

সর্বশেষ