মোঃ আসাদুজ্জামান:
একা একা ভাবি আর মনে মনে বলি. লেখা লেখি কমিয়ে দেবো। লেখা লেখি করলে শত্রু বাড়ে। সুস্থ্য জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়। লিখলে কিছু হয় না। ভালো লেখা গুলো সরকার বা নেতৃত্বের শীর্ষ্য স্থানে হয়ত পৌছবে না।
আমিইবা কে? আমার এতো লেখার দরকার কি? মাঝে মাঝে ভাবি তারাই সঠিক বলেছন। তবে যখন দেখি ক্ষমতা ও অর্থ পিপাষু লোকগুলো অরন্য রোদন। সেখানে নিজেকে চুপ রাখা যায় না।
আমার পর্যবেক্ষন বলছে. একটি সাজানো পরিপাটি গোলাপ বাগানের সবগুলো গাছের শেকড় কাটতে শুনিপুন গোলাপ ধ্বংশকারী চকচকে পোকা গুলোর চাষ এখন গোলাপ বাগনেই হচ্ছে। অর্থাৎ চাষের ( ক্ষমতার সময়) মেয়াদ শেষে পোকা উড়ে যাবে আর ততক্ষনে গোলাপ বাগান শেষ।
এশিয়ার প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ টানা তৃতীয় মেয়াদে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার সময় বহু জায়গায় এমন অস্বস্তিকর অবস্থা । সবাই আওয়ামীলীগ। যারা দুর্দীনে সব জলাঞ্জলি দিয়ে দল করেছে. তাদের চেয়ে বড় আওয়ামীলীগও আছে । তাই আমার মনে হয় বিশ্বের অন্যতম ঘন বসতির বাংলাদেশে প্রায় ১৯ কোটি মানুষের মধ্যে এখন ২০ কোটিই আওয়ামীলীগ করছেন।
বাংলাদেশের লেখক কবি সাহিত্যিক সাংবাদিক বুদ্ধিজিবী ও প্রশাসনের একটা বড় অংশ কট্টোরপন্থী আওয়ামীলীগ বিদ্বেষী। অথচ তারাই ক্ষমতার আমলে বড় আ’লীগ। সরকারের গুরুত্বপুর্ণ দায়িত্বশীল পদে বসে আসল আওয়ামীলীগকে গিলে খাচ্ছে। পুলিশে বাবর বাহিনীর সদস্যরাই ফুল পাওয়ারে। এছাড়াও বিসিএসএ তোফায়েল ক্যাডার আর হবেনা এমন বলে যারা দেশে ভাইয়া ক্যাডার বাহিনী হিসাবে চাকরী দিয়েছেন তারা এই আমলেও দাপুটে ।
ছাত্র জীবনে পাশের ঘরে সহপাঠি অসুস্থ হলে বা মারা যাওয়ার খবর শুনে যে ছাত্রটি ঘর থেকে বের না হয়ে বই পড়তে ছিলো৷ সেই নিষ্ঠুর আন সোসাল ছাত্রটিই পরীক্ষায় প্রথম হয়। বিসিএস অফিসার হয়। সবাই তাকে ভালো বলে । বড় অফিসারগন বেশির ভাগ এমনই। যখনি যাহার তখনি তাহার। এই ঘরানায় আওয়ামীলীগ স্ব পক্ষের সমর্থকরা সংখ্যা মহা লঘু। তারা ক্ষমতার আমলেও চাপে আছে। তাদের ভালো পোস্টিং হয় না।
কারা বন্টন করেন তাদের? চেয়ারে বসায় কে? আফোস লাগে।
রাজনীতির মাঠ আরো ভয়াবহ। এখন আর ত্যাগীর খবর কেউ রাখেনা।
আমার পর্যবেক্ষন বলছে, বর্তমানে সরকারী আওয়ামীলীগের কাছে ত্যাগীরাই সব চেয়ে বড় বোঝা। যারা কোন দিন আওয়ামীলীগ করেননি এমন অনেকে হঠাৎ করে নৌকার মনোনয়নে এখন বড় আওয়ামীলীগ বা আসীম ক্ষমতার মালিক। কিন্তু তিনি আ’লীগের কর্মিই চিনেন না । তখন দ্বন্ধ হয়। আওয়ামীলীগ ও সরকার আলাদা হয়ে যায়। ফলে যারা সারা জীবন নৌকায় ভোট দিলো তারা ক্ষমতার আমলেও মার ও মামলা খায়। এই সুযোগ লুফে নেয় আওয়ামীলীগের প্রতিপক্ষরা। তখন কঠিন আওয়ামীলীগ বিরোধীরা হয়ে যায় বড় আওয়ামীলীগ। এভাবে বেশির ভাগ এলাকায় চলছে।
আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশ করেই এমপি মন্ত্রী বা উল্লেখ যোগ্য বড় পদ পাওয়াতেই ত্যাগী আলীগের যতো দুর্ভোগ। এতে দল চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পরেছে। আমার জরিপ বলছে।
আওয়ামীলীগ রাজনীতির স্বরনকালের সব চেয়ে দুর্বল সংগঠন বর্তমান আওয়ামীলীগ। দলীয় প্রধানের কথা অনুকরন না করে দল ভারী করতে অন্য দলের লোক সাথে নিয়ে গ্রুপ করা হচ্ছে।
নতুন আওয়ামীলীগের সংখ্যা এতো বাড়ছে যা দেখলে মনে হয় বাপ দাদার আমলেও বাংলাদেশে আওয়ামীলীগ ছাড়া অন্য কোন রাজনৈতিক দলের নামই শেনেনি তারা। প্রশাসনেও এমন অবস্থা। এক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর আমল হইতে যারা মাইর খাইয়া নৌকায় ভোট দিয়ে আসছেন তারা ওদের কাছে মহা অপরাধী ।
১৯ কোটি লোকের দেশে ২০ কোটি আওয়ামীলীগ গজিয়েছে। এই অবস্থা থেকে আওয়ামীলীগ বের হয়ে আসতে না পারলে এবং কঠোর না হলে সংগঠন আরো বহুগুনে পিছিয়ে যাবে। বাস্তবতা এমন হয়েছে নবাগত সরকারী আওয়ামীলীগ নেতারা ত্যাগী আওয়ামীলীগককে বলেন, তোরা কারা?
এখানে মনে হয় জনতার চেয়ে আওয়ামীলীগ বেশী। এটা রাজনৈতিক দলের জন্য শুভ লক্ষন নয়।
লেখকঃ সাংবাদিক ও আওয়ামীলীগ নেতা, বরিশাল মহানগর।
( দায় লেখকের )