১১ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

শায়েস্তাবাদে লকডাউনে যাত্রীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়ায় চলছে খেয়া

বরিশাল বাণীঃ

খেয়াঘাট লকডাউনে বন্ধ থাকার কথা থাকলেও চলাচল করছে খেয়া জরুরি প্রয়োজনে পাড়াপাড়ের জন্য আসা যাত্রীদের জিম্মি করে প্রায় ছয়গুনের থেকেও মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন ইজারাদাররা। বরিশালের শায়েস্তাবাদ উপজেলার যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম নৌপথ।যার সর্বোচ্চ ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে জনপ্রতি ১০ টাকা।

ইজারার শর্তমতে ভোর পাঁচটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত এই রেটে ভাড়া আদায় করতে হবে । অভিযোগ উঠেছে, প্রথম শ্রেণির প্রায় সবগুলো খেয়াঘাটেই সরকারি বিধি নিষেধ অমান্য করে অতিরিক্ত ভাড়ায় যাত্রী পারাপার করা হয়।

বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রশাসনের তৎপরতায় সরকারি বিধিবিধান মানার জন্য বলা হলে, বেশ কিছুদিন মানলেও তা থেমে যায় করোনা কালীন সময় লকডাউনে, যা সাধারণ মানুষের ভোগান্তির শিকার হয়ে দাড়িয়েছে বলে জানান যাতায়াত পদযাত্রীরা।
দক্ষিণ পানবাড়ি থেকে আগাত ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী মাওলানা মোঃ সাইফুল ইসলামের স্বজনরা জানান আমরা রোগী নিয়ে বরিশালে ডাক্তারের কাছে যাচ্ছি আমরা মোট পাঁচজন ঘাটে কোনো খেয়ার করার নেই। আমাদের তো যেতেই হবে ডাক্তার দেখাতে। এ অবস্থায় রিজার্ভ ট্রলারে আমরা ৫ জন সহ আরো ২0 জনের মতো উঠে কিন্তু বেঁকে বসেন ঘাট মালিক আসার পর আমাদের কাছ থেকে জোরপূর্বক 30 টাকা করে নেয়া হয় । এভাবে হাজার হাজার মানুষের অভিযোগ কিন্তু দেখার কেউ নাই । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৭০ বছর বয়সী একজন মুরুব্বী জানান এক জায়গায় ইজারাদাররা নেশাখোর আর প্রতিবন্ধী মাঝে দিয়ে ঘাট পরিচালনা করে ।যারা তাদের মনমতো হাঁকানো ভাড়া না দিলে মানুষকে হেনস্থা করে গালিগালাজ করে লোকলজ্জার ভয়ে মান-সম্মানের ভয়ে তাদের চাহিদা মতো টাকা দিতে বাধ্য থাকেন। আফসোস করে বৃদা আরো বলেন এর কি কোনো প্রতিকার নাই ? আমরা কি এদের কাছে জিম্মি হয়েই থাকবো। যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে এর স্থায়ী সমাধান চাই। অনেক সময় দেখা যায় পত্রিকা নিউজ হলে ২ থেকে ৪ দিন স্বাভাবিক থাকে এরপর আবার সেই পুরনো চেহারায় ফিরে যায়।
সবুজ নামের একজন বলেন আমি করোন পরীক্ষার জন্য বরিশাল জেনারেল হাসপাতালে যাওয়ার জন্য খেয়া ঘাটে খেয়া চালক আমার কাছে ৪০ টাকা ভাড়া দাবি করে। এসময় আমার সাথে আরো ২০-২৫ জন জরুরি প্রয়োজনে পারাপারে জন্য আসলে প্রত্যেকের কাছ থেকেই ৪০ করে ভাড়া আদায় করে আমাদের পারাপার করা হয়’। সবুজ মিয়া আরো বলেন, এখানের নিয়মিত ভাড়া ১০ টাকা, কিন্ত আমাদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে এভাবে গলাকাটা হয়, এটা দেখার মত কেউ কি নেই। একাধিক যাত্রীর ঠিক একই অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে শায়েস্তাবাদ ঘাট ইজারাদার কামাল ১০ টাকার ভাড়া ৪০ টাকা ভাড়া নেয়ার কথাটি শিকার করে উনি জানান, আমরা লকডাউন পরিস্থিতিতে ঘাট চালাই শুধুমাত্র ইমারজেন্সি যাত্রীদের অন্য চালাই আমাদের কিছু করার নাই, অল্প যাত্রী নিয়ে পার হতে গেলে ভাড়া বেশি পরবেই। জনপ্রতি ১০ টাকা নির্ধারিত ভাড়ার বিপরীতে ৪০ টাকা ভাড়া আদায় করে নিয়মিত খেয়া চলাচল করে।
উল্লেখ্য যে কোন মহামারী কিংবা দুর্যোগকালে আনন্দে আত্মহারা হয়ে যায় কারণ তারা এই মহামারী কিংবা দুর্যোগকে পুঁজি করে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে। এ যেন সাধারণ মানুষের কাছে মরার উপর খাড়ার ঘা ‌।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

সর্বশেষ