১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

একজন মানবিক পুলিশ অফিসার ডিআইজি আক্তারুজ্জামান

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

মামুন-অর-রশিদ: কয়েক বছর আগের কথা। তখন বরিশাল জেলা পুলিশের এসপি ছিলেন এস.এম আক্তারুজ্জামান। ফেসবুকে একজন পুলিশের এএসআই এর মৃত্যু সংবাদের পোস্টের নিচে এক ব্যবসায়ী তার পাওনা টাকার কথা কমেন্ট করলেন। বিষয়টি দেখে এসপি মহোদয় ঐ ব্যবসায়ীকে বরিশাল এসপি অফিসে যোগাযোগের অনুরোধ করে রিপ্লাই দিলেন। কিন্তু ঐ ব্যবসায়ী ভয়ে আতংকে চিন্তায় পড়ে গেলেন। পুলিশের বিরূদ্ধে পাবলিক প্লেসে কমেন্ট করায় নাজানি কি হয় !

ঐ ব্যবসায়ী অফিসে না আসায় তাকে আবার কমেন্ট করে একটি বিকাশ নাম্বার চাওয়া হলো। ভয়ে ব্যবসায়ী বিকাশ নাম্বার লিখে রিপ্লাই দিলেন। তার পাওনার পুরো টাকা খরচ সহ পৌছে গেল তার বিকাশ একাউন্টে। না কোন হয়রানীর শিকার তিনি হননি। আবেগ অনুভুতির সাথে পুরো ঘটনাটি ঐ ব্যবসায়ী একজন মিডিয়াকর্মীর সাথে শেয়ার করেন।

তৎকালীন সময়ে সদ্য বিবাহিত পুলিশ সদস্যদের পাঠানো হতে হানিমুনে। পুরো খরচ দিতেন এসপি আক্তারুজ্জামান তার ব্যক্তিগত টাকা থেকে। এমন দৃশ্য দেখে অভিভুত হয়েছিলেন অনেকেই। তাছাড়া সে সময়ে এসপি অফিসে কোন ভুক্তভোগী এসে বিনা সুরাহায় ফিরে যাওয়ার কোন দৃশ্য দেখা যায়নি।

অবশেষে সময়ে বিবর্তনে তিনি এখন বরিশাল রেঞ্জ পুলিশের ডিআইজি। তবে পদোন্নতি পেয়ে তার সেই মানবিক গুনাবলি একটুও কমেনি। বরং যথা নিয়েমে তা আরো বেড়ে গেছে। যার দৃষ্টান্ত ইতঃমধ্যেই তিনি উপস্থাপন করে ফেলেছেন। মাত্র কয়েকদিনে বরিশাল রেঞ্জ পুলিশকে মানবিক হতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন। সরাসরি নিজেই দাড়িয়েছেন মানবিক সহায়তা নিয়ে অসহায়দের পাশে।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি মানবিক পোষ্ট দেখে চিকিৎসা সহায়তার হাত বাড়িয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি এসএম আক্তারুজ্জামান। তার আর্থিক সহায়তা ও থানা পুলিশের সহযোগিতায় শিশু পুত্রের সু-চিকিৎসাসহ ওষুধ ক্রয় করতে পেরেছেন অসহায় দিনমজুর পিতা আলামিন আকন।

ঘটনাটি জেলার বানারীপাড়া উপজেলার সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের করপাড়া গ্রামের।আজ মঙ্গলবার সকালে আলামিন আকন জানান, ১২ জুলাই সকালে তার তিন বছরের শিশু পুত্র শাহ জালাল পা পিছলে পরে পায়ের গোড়ালি ভেঙ্গে যায়। এ অবস্থায় তার (শিশু পুত্র) চিকিৎসার জন্য বানারীপাড়া উপজেলা হাসপাতালে আনার পর প্রথমে কর্তব্যরত চিকিৎসকের পরামর্শে ২৫০ টাকা দিয়ে এক্সরে করা হয়। পরে শিশুর ভাঙ্গা পা ব্যান্ডেজ করার জন্য আরো সাতশ’ টাকা প্রয়োজন হয়।

আলামিন আরও জানান, কঠোর লকডাউনের কারণে তিনি কর্মহীন হয়ে পরায় তার পক্ষে এ টাকা জোগাড় করা অসম্ভব হয়ে পরে। পুরো ঘটনাটি ফেসবুকে পোস্ট করা হলে বিষয়টি বরিশালের চৌকস রেঞ্জ ডিআইজি এসএম আক্তারুজ্জামানের নজরে আসে। তিনি শিশুটির চিকিৎসার প্রয়োজনীয় অর্থ পাঠিয়ে দিয়ে বানারীপাড়া থানার ওসি হেলাল উদ্দিনকে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। তাৎক্ষনিক ওসি হাসপাতালে পৌঁছে শিশু শাহ জালালের চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রে লেখা ওষুধও ডিআইজি’র পাঠানো অর্থে ক্রয় করে দেয়া হয়।

পুলিশ কর্মকর্তার এ মহতী উদ্যোগকে বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষ সাধুবাদ জানিয়েছেন।

রেঞ্জ ডিআইজি সহ বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন শিশু শাহ জালালের দিনমজুর অসহায় পিতা আলামিন আকন।

সর্বশেষ