২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
গাবতলীতে উঠান বৈঠককালে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী সিটন ফুটপাতে জমে উঠছে ঈদ কেনাকাটা পূর্ব শত্রুতার জের ধরে গৌরনদীতে শিশুসহ ৪ সদস্যকে মারধর।। রোজার মাঝে রয়েছে আল্লাহর প্রতি সুদৃঢ় ঈমান রাখার সবিশেষ প্রশিক্ষণ —ছারছীনার পীর ছাহেব। গলাচিপায় মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে গৃহবধূকে মারধর কলাপাড়ায় প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রকাশ্যে খাল ভরাট বরিশালে অভয়াশ্রমের নিষিদ্ধ সময়ে মাছ ধরার অপরাধে ৮ জেলেকে জরিমানা বরিশাল-পটুয়াখালীসহ দেশের ৮ জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আশঙ্কা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে ভেসে এসেছে দুটি মৃত কচ্ছপ বাংলাদেশ বেতারের তালিকাভুক্ত গীতিকার হলেন কবি বিজন বেপারী

ঝালকাঠী কুমারপট্টি আদর্শ ব্যবসায়ী সমিতিঃ ২১ লাখ টাকা ঋণ পরিশোধে বাধা

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

স্টাফ রিপোর্টার : অবহেলিত এবং অসহায় মানুষদের আয়ের ক্ষেত্র তৈরী করে দেয়া এবং পুজির অভাবে যারা ব্যবসার প্রসার ঘটাতে পারছেন না ওই সকল ব্যক্তিদের স্বল্প সুদে ঋণ দিতে গড়ে তোলা ঝালকাঠির কুমারপট্টি আদর্শ ব্যবসায়ী সমিতি পরিকল্পিতভাবে ধ্বংসের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর এ জন্য তৎকালীন সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনির মোর্শেদকে দায়ি করা হয়েছে। এমনকি মনির মোর্শেদের কারনে ঋণ নেয়া ব্যক্তিরা ২১ লাখ টাকা ফেরত দিচ্ছেন না বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুরু থেকে এ সমিতির অধিন শতাধিক গ্রাহক থাকলেও ২০১৮ সালে মনির মোর্শেদের কারনে সমিতি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর গ্রাহকদের সঞ্চয়ের হিসাবে থাকা টাকা ফেরত দেয়া হয়। সমিতির তৎকালীন সভাপতি মো. আসাদুজ্জামান বলেন, সমাজসেবা অধিদপ্তরে লাইসেন্সে ২০১০ সালে এ সমিতির কার্যক্রম শুরু হয়। প্রতিদিন সর্বনিম্ন ১০টাকা করে এবং সর্বোচ্চ ২০টাকা করে গ্রাহকদের নিকট থেকে সঞ্চয়ী হিসাব নম্বরে টাকা জমা করা হতো। গ্রাহকরা তার সঞ্চয়ী হিসাব নম্বরের বিপরীতে একশ’টাকায় ৮টাকা সুদে ঋণ দেয়া হয় গ্রাহকদের মাঝেই। সুষ্ঠু সুন্দরভাবে চলছিল সমবায় সমিতির কার্যক্রম। ২০১৮ সালে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির সাধারন সম্পাদক হন মনির মোর্শেদ। সভাপতিসহ অন্য সকল সদস্যকে গ্রাহকরা মেনে নিলেও সম্পাদক মনির মোর্শেদকে কোনভাবে তারা মানতে পারেননি। তাকে কমিটি থেকে বাদ দেয়া না হলে কোনভাবে সমিতির মধ্যে থাকবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়া হয়। এতে করে কমিটি পরিচালনায় সমস্যা সৃষ্টি হতে থাকে। ওই সকল কারনে মনির মোর্শেদও সমবায় সমিতির অন্য সদস্য থেকে শুরু করে গ্রাহকদের উপর ক্ষুব্ধ হন। তাকে নিয়ে মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি হওয়ায় সমিতির কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বন্ধ করে দেয়ার পূর্বে গ্রাহকদের নিকট ১৭ লাখ টাকা বন্টন করে দেন সমিতির পরিচালনা কমিটি। সেই টাকার প্রমানপত্রও রয়েছে। ওই সময় থেকে ১৩ সদ্যস্যের মাঝে ঋণ রয়েছে ২১ লাখ টাকা। সঞ্চয়ের হিসাবের ১ লাখ টাকা ফেরত পাওয়া কাউন্সিল হাবিবুর রহমান, ৭৬ হাজার টাকা ফেরত পাওয়া রিকশাচালক ছালেক, ১৫ হাজার টাকা ফেরত পাওয়া মিজানুর রহমান ও ১ লাখ টাকা পাওয়া হারুন অর রশিদ বলেন, সমিতির কার্যক্রম যখন সচল ছিল তখন আমাদের অনেক উপকার হয়েছে। বিশেষ করে যে কোন সময় টাকা ঋণ নেয়া যেতো। এটা যে কত বড় উপকার তা আপনাকে ভাষায় বোঝাতে পাড়বো না। তাছাড়া ব্যবসা করার জন্যও স্বল্প সুদে ঋণ দেয়া হতো।

সমিতির ঋনে উপকার হয়নি একজন গ্রাহকও বলতে পারবেন না। কিন্তু সমিতি বন্ধ করে দেয়ার পর ওই সুবিধা থেকে আমরা বঞ্চিত হয়েছি। এ জন্য সমিতির ২/১ জন লোককে দায়ি করেন তারা। তবে কারোর নাম উচ্চারন করেননি। ওই সকল গ্রাহকরা আরো বলেন, ২০১৮ সালে কিছু গ্রাহকের সম্মতিতে ওই কমিটি গঠিত হয়। কিন্তু কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনির মোর্শেদের আচার ব্যবহার ভালো না থাকায় অর্ধশতাধিক গ্রাহক তাতে ক্ষুব্ধ হন। তারা মনির মোর্শেদকে সরিয়ে দিতে বলেন। তাকে তার পদ থেকে না সরানোর কারনে গ্রাহকরা তাদের সঞ্চিত টাকা উত্তোলন করতে থাকেন। এতে করে সমিতি পরিচালনায় সমস্যায় পড়তে হয় সেখানকার পরিচালনা কমিটিকে। এরপর তারা সভা করে সমিতির কার্যক্রম বন্ধ করে দেন এবং গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেন।
ঋণ সুবিধা পেয়ে এখনো টাকা পরিশোধ করেননি তাদের মধ্যে থাকা ইউনুস মোল্লা ঋণ নিয়েছে সাড়ে ৩ লাখ টাকা, ইউনুস আলী হাওলাদার ২ লাখ ৮১ হাজার টাকা, শহিদুল ইসলাম ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা, নান্না হাওলাদার ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা, সিনথিয়া আক্তার মুন্নি ৯১ হাজার টাকাসহ ১৩ জনের কাছে ঋনের ২১ লাখ টাকা রয়েছে। যা এখনো পরিশোধ করেননি ঋণ গ্রহীতারা। এ জন্য তাদেরকে একাধিকবার চিঠি দেয়া হলেও তার উত্তরও মেলেনি। এ জন্য মনির মোর্শেদই দায়ী। তার কারনে ওই সকল ঋণ গ্রহীতারা ঋণ নিয়ে তা আর ফেরত দিচ্ছেন না বলে সভাপতি অভিযোগ করেন। তাদের ঋণ দেয়ার কিস্তি বন্ধের পাশাপাশি মনির মোর্শেদ তার ম্যানেজার শহিদুল হকের নামে ২ লাখ টাকা ঋণ উত্তোলন করেন। ওই টাকাও আজ পর্যন্ত পরিশোধ করেননি। এ ব্যাপারে মুনির মোর্শেদ বলেন, ওই সময় যে কমিটি করা হয়েছিল তা ছিল পকেট কমিটি। ওই কমিটির কোন দায়িত্বে আমি ছিলাম না। তাছাড়া আমার বিরুদ্ধে তারা যে অভিযোগ করেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমার কারনে নয়, পকেট কমিটির কারনে গ্রাহকরা সরে যান। তাদের টাকা দেয়া হয়েছে কিনা তা তিনি জানেন না। ম্যানেজারের নামে ঋণ নেয়ার বিষয়টিও তিনি অস্বীকার করেন। কিন্তু ওই সময়ের কাগজপত্র পরীক্ষানীরিক্ষা করে দেখা গেছে মনির মোর্শেদ সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। সেখানে তাকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত করেন তৎকালীন নির্বাচন কমিশনার। ওই কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৯ সদস্যকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত করা হয়।

সর্বশেষ