১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কর্মস্থলে সিনিয়র-জুনিয়র সম্পর্ক

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

মুহাম্মাদ ইমাদুল হক ফিরদাউছ (প্রিন্স)

সম্পর্ক” শব্দটার মাঝে কেমন যেন একটা আত্মিক টান কাজ করে।আর সম্পর্কটা যদি হয় কর্মস্থলে, তাহলে তাতে যোগ হয় একটা এক্সটা দায়িত্ববোধ। আমাদের মাঝে একটা বদ্ধমূল ধারনা কাজ করে আমরা যারা সিনিয়র তাদের সাথে জুনিয়রদের একটা গ্যাপ না থাকলে কিসের সিনিয়র জুনিয়র! এই সেকেলে ধারনায় মত্ত থাকায় আমরা প্রতিনিয়ত জুনিয়র কলিগদের আস্থা হারাচ্ছি।

সেদিন একটা ভীনদেশী গল্প পড়ছিলাম। সিইও তার ড্রাইভারের সাথে যে কথোপকথন হয় তা খুবই অল্প কয়েকটা শব্দের মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকে। যেমন- অফিসে যাও, থামাও, চল, বাসায় যাও ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ (!) শব্দ। একদিন একটি শপিংমলের পাশে ড্রাইভারকে থামাতে বলার পর সিইও গাড়ীর দরজা খোলা রেখেই চলে যান এবং ৫ মিনিট পর একটা ঝড়ো হাওয়ার কারনে তা শব্দ করে বন্ধ হয়ে যায়। ড্রাইভার ভেবেই নিয়েছিল সিইও স্যার গাড়ির দরজা বন্ধ করেছেন। ১৫ মিনিট পর প্রায় ২০ কিলোমিটার যাওয়ার পর সিইও স্যারের কল আসলে সে পেছনে সিটে তাকেয়ে সিইও এর সিটের শূন্যতা টের পায়।

মাঝে মাঝে কর্মস্থলে আমাদের সম্পর্ক গুলোতে এমন শূন্যতা ভর করে যে, আমরা পাশের সিটে বসে থাকা মানুষ কে কোন প্রয়োজনে অনুরোধ না করে ই-মেইল সেন্ড করি! এতে মনের অজান্তেই সম্পর্ক গুলোর গলা টিপে টিপে আমরা হত্যা করছি তা আমরা কয়জনইবা উপলব্ধি করি? কর্মস্থলে সিনিয়র জুনিয়র এর মাঝে যে সমস্যাটা প্রথমে দেখা যায় তা হল সমঝতার অভাব। সিনিয়রের দায়িত্ব হল তার কাজের মিশন ভিশন তার জুনিয়রের সাথে আলোচনা করা। কাজের গুরুত্ব জুনিয়রকে বোঝানো। অনেক সময় সিনিয়রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ টি জুনিয়রের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নাও মনে হতে পারে। আর এর পেছনে যে কারন টি লক্ষ্য করা যায় তা হল জুনিয়রের দূরদর্শিতার অভাব। একজন সিনিয়রের দায়িত্ব হল তার জুনিয়রকে তার কাজটি কেন গুরুত্বপূর্ণ তা সম্পর্কে সম্যক ধারনা প্রদান করা। তাতে জুনিয়র নিজেকে কর্মস্থলের উন্নয়নের অংশিদার মনে করবে।

মানুষ মাত্রই ভুল করে। হয়ত অভিজ্ঞতার বিচারে কারো কম কারো বেশী। এ ক্ষেত্রে দু পক্ষকেই খেয়াল রাখতে হবে একই ভুলের পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়। এতে করে পরস্পরের মাঝে একটা দূরত্ব হওয়া টাও অস্বাভাবিক নয়। সে ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে কেন এ ভুল টা বার বার হচ্ছে তা চিহ্নিত করা এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া।

সবশেষে বলব, কর্মস্থলে উন্নতির পেছনে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের বিকল্প নেই। অন্যকে সন্মান করুন, নিজে সন্মানিত হউন।ধন্যবাদ।

✒️লেখকঃসরকারী কর্মকর্তা এবং গবেষক, সাহিত্যিক ও কলামিস্ট।

সর্বশেষ