২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

বরিশালে শিশু শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে দাঁত ফেলে দিল শিক্ষক

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

বরিশাল বাণী:শিশু শিক্ষার্থীকে স্কেল দিয়ে পিটিয়ে দাঁত ফেলে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে বরিশাল নগরের বাণীমন্দির সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালেয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
ঘটনার একদিন পরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইলেও নির্যাতনের অভিযোগ স্বীকার করে নানান কথা বলছেন ওই শিক্ষক।
তবে শিক্ষককে সংযত হওয়ার আহবান জানিয়েছেন অভিভবাকরা। সেইসাথে বিদ্যালয়ে গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচারও দাবি করেছেন তারা।
এদিকে অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।
শিক্ষকের পিটুনির শিকার শিক্ষার্থী মঈনউদ্দিন জানান, বরিশাল নগরের পুরতান কয়লাঘাট সংলগ্ন এলাকার বাণীমন্দির সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেনীর শিক্ষার্থী তিনি।
তিনি জানান, গতকাল রোববার দুপুরে স্কুলে সহপাঠীদের সাথে দুস্টুমি করছিলেন তিনি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক তুহিন কনা স্কেল দিয়ে তার মুখ মন্ডলে আঘাত করে। এতে তার ঠোট ফেঁটে যায়। পড়ে যায় উপরের পাটির একটি দাত।
শিক্ষার্থীর বাবা আলাউদ্দিন বলেন, ওই শিক্ষককে শিক্ষার্থীরাসহ অভিভাবকরাও ভয় পান। এরআগেও শিক্ষার্থীদের এভাবে মারধরের অভিযোগ রয়েছে, তবে কেউ বিদ্যালয় থেকে বের করে দেয়ার বয়ে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পায়না।
তিনি বলেন,ছেলেকে এভাবে নির্যাতন করার বিচার চাই আমরা।
যদিও নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে বাণীমন্দির সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক তুহিন কনা জানান,দুষ্টুমি করার কারনে শাসন করা হয়েছে মাত্র। নির্যাতনের মতো কোন ঘটনা ঘটেনি। আর যে দাতটি পড়ে গেছে, সেটি নড়ছিলো তাই ঘটনার সময় পড়ে যেতে পারে।
এদিকে পিকু মন্ডল নামে অপর এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, তার সন্তান এই শিক্ষিকার ভয়ে বিদ্যালয়েই যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। আর সালাম আক্তার নামে অপর এক অভিভাবক জানান, কয়েকদিন আগে এক মেয়েকে পিটিয়ে জখম করেছিলেন ওই শিক্ষিকা। যার মীমাংসা স্থানীয়ভাবে শালিসের মতো করে করা হয়।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে শিক্ষকা তুহিন কনা দাবি করেন আগের ঘটনার সবগুলোই মিমাংসা হয়ে গেছে। তাই এসব বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে নানান অযুহাতও দেখান তিনি।
তবে বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষার্থী ও আশপাশের ব্যবসায়ী এবং বাসিন্দারা জানান, প্রায়ই নানা অজুহাতে তাদের শারীরিক নির্যাতন করেন শিক্ষক তুহিন কনা। শিশুদের উপর শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকশ করেন স্থানীয়রা।
যদিও এসব বিষয়ে জানাতে বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষক সুষমা ঘোষের দেখা মেলেনি, তবে তিনি মোবাইলে জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে মিমাংসা করা হয়েছে এবং উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তবে দাঁত ফেলে দেয়ার মতো ঘটনায় মীমাংসা হয় কিনা এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে, তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।
এদিকে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহন লাল দাস বলেন,শিক্ষার্থী নির্যাতন দূরের কথা, তাদের ধমক দেয়ারও নিয়ম নেই।আর অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলেন তিনি।
উল্লেখ্য ওই স্কুলে প্রাক প্রাথমিক থেকে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত ৪২৩ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। ১৪টি পদের বিপরীতে শিক্ষক রয়েছে ১৩ জন।

সর্বশেষ