নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রায় একযুগ পর ২৮ অক্টোবর সোমবার ভোলার চরফ্যাশনের আছলামপুর ও ওমরপুর ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনকে ঘিরে উৎসবের পাশাপাশি ছিল উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা। দুই ইউপির ১৮ টি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত ছিল বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন। ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করায় সাধারণ ভোটারদের মধ্যে ভীতি হিমশিম খাচ্ছে। দুই ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থীরা পরাজয় বরন করেন বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিকট
ওমরপুর ইউপিতে বিদ্রোহী প্রার্থী একেএম সিরাজুল ইসলাম আনারস প্রতীক ৫০৫৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন । তার নিকটতম নৌকা প্রতীকের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রিয়াজুল ইসলাম রিজন পেয়েছেন ৩৬৮০ ভোট। আসলামপুর ইউপিতে ৪০৫০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন আবুল কাশেম মিলিটারি। তার নিকটতম নৌকা প্রতীকের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নুরে আলম মাস্টার পেয়েছেন ৩৬৭৭ ভোট।
দুই ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৮ জন। তারা হলেন – আসলাম পুর ইউপিতে নুরে আলম মাস্টার আওয়ামী লীগ (নৌকা), আবুল কাশেম মিলিটারী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী- স্বতন্ত্র (আনারস) , সাইফুল ইসলাম ইসলামী আন্দোলনের (হাতপাখা) । ওমর পুর ইউপিতে আওয়ামী লীগ (নৌকা) রিয়াজুল ইসলাম রিজন, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী- স্বতন্ত্র প্রার্থী (আনারস) একেএম সিরাজুল ইসলাম, স্বতন্ত্র (মোটরসাইকেল) জাফর উল্লাহ খান, স্বতন্ত্র ( ঘোড়া ) পারভেজ, ইসলামী আন্দোলনের (হাতপাখা) গোলাম মোরশেদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
অপরদিকে দিকে বিএনপি, জামায়াত, জাতীয় পার্টির প্রার্থী না থাকায় তাদের সমর্থন করেছেন বিদ্রোহী প্রার্থীর দিকে। ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে। ভোটাররা জানান- দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হলেও স্থানীয়ভাবে নানা বিষয় বিবেচনা করে ভোটাররা ভোট দিয়েছেন।এতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা বিজয়ি হয়েছেন।
দুই ইউপিতে ১১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তার মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৮ জন, সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার পদে ২৩ জন, মেম্বার পদে ৭৯ জন।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, পুলিশ ও র্যাবের পাশাপাশি কোস্ট গার্ডসহ বিভিন্ন প্রশাসন নির্বাচনী মাঠে কাজ করেছেন। ভোটাররা যেন ভোট দিতে পারেন এজন্য নিরাপদ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে একটি উৎসবমুখর ভোটের পরিবেশে ইভিএমে ভোট গ্রহণ হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে বৃহত্তম আছলামপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। মেয়াদের শেষের দিকে ২০১৪ সালে বৃহত্তম আছলামপুর ইউনিয়নকে বিভক্ত করে ওমরপুর ইউনিয়ন নামে আরও একটি নতুন ইউনিয়ন রূপান্তার করা হয়। নতুন ইউনিয়ন বিভক্তিকালে লালমোহন উপজেলার রমাগঞ্জ ইউনিয়নের সঙ্গে চরফ্যাশনের আছলামপুর ও ওমরপুর ইউনিয়নের ভোটার বিন্যাস ও সীমানা বিরোধ নিয়ে মামলার জটিলতার কারণে এই দুই ইউপিতে নির্বাচন স্থগিত ছিল প্রায় দীর্ঘ এক যুগ। গত ১৭ অক্টোবর এদুই উপজেলার তফসিল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশন। তফসিল অনুযায়ী ২৮ নভেম্বর ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে ।