৯ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বরিশালে দুই নারীর মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে পুলিশ !

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

বরিশাল বাণী: নাত বউ ও দাদী শাশুড়ির রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় বরিশালের বাবুগঞ্জের কেদারপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্যের ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। সেইসাথে নজরদারীতে রয়েছে সাবেক ওই ইউপি সদস্যের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন স্ত্রী।
পুলিশ বলছে, কেদারপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য প্রয়াত দেলোয়ার হোসেনের ছেলে বউ ও মায়ের মৃত্যুর ঘটনার রহস্য উম্মোচনের চেষ্টা চলছে। আর এ কারনেই প্রয়াত দেলোয়ার হোসেনের ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, তবে কাউকে এখনও আটক বা গ্রেফতার করা হয়নি।
বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) রাতে বাবুগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ অলিউল ইসলাম জানান, মামলা তদন্তের জন্য অনেককেই জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারি। তারই অংশ হিসেবে দুপুর দেড়টার দিকে একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় নিয়ে এসেছি।
এদিকে সাবেক ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী মনিরা বেগম বর্তমানে শঙ্কামুক্ত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন বাবুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ আতিক। তিনি বলেন, মনিরা বেগম নামে যে রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলো তাকে আমরারা বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হিসেবে চিকিৎসা দিচ্ছি। বর্তমানে সে স্বাভাবিকভাবেই কথা বলতে পারছেন।
তবে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মনিরা বেগমের সাথে সন্ধ্যা রাত পর্যন্ত কথা বলতে পারেননি বলে জানিয়েছেন বাবুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুবুর রহমান। তিনি বলেন, চিকিৎসক সুস্থ বললে আমরা তার সাথে ঘটনার বিষয়ে কথা বলবো। আর এ কারনেই মনিরা বেগমের ওখানে পুলিশ রয়েছে।
এদিকে নিহত রিপার আক্তারের চাচা নূর হোসেন দাবি করেছেন, তার ভাইয়ের মেয়েকে শশুর বাড়ির লোকজন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। তিনি বলেন, রিপার দাদি শাশুড়ি কিভাবে মৃত্যু বরণ করেছে তা আমরা জানি না তবে শাশুড়ির অসুস্থতা একটি নাটক। পরিবারের লোকজন যে বিষক্রিয়ার কথা বলছে তার কোন আলামত দেখিনি, আবার যে সিঁধ কাটা হয়েছে তা দিয়েও মানুষের যাতায়াতের কোন আলামত নেই। পুরো ঘটনাই রহস্যজনক, আমরা এই হত্যাকান্ডের বিচার চাই।
রিপার স্বামী সোলায়মান হোসেন এই হত্যার সাথে জড়িত থাকতে পারেন বলে দাবি করেছেন নিহত রিপা আক্তারের ফুফু সীমা বেগম। তিনি জানান, রিপার সাথে স্বামী সোলায়মানের পারিবারিক ঝামেলা চলছিল। এ নিয়ে একবার সোলাইমান তার স্ত্রী রিপাকে ডিভোর্স দেয়। তবে স্থানীয়ভাবে শালিসের মাধ্যমে পুনরায় কাবিন করে বিয়ে দেওয়া হয়। এরপরও দুজনের মধ্যে বনিবনা হচ্ছিল না।
সীমা দাবী করেন, মূলত রিপাকে হত্যা করতেই পরিকল্পনা করা হয়। এক্ষেত্রে রিপার দাদি শ্বাশুড়িকেও হত্যা করা হয় যেন কেউ সন্দেহ করতে না পারে। তাছাড়া গতকাল রাতে রিপার প্রতিবেশীরা এক যুবককে ঘরের সামনে দেখেন। কিন্তু চিনতে পারেনি। প্রতিবেশীদের দেখে সেই যুবক অন্ধকারে মিলিয়ে যান। আমার ধারণা সেই যুবকই হচ্ছে রিপার স্বামী সোলাইমান। তাছাড়া যেখান থেকে সিঁধ কাটা হয়েছে সেখান থেকে লোক উঠতে পারে না। কোন লোক ওঠার আলামতও দেখা যায়নি। সিঁধ যেখানে তার ভেতরে ঘরের অংশে চৌকির নিচে মাকড়শার জাল রয়েছে। যদি কেউ ওই দিক দিয়ে ঢুকত তাহলে সেগুলো ছিড়ে যেত।
তবে ঘটনা যাই হোকে দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করার কথা জানিয়েছেন সার্কেল এসপি (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) ফরহাদ সরদার।
উল্লেখ্য, বুধবার (২৫ জানুয়ারি) দিবাগত মধ্যরাতে বাবুগঞ্জ উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড ভূতেরদিয়া গ্রামের সাবেক ইউপি মেম্বার দেলোয়ার হোসেনের বাড়ি থেকে তার মা ও পূত্রবধূর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।। এ ঘটনায় সংজ্ঞাহীন অবস্থায় তার স্ত্রী মিনারা বেগম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

সর্বশেষ