৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

গৌরব-ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সাফল্যের ২৩ বছর পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

মুহাম্মদ ইমাদুল হক ফিরদাউছ  প্রিন্স

ছায়াঘেরা মায়ার চাদরে মোড়ানো প্রকৃতির মনোলোভা সৌন্দর্যমন্ডিত পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি)। নিজস্ব ঐতিহ্য ও স্বাতন্ত্রতা বজায় রেখে প্রযুক্তিনির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আজ (৮ জুলাই) ২৩ বছর পার করে পদার্পণ করল ২৪ বছরে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টি আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অবদানের জন্য আজ দেশ-বিদেশে বিশেষ পরিচিতি লাভ করেছে। দিবসটি নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে উদযাপন করবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এবার আয়োজনের মধ্যে আছে সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, শোভাযাত্রা ও বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্যে ফুল দেয়া, বৃক্ষরোপন কর্মসূচী ও আলোচনাসভা।

পটুয়াখালীর প্রবেশপথে পটুয়াখালী-বরিশাল মহাসড়কের লেবুখালীস্থ পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্কয়ার থেকে পাঁচ কিলোমিটার পুর্বে দুমকি উপজেলা সদরে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়টি। জেলা সদর থেকে ১৫ কিলোমিটার উত্তরে প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয় পটুয়াখালী কৃষি কলেজ; যা ১৯৭৯-৮০ শিক্ষাবর্ষে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহের অধিভুক্ত হয় বেসরকারি কৃষি কলেজ হিসেবে স্নাতক পর্যায়ে কার্যক্রম শুরু করে। ২০০০ সালের ৮ জুলাই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কৃষি কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে উদ্বোধন করেন। পবিপ্রবির ভাইস-চ্যান্সেলর দেশ বরেণ্য কৃষি বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত পবিপ্রবির ২৩তম জন্মদিন উপলক্ষে তিনি গণতন্ত্রের মানষকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় দুমকি উপজেলাবাসীসহ পটুয়াখালী এবং বরিশাল জেলার সাধারণ জনগণ ও নেতৃবৃন্দকেও তিনি ধন্যবাদ জানিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

পবিপ্রবির মূল ক্যাম্পাস ৯৭ একর ও বহিঃক্যাম্পাস (বাবুগঞ্জ, বরিশাল) ১২.৯৭ একরসহ মোট ১০৯.৯৭ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত এই দৃষ্টিনন্দন বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে সুবিশাল মনোরম ক্যাম্পাস।

বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. স্বন্তোষ কুমার বসু জানান, বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃতি পাবার পর এ পর্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে এ বিশ্ববিদ্যালয় তার শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। বর্তমানে ৮টি অনুষদে ৪৪১৮ জন ছাত্রছাত্রী ২৫৯ জন শিক্ষক, ১৮৯ জন কর্মকর্তা ও ৫২২ জন কর্মচারী রয়েছে। কেবলমাত্র কৃষি অনুষদ নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে দেশ ও জাতির সময়োপযোগী চাহিদা পূরণে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮টি অনুষদের অধীনে ৯টি ডিগ্রি প্রদান করা হচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়টি দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষার্থীদের জন্য ৫টি হল রয়েছে। বরিশালের বাবুগঞ্জের বহিঃস্থ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে আরো ২টি হল। রয়েছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যাতায়াতের জন্য বাস, মিনিবাস ও মাইক্রোবাসের সুবিধা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য ডিজিটাল পরিচয়পত্র (ইলেকট্রনিক চিপ) করা হয়েছে। ভেটেরিনারি টিচিং হাসপাতাল আছে ১টি ও কৃষি গবেষণা খামার আছে ৩ টি।

এটি নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও গরিব পরিবার থেকে আসা শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার জন্য আদর্শ স্থান। বাস্তবিকভাবেই পটুয়াখালী জেলার দুমকি উপজেলা শহরের দৈনন্দিন খরচ অন্যান্য বড় শহরের তুলনায় কম। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমিক ব্যয়ও অসচ্ছল পরিবারের সামর্থ্যের মধ্যে রাখা হয়েছে। প্রায় সকল শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন ব্যবস্থা চালু আছে। তারপরও বরিশাল বিভাগীয় শহর ও পটুয়াখালী জেলা শহর থেকে আসা-যাওয়ার জন্য রয়েছে সাশ্রয়ী পরিবহন ব্যবস্থা। বর্তমান উপাচার্য প্রফেসর ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত স্যারের ঐকান্তিক প্রচেস্টায় ক্যাম্পাসটিকে ডিজিটাল ক্যাম্পাস করার এবং বর্তমান অনলাইন সুবিধা অত্যন্ত প্রশংসিত। তিনি লাইব্রেরিকে আধুনিক মানের করার জন্য নিয়েছেন বহুবিধ পরিকল্পনা।

সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে বর্তমান ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত পবিপ্রবি ইনোভেশন ডিসেমিনেশন সেন্টার (পিআইডিসি) এর মাধ্যমে দুমকিসহ পটুয়াখালী, বরগুণা ও বরিশাল জেলার বিভিন্ন প্রান্তিক চাষীদের চাষাবাদের ক্ষেত্রে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, তথ্য-প্রযুক্তির প্রসার, মৎস্যজীবীদের উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে মাছ চাষ, মাছের পরিচর্যা ও সংরক্ষণ, গবাদী পশু পালন ও চিকিৎস্যা সুবিধা প্রদান, খাদ্য ও পুষ্টি বিষয়ে সচেতনতা তৈরীর লক্ষ্যে প্রশিক্ষন প্রদানসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত করছেন। এসমস্ত কার্যক্রমের মাধ্যমে পবিপ্রবি দেশ-বিদেশের বিভিন্ন শ্রেণির-পেশার মানুষের ব্যপক প্রশংসা পেয়েছেন। সমুদ্র ভিত্তিক অথনৈতিক কার্যক্রম ( ব্লু-ইকোনমি) জোরদারকল্পে পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় মেরিন সায়েন্স এন্ড রিসার্স ইনস্টিটিউট স্থাপনের উদ্দোগ নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের ২০৪১ সালের ভিশন ‘উন্নত বাংলাদেশ’ গঠনের লক্ষ্যে শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
কৃষি, গ্রামীণ উন্নয়ন এবং দারিদ্র্য বিমোচনের মতো ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনোভেশন সেন্টার এর মাধ্যমে ভাইস-চ্যান্সেলর এ উদ্যোগগুলো এই অঞ্চলের মানুষের জীবনে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে।

সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং নাগরিক সম্পৃক্ততার পরিবেশ গড়ে তোলার মাধ্যমে, পবিপ্রবি তার শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমাজের প্রতি কর্তব্যবোধ জাগিয়ে তুলেছে এবং ভবিষ্যতের জন্য নেতৃত্ব তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে যারা জাতির কল্যাণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। গবেষণা-ভিত্তিক শিক্ষার ওপর বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্ব শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা, উদ্ভাবন এবং সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে। যুগোপযোগী একাডেমিক পাঠ্যক্রমের মাধ্যমে পবিপ্রবি দ্রুত বিকশিত বৈশ্বিক ল্যান্ডস্কেপের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সুসজ্জিত গ্র্যাজুয়েটদের প্রস্তুত করে চলেছে বছরের পর বছর।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র একেএম শামিমুল আলম সিদ্দিকী (ভুমি ও আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান) হেমায়েত উদ্দীন (অতি: সচিব) ড. আ: সালাম (অতি: সচিব), মোঃ মুনিম হাছান (জাতীয় গৃহায়ন কতুপক্ষের চেয়ারম্যান), দুলাল চন্দ্র দাস (নির্বাহী পরিচালক, এএইচডিপি), ড. মাহমুদ আল হোসেন (যুগ্ন সচিব, পাট ও বস্র মন্ত্রণালয়), মোঃ মনিরুজ্জামান মুগ্ধ (উপসচিব, রেল মন্ত্রণালয়), ড. মোঃ মিলন মিয়া (নির্বাহী পরিচালক ইউএনডাব্লিউপিএ), প্রফেসর ড. নজরুল ইসলাম (সিকৃবি) প্রফেসর ড. মো: মিজানুর রহমান (শেকৃবি), প্রফেসর ড. মো: মিজানুর রহমান (বকৃবি, গাজীপুর), প্রফেসর ড. মো: নাজমুল হাসান (দুবাই বিশ্ববিদ্যালয়, আরব আমিরাত), ড. মোঃ কামরুল ইসলাম (রেজিস্ট্রার, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়), হাসিবুর রহমান রঞ্জু (প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, এসআরআই), ড. মাহবুবুর রহমান (এসআরআই), সাইদ করিম রানা (সম্পাদক, পবিপ্রবি ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন), জিএম খান রায়হান (সম্পাদক, পবিপ্রবি বিসিএস এসোসিয়েশন), বিমল কুন্ডু (সিএসও, বিএআরআই)সহ এর হাজার হাজার গ্রাজুয়েট দেশের বিভিন্ন সেক্টরে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সততা, দক্ষতা ও সুনামের সহিত পালন করতেছেন।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো একটি বিষয় না বললেই নয়, সেটি হলে ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য। প্রকৃতির অপরূপ শোভা আর দৃষ্টিনন্দন অবকাঠামো যেকোনো মানুষকেই বিমোহিত করে। এ ক্যাম্পাসে রয়েছে সারি সারি নারিকেল গাছসহ হরেক রকমের গাছ-গাছালি, ক্যাম্পাসের ভেতরে রয়েছে কয়েকটি প্রশস্ত লেক যা ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য অনেকাংশে বৃদ্ধি করেছে। প্রশাসনিক ভবনের সম্মুখে স্থাপন করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আবক্ষ ভাস্কর্য ও মুর‌্যাাল, সাত বীরশ্রেষ্ঠের আবক্ষ ভাস্কর্য, ‘জয়বাংল’ নামে এক মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি ভাস্কর্য। এ ক্যাম্পাসটি দশর্নীয় স্থান হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে অনেক পযর্টক ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য উপভোগ করতে এখানে ভিড় জমায়। দেশের সম্পূর্ণ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় এটি। সেশনজট মুক্ত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপরূপ ভান্ডার পবিপ্রবি। সারি সারি গাছ বিশ্ববিদ্যালয়কে দিয়েছে এক অন্যন্য মাত্রা। যেন পুরো বিশ্ববিদ্যালয় সবুজের কার্পেটে মোড়ানো। দুচোখ যেদিকে যায় শুধুই সবুজ আর সবুজ। নয়নাভিরাম মনোরম দৃশ্যজুড়ে রয়েছে ক্যাম্পাসকে।

অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৪৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণের কাজ চলমান৷ এর মধ্যে ১০ তলা বিশিষ্ট শেখ হাসিনা হল এবং শেখ রাসেল হল, ১০ তলা ও ৬ তলা বিশিষ্ট দুটি একাডেমিক ভবন, মুক্তমঞ্ছ, মিনি স্টেডিয়াম, আধুনিক ব্যায়ামাগার, সুবজ বেষ্টনীবিশিষ্ট প্রাচীর নির্মাণ সহ নানাবিধ অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলমান রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ট্রেজারার ও সাবেক প্রো ভাইস-চ্যান্সেলর বরেন্য কৃষি বিজ্ঞানী প্রফেসর মোহাম্মাদ আলী বলেন, পবিপ্রবিতে বেশ কয়েকটি উন্নত ও উচ্চফলনশীল ফলের জাত উদ্ভাবিত হয়েছে। যেগুলোর মধ্যে পিএসটিইউ বিলাতীগাব- ১,পিএসটিইউ বিলাতীগাব-২, পিএসটিইউ ডেউয়া-১, পিএসটিইউ ডেউয়া-২, পিএসটিইউ বাতাবি লেবু-১, পিএসটিইউ কামরাঙ্গা-১, পিএসটিইউ কামরাঙ্গা-২, পিএসটিইউ তেঁতুল-১, পিএসটিইউ বৈচী-১, উপকুলীয় এলাকায় উন্নতকরণ প্রফিং সিস্টেম, সারের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বায়োচার ব্যবহার প্রযুক্তি, ভুট্রা ও সুর্যমুখীর সার ব্যবহার প্রযুক্তি এবং কার্প ফ্যাটেনিং প্রযুক্তির উদ্ভাবন অন্যতম। এছারাও উদ্ভিদ ও প্রাণী নিয়ে প্রায় দের শতাধিক গবেষণা চলমান। কৃষিকে সমৃদ্ধ করতে প্রতিনিয়ত চলছে নানা ধরনের গবেষণা কার্যক্রম। যারা গবেষণায় অবদান রাখছেন তাদের পুরুস্কৃত করার জন্য কমিটি করা হয়েছে। এছাড়া ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানের লক্ষ্যে সিএসই অনুষদ এবং কৃষি ব্যবসা ও বিপনন ব্যবস্থাপনার জন্য বিএএম অনুষদ একত্রে কাজ করে চলছে। দেশ বিদেশের বিভিন্ন সংস্থার অর্থায়নে ৮৪ টি গবেষণা প্রকল্প চলমান রয়েছে। এ সব গবেষণা প্রকল্প থেকে আহরিত জ্ঞান দেশের উন্নয়নের কাজে লাগানো হচ্ছে।

এবছর বিশ্বের সেরা গবেষক এর তালিকায় প্রফেসর ড. শামসুজ্জামান সবুজ, প্রফেসর ড. মোঃ সাইফুল ইসলামসহ বিশ্ববিদ্যালয়টির ১১৭জন গবেষক স্থান পেয়েছেন। সমুদ্র ভিত্তিক অর্থনৈতিক কার্যক্রম (ব্লু-ইকোনমি) জোরদারকল্পে পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় মেরিন সায়েন্স এন্ড রিসার্স ইনস্টিটিউট স্থাপনের উদ্দোগ নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের ২০৪১ সালের ভিশন ‘উন্নত বাংলাদেশ’ গঠনের লক্ষ্যে শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

পবিপ্রবির গবেষক (শিক্ষক)দের মধ্যে অনেকেই দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি এবং ট্রেজারারের দায়িত্ব পালন করছেন তাদের মধ্যে প্রফেসর ড. আবুল কাসেম চৌধুরী (খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর), প্রফেসর ড. আব্দুল বাসেত (হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর), প্রফেসর ড. মো: শহীদুল ইসলাম (ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর) এবং প্রফেসর আলী আজগার ভুইয়া (ট্রাষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমগুলোতে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। বার্ষিক ক্রিড়া এবং আন্তঃঅনুষদীয় টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হয়। সাংস্কৃতি চর্চার জন্য রয়েছে কয়েকটি সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং ব্যান্ড দল। রয়েছে প্রায় অর্ধ শতাধিক সমাজিক সংগঠন। যা সেচ্ছাসেবী শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। বর্তমান ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত প্রত্যেকটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে কক্ষ বরাদ্দ দিয়েছেন যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।

২৩তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে পবিপ্রবির ভাইস-চ্যান্সেলর দেশ বরেন্য কৃষি বিজ্ঞানী, গবেষক ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত বলেন, আমাদের গ্রাজুয়েটরা যেন দক্ষ, নৈতিক, দেশপ্রেমিক, সফল উদ্যোক্তা এবং সফল গবেষক হতে পারে সে লক্ষে কাজ করে যাচ্ছি। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাংকিং উন্নয়নের কথা মাথায় রেখে আউটকাম বেজ কারিকুলাম চালু এবং গবেষণার মান উন্নয়ণসহ আমি বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় একজন ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে আমার লক্ষ্য হচ্ছে শিক্ষা ও গবেষণা ক্ষেত্রে এ বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। বাংলাদেশ সরকার ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় কাজ করে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শুভানুধ্যায়ী সকলকে তিনি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।

পরিশেষে, দক্ষতা, কতর্ব্যনিষ্ঠা ও সততায় দিক্ষিত হোক এই ক্যাম্পাসের সকল কার্যক্রম, ধাবিত হোক উন্নয়নের মহাসড়কে, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীর এটাই কামনা । দেশের অন্যতম সেরা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এর সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারির প্রতি রইলো প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও আন্তরিক অভিনন্দন। জয়তু, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

লেখকঃ- মুহাম্মদ ইমাদুল হক প্রিন্স
ডেপুটি রেজিস্ট্রার
পবিপ্রবি ইনোভেশন ডিসেমিনেশন সেন্টার
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

সর্বশেষ