১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ভালবাসার গল্পঃ দুইয়ে মিলে জোড়

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

গল্পঃদুইয়ে মিলে জোড়
—শুভজ্যোতি মন্ডল মানিক

অসিত বর্মন মহাশয় আপাদমস্তক ভদ্রলোক; কয়েক বছর হলো চাকুরী থেকে অবসর গ্রহণ করেছেন।একটি মাত্র কন্যা সন্তান, বিবাহের পর থেকে শ্বশুর বাড়িতে অবস্থান করছে।
ঘরে বাইরে স্বামী স্ত্রী দুজন ছাড়া কেউ নেই। অসিত বাবুর দোতলা দালানের ছাঁদের রেলিঙে প্রায়শঃই হলদে ঠোঁটি দুটো শালিক দেখা যায়। ডান পিটে পাখি দুটোর কালচে বাদামি রঙের ডানার মাঝে সাদা ছোপধরা, চকচকে দুই জোড়া হলুদ রঙের পাঁ; পরিপাটি ঘনকালো মাথার কেশ ; বেশ ভালোই লাগে দেখতে। নিয়মিত অসিত বাবুর নিচতলার খোলা বারান্দায় এসে বসে ওরা; কিচিরমিচির ডাক পাড়ে। অসিত বাবুর স্ত্রী অনিতা রানী পাখি দুটোকে পরম মমতায় দানা পানি খেতে দেয়।দুপুর বেলা নিয়মিত পাখি দুটো পুকুর ঘাটে সিঁড়ির উপর অল্প জলে ডানা ঝাপটায় ;খুনসুটির ছলে ভেঁজা ডানার জল একে অপরকে ছিটিয়ে দেয়;আদরে গলা বাড়িয়ে দেয়;স্নান সারে। রোদে একসাথে কাপড় চোপড় নেড়ে দেয়ার মতো করে ডানা শরীর এপাশ ওপাশ করে। বন বাদাড়ে জোড় বেঁধে ঘুরে বেড়ায় মনের আনন্দে। কেউ কারো অনুপস্থিতিতে বিরহী ডাকাডাকিতে অস্থির করে তোলে আশপাশ; অন্যটি কাছে আসতেই ঠোঁটে ঠোঁটে চুমু আঁকে; প্রশান্তির ঢেউ ফোঁটে চোখেমুখে। মাঝে মধ্যেই মাঠপাড়ের আইলে একসাথে পাশাপাশি হাঁটে; মুখোমুখি বসে হাওয়া মাখে; চোখাচোখি করে পাখি দুটো। দুইয়ে মিলে এক জোড়;আত্মার বন্ধনে একই টান দু’টোতেই। অসিত বাবুর বাড়ীর উত্তর কোনে শিরিশ গাছের ডালে ইদানীং স্ত্রী পাখিটিকে বসে থাকতে দেখা যায়; কিছুক্ষণ পর পর দেখা যায় পুরুষ পাখিটি ঠোঁটে করে খড়কুটো নিয়ে আসে; ওরা ঘর বাঁধায় ব্যস্ত। দুইয়ে মিলে জোড় হয়ে ভালোবাসায় বাঁচতে চায়, ঠিক যেন প্রতিজ্ঞা বদ্ধ উর্বর যৌবনের প্রেমিক প্রেমিকা।


শুভজ্যোতি মন্ডল মানিক(শিক্ষক), মোড়েলগঞ্জ-বাগেরহাট।

সর্বশেষ