২রা অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

নলছিটিতে রাস্তার বেহাল দশা, ভোগান্তি চরমে !

খলিফা মাইনুল (সিনিয়র রিপোর্টার) : দীর্ঘদিন ধরে ইটের রাস্তা সংস্কার করে পেইজ বা সি সি ঢালাই না করায় নলছিটির রানাপাশা ও নাচনমহল ইউনিয়নের বেশিরভাগ রাস্তার অবস্থা বেহাল। এতে চলাচলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন দুই ইউনিয়ন সহ আশপাশের গ্রামের মানুষ।

 

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, নাচনমহল ইউনিয়নের ভবানীপুর বাজার থেকে রানাপাশা ইউনিয়নের তেতুলবাড়ীয়া বাজার ও নতুন হাট বাজার থেকে নলবুনিয়া বাজারের রাস্তা দুটির অবস্থা খুবই বেহাল। গ্রামে যাতায়াতের প্রধান রাস্তা ইট ও মাটির হওয়ায় বৃষ্টি হলেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে।

 

রাস্তাদুটি দীর্ঘ কয়েক বছরে ইটের তৈরী হওয়ায় ভাঙ্গা ও ছোট-বড় খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। অনেক জায়গায় রাস্তার দু’ধারের মাটি সরে গিয়ে রাস্তাগুলো ভেঙে পড়েছে। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ভ্যানগাড়ি ও মোটরসাইকেল আরোহীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

 

জানা গেছে, নাচনমহল ইউনিয়নের অন্যতম জনবসতিপূর্ণ গ্রাম এটি । ভবানীপুর, নলবুনিয়া, ভেরনবাড়ীয়া, তেতুলবাড়িয়া এলাকায় হাজার হাজার পরিবার বাস করে। শুকনো ও বর্ষা মৌসুমে তাদের যাতায়াতের জন্য একমাত্র রাস্তা ভবানীপুর টু তেতুলবাড়িয়া। । অন্যবদিকে নতুন হাট বাজার থেকে নলবুনিয়া বাজারের দূরত্ব কমপক্ষে চার- পাঁচ কিলোমিটার হবে। এই আধাঁকাচা রাস্তাটির প্রধান যানবাহন হচ্ছে ভ্যান, ভ্যাটারিচালিত অটো রিক্সা। এই রাস্তার বর্তমানে বেহাল অবস্থার কারণে কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। ফলে হাজারো মানুষের ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। 

 

নাচনমহল বাজারের ভ্যানচালক জুয়েল জানান, ভ্যান চালিয়েই চলে তার সংসার। রাস্তা নিয়ে তার অভিযোগ, রাস্তার উন্নয়নে কোটি কোটি টাকার বাজেটের কথা মানুষের মুখে শুনলেও বাস্তবে কোন ধরনের কাজ হয় না। বছর যায় কিন্তু রাস্তা ঠিক হয় না। ভাঙা রাস্তার কারণে ভ্যানটানা খুব কষ্ট হয়। একটু ভারী মাল থাকলে গাড়ি উল্টে যায়।

 

নলবুনিয়া বাজারের ব্যবসায়ী আবু ছালেহ বলেন, এ বাজারের সাথে অন্যান্য বাজারের যোগাযোগের ‌ব্যাবস্থা খুবই নাজুক। বিভিন্ন জায়গায় গর্ত হয়ে আছে। তারমধ্যে একটু বৃষ্টি আসলে সব ডুবে যায়। মানুষ শান্তি মতো চলাচল তো দূরের কথা, বাজারঘাটও ঠিকভাবে করতে পারে না।

 

এ দিকে জরুরি কোনো রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঝালকাঠি জেলা শহরে বা নলছিটি উপজেলা সদরে নিতে চাইলে চার-পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা হেটে আসতে হবে যা সেই রোগীর জন্য অসম্ভব। এমনকি যথাসময়ে রোগীকে হাসপাতালে নিতে না পারলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। পরিবহনের একমাত্র প্রধান সড়ক এটি হওয়ায় কৃষকদের ভোগান্তি যেন শ্বাসরুদ্ধকর। এছড়াও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের প্রধান এই সড়কে শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

 

এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে খোকন খলিফা বলেন, একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তাটি কর্দমাক্ত হয়ে চলার অনুপযোগী হয়ে পরে। আমি বর্তমান উন্নয়ন বান্ধব সরকারের কাছে আবেদন জানাই অতি দ্রুত রাস্তাটি পাকা করে জন দুর্ভোগ লাগব করা হোক। শিক্ষক সুজন খলিফা বলেন, রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ায় গ্রামের শিক্ষার্থীরা অধিকাংশ সময় বিদ্যালয়ে সঠিক সময়ে উপস্থিত হতে পারে না।

 

এছাড়াও রাস্তাটি দিয়ে তালপুকুরিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নেয়ামতপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়া শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে থাকে কিন্তু বর্ষা মৌসুমে রাস্তাটিতে কাঁদা পানি থাকার কারণে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে যেতে পারে না শিক্ষার্থীরা। র্দীঘ সময় পার হলেও গ্রামীণ এই অবহেলিত মরণফাঁদ রাস্তায় এখন পর্যন্ত আধুনিকতার কোনো ছোঁয়া লাগেনি।

 

এ রাস্তাদুটি দ্রুত পাকা করণ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ ও ঝালকাঠি ২ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী আলহাজ্ব আমির হোসেন আমু মহোদয়ের সুদৃষ্টি কামনা করছেন এলাকাবাসী।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

সর্বশেষ