নিজস্ব প্রতিবেদক ::: আগামীকাল শনিবার বরিশালে রোডমার্চ করার কথা জানিয়েছেন বিএনপির নেতারা। আর রোডমার্চের ঘোষণা দেওয়ার আগেই কেন্দ্রীয় নেতার ধাক্কা খেলেন বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বরিশালে কেন্দ্রীয় বিএনপি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের সামনে বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুকের গায়ে ধাক্কা দিয়ে সম্মেলনস্থল ত্যাগ করেন কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক নান্নু। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর সদর রোডে দলীয় কার্যালয়ে বিএনপির বিভাগীয় রোডমার্চ কর্মসূচি উপলক্ষ্যে জরুরি সংবাদ সম্মেলন শুরুর আগে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। ধাক্কাধাক্কির একটি ভিডিও প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।
এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে বসা নিয়ে নগর বিএনপির সদস্য সচিব মীর জাহিদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান নান্নু। এমন ঘটনায় বিব্রত বোধ করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন জেলা থেকে আগত নেতারা।
মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির জাহিদ বলেন, ‘প্রোগ্রাম শুরু হওয়ার আগেই নেতারা এসে সম্মেলনস্থলে বসছেন। এ সময় দক্ষিণ জেলা বিএনপির আবুল হোসেন খান ও মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুক প্রধান অতিথির চেয়ারের উত্তর পাশে বসেছেন। দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবুল কালাম শাহিনসহ আমরা বসছি দক্ষিণ পাশের দর্শকসারিতে। কেন্দ্রীয় সহ০সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক নান্নু বসেছিলেন মনিরুজ্জামান খান ফারুকের পাশে। এরমধ্যে উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক দেওয়ান মো. শহিদুল্লাহ চলে এসেছেন। সাধারণত আহ্বায়করা প্রধান অতিথির পাশের চেয়ারের সাড়িতে একসঙ্গে বসেন। তখন নান্নু বলেন, ‘‘ওই পাশে বসলে অসুবিধা কী?’’ তারপর মিটিং আছে বলে নান্নু চলে গেছে। কিছুই হয়নি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুক বলেন, ‘কিছুই হয়নি। বসা নিয়ে একটু কথা কাটাকাটি হয়েছে। এটা নিজস্ব ব্যাপার। পরে তাদের মিলিয়ে দিয়েছি।’
কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন বলেছেন, ‘এক ঘরের মধ্যে থাকলে ভাই ভাইয়ের মধ্যে এরকম ঘটনা হতেই পারে। এটা তেমন কিছু নয়।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান ঘটনার পরে সভা চলাকালীন বলেন, ‘বিভিন্ন সময় আমাদের মধ্যে মতানৈক্য হতেই পারে। এটা কোন নতুন জিনিস না। আজকে আমরা এক সাথে থাকি। এক সময় না হয় ওর কথা পছন্দ হলো না। বিষয়টি ওখানেই শেষ হয়ে গেছে।’
ঘটনার বিবরণ দিয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবুল হক নান্নু বলেন,‘কোন গন্ডগোল হয়নি। প্রোগ্রাম শুরু হতে দেরি হওয়ায় আমি চুল কাটতে চলে আসছি। কারণ দোকান বন্ধ হয়ে যাবে তাই। তখন চলে আসার সময় আমাকে কে যেন থামালো, আমি তাকে বলে এসেছি যে, আমার কাজ আছে। তাদের তো বলা যায় না চুল কাটতে যাবো।
তবে চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে কী হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভাই-ভাই, ফ্যামিলি এক সাঙ্গে থাকলে এমন হয়। কোনো ঝগড়া হয়নি। ওই একে-অন্যকে একটু সরে বসতে বলছে। জাহিদের সঙ্গে আমার কিছু হয়নি।
প্রসঙ্গত, বিএনপির চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে বর্তমান সরকারে পদত্যাগ ও সংসদ বিলুপ্তি, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ও দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বরিশাল বিভাগীয় রোডমার্চ অনুষ্ঠিত হবে। ওই দিন সকাল ১০টায় নগরীর বেলস্ পার্ক মাঠ থেকে রোডমার্চ শুরু হবে। যা নগরীর রূপাতলী হয়ে ঝালকাঠি এলজিইডি মোড়, রাজাপুর মেডিকেল মোড় হয়ে পিরোজপুর শিয়ালকাঠি গিয়ে শেষ হবে।