তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি ::: বরগুনার তালতলীতে কচুপাত্রা খালে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে কচুরিপানায় ভরে গেছে। এতে ৫০ বছরের দড়িটানা খেয়া চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ কারণে বাদুরগাছা এলাকার তিন শতাধিক শিক্ষার্থীর স্কুলে যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে ও দুর্ভোগে পড়েছেন ৮টি গ্রামের মানুষ। দ্রুত কচুরিপানা অপসারণ করে ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) বেলা ১১ টার দিকে উপজেলার বাদুরগাছা এলাকার বেতমোর খেয়াঘাটে এ মানববন্ধন করে স্কুলের শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী।
জানা যায়- উপজেলার শারিকখালী ইউনিয়নে কচুপাত্রা খালের বাদুরগাছা-বেতমোর এলাকায় গত ৫০ বছর যাবৎ দড়িটানা খেয়া রয়েছে। শারিকখালী ইউনিয়নের ৭-৮টি গ্রাম থেকে তালতলী উপজেলা প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরত্ব এবং ওই সকল গ্রাম থেকে পার্শ্ববর্তী কলাপাড়া উপজেলা মাত্র ৫ কিলোমিটার। এলাকার মানুষ কচুপাত্রা খালের বেতমোর দড়িটানা খেয়া পাড়ি দিয়ে দৈনন্দিন কাজ করতে যান কলাপাড়া শহরে। খালের ওপাড়ে স্কুল-কলেজে প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী লেখাপড়া করতে যান। চলতি বছরের মে মাসের ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ওই খালে কচুরিপানায় ভরে গেলে খেয়া চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে চরম বিপাকে পড়েছে এই এলাকার মানুষ। বর্তমানে কলাপাড়া শহরে যেতে প্রায় ২০-২৫ কিলোমিটার পথ অটোরিকশা বা মটরসাইকেল করে যেতে হয়। গুনতে হচ্ছে দৈনিক ১৫০ থেকে ২০০ টাকা ভাড়া। এদিকে খালের ওপাড়েই স্কুল-কলেজ থাকায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থীর স্কুলে যাওয়া বন্ধ রয়েছে। ব্রিজ চেয়ে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা আরও জানান, কলাপাড়া উপজেলায় শারিকখালী ইউনিয়নসহ আশপাশের ৮টা গ্রামের মানুষ এই খাল পার হয়ে থাকেন। প্রতিদিন প্রায় তিন শতাধিক ছাত্রছাত্রী, পাঁচশতাধিক শ্রমিকসহ হাজার হাজার ব্যবসায়ী বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ খাল পার হয়ে থাকেন। খেয়া বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থী, শ্রমিক, ব্যবসায়ীদের বাজার বা কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে প্রায় ২০-২৫ কিলোমিটার পথ পার হতে হয়।
শারিকখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. ফারুক খান বলেন, খালে কচুরিপানা থাকার কারণে খেয়া বন্ধ রয়েছে। খালটি অনেক বড় থাকায় এখানে বাঁশের সাকো দেওয়া সম্ভব না। এই দড়িটানা খেয়া পার হতে গিয়ে অনেক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এমনকি স্কুল পড়ুয়া এক ছাত্রী মারাও গেছে। তাই আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষর কাছে অনুরোধ করছি যাতে এই খালে একটি ব্রিজ দেওয়া হয়। তাহলে এই এলাকায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থীসহ ৭-৮ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ কমবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত আনোয়ার তুমপা বলেন, আপাতত কচুরিপানা অপসারণ করে খেয়া চলাচলের ব্যবস্থা করার জন্য ইউপি চেয়ারম্যানকে বলেছি। পরবর্তীতে ব্রিজের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠানো হবে।