১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ধর্ষণের ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ১৮বার ধর্ষণ, এবার শ্রীঘরে টুটুল

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

স্টাফ রিপোর্টার:
বাগেরহাটের মোংলায় সিরিয়াল ধর্ষক গ্রেফতার হওয়ায় এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসছে। সংখ্যালঘু পরিবারের এক কলেজ ছাত্রীকে ব্ল্যাকমেইল করে দিনের পর দিন ধর্ষণ করার মামলায় মোংলায় মাসুদুর রহমান টুটুল (৩২) নামের ওই যুবককে বুধবার দুপুরে পুলিশ আদালতে প্রেরণ করে। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠায়।
গত মঙ্গলবার রাতে ধর্ষণ মামলায় শহরের মামার ঘাট থেকে পুলিশ তাকে আটক করে। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে টুটুল একাধিক মেয়ের সাথে সম্পর্ক ও ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। গ্রেফতার হওয়া যুবককে একজন সিরিয়াল প্রেমিক র‌্যাপিস্ট বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত যুবক চাঁদপাই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ মোস্তাফিজুর রহমান ও বর্তমান ইউপি সদস্য মাহফুজা রহমান আফিয়া দম্পত্তির বড় ছেলে। এছাড়া প্রতারনার মাধ্যমে বিভিন্ন নামীদামী টেলিভিশন চ্যানেল ও পত্রিকার নাম ভাঙ্গিয়ে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী তৈরী করে চাদাঁবাজীসহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত ছিল।
এদিকে সিরিয়াল প্রেমিক র‌্যাপিস্ট টুটুল পুলিশের হাতে আটক হওয়ার পর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন এলাকাবাসী। এ ঘটনা ছাড়াও প্রভাবশালী পরিবারের বখাটে ছেলে এক সন্তানের পিতা টুটুলের বিরুদ্ধে একাধিক নারী কেলেংকারী, র‌্যাব ও সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে।
মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ইকবাল বাহার চৌধুরী জানান, মোংলা সরকারী কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ুয়া শহরতলীর নারকেলতলা এলাকার এক সংখ্যালঘু ছাত্রীর সাথে গত ফেব্রূয়ারী মাসের প্রথম দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে টুটুলের পরিচয় হয়। এরপর বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গত ১০ ফেব্রূয়ারী শহরের পাওয়ার হাউস রোডে তার ব্যক্তিগত অফিসে নিয়ে যায় মাসুদুর রহমান টুটুল। এরপর কৌশলে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে মোবাইলে তার ভিডিও ধারণ করে।
ওই ছাত্রীর জবানবন্দী অনুযায়ী পুলিশ আরো জানায়, টুটুলের মোবাইলে ধারণকৃত সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে চলতি মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে ১৮ বার ধর্ষণ করে। শেষমেষ উপায়ন্তু না পেয়ে ওই ছাত্রী বিষয়টি তার পরিবারকে জানায়। এরপর বিষয়টি নিয়ে মোংলা থানা পুলিশের শরনাপন্ন হন। পরে ওই ছাত্রী বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে টুটুলকে আসামি করে থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।
টুটুল গ্রেফতার হওয়ার পর পরই উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে নির্যাতনের স্বীকার অনেকেই যোগাযোগ শুরু করে সংবাদকর্মীদের সাথে। তারা জানান কয়েকটি গণমাধ্যমের পরিচয় দিয়ে গ্রামাঞ্চলের অসহায় মানুষকে জিম্মিকরে চাঁদাবাজী হয়রানীসহ নানা অপকর্মের কাহিনী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার অনেকেই জানায়, প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান হওয়ায় তার ছিল একটি সংঘবদ্ধ দল। এ সন্ত্রাসী বাহিনী বিভিন্ন টেলিভিশনের বড় মাপের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সরকারী দপ্তরসহ গ্রামাঞ্চলে নিরিহ মানুষদের জিম্মি করে হয়রানী ও মানুষিক নির্যাতন চালাতো।
মাসুদুর রহমান টুটুল গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই তার সঙ্গী-সাথীরা গা-ঢাকা দেয়। তারা আরো জানান, এতদিন যার সাথে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজী ও মানুষদের হয়রানী করে আসছিল। বর্তমানে টুটুলের সঙ্গিদের ভয়ে নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছে ধর্ষনের স্বীকার অসহায় এ পরিবারটি।
তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে আরো ৭ থেকে ৮টি মেয়ের সাথে তার মেলামেশার নগ্ন ভিডিও পাওয়া গেছে। টুটুলকে এ ঘটনায় আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে আনা হবে বলেও জানান ওসি ইকবাল বাহার চৌধুরী।
ধর্ষিতার পরিবার জানায়, এক সন্তানের পিতা টুটুল প্রেম করে তার অফিসে এনে আরো অনেক মেয়ের সর্বনাশ করেছে। সাংবাদিক পরিচয় দিতো টুটুল, জীবন বাঁচানো আর লোক লজ্জার ভয়ে কিছু বলতে সাহস পেতামনা।। ভয়ে মামলা দিতেও ভীত ছিলাম আমরা।

সর্বশেষ