১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
দশমিনায় ২ কেজি গাঁজাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার গৌরনদী উপজেলা নির্বাচনে মনিরকে সমর্থন দিয়ে সরে দাড়ালেন মেরী আমুর নির্দেশনার বাইরে এক পা কেউ যেতে পারবেন না ভূমিদস্যু রুবেল সিকদারের নজর এখন প্রধানমন্ত্রীর ঘরের উপর বরিশালে খোলা বাজারে হেলমেট ছাড়াই মিলছে জ্বালানি তেল অর্ধশত বছর পর পিরোজপুর জেলা যুবলীগের সম্মেলন শনিবার বরগুনায় জেলেকে হ*ত্যার অভিযোগ মৎস্য বিভাগের বিরুদ্ধে, ভয়ে মাছ শিকার বন্ধ ‘লোভ দেখানো নির্বাচন থেকে আমার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করলাম’ দুমকীতে কাপ-পিরিচ মার্কার প্রার্থী ও সমর্থকদের ওপর হা*মলা, আ*হত ৫ ইন্টারনেটের সর্বনিম্ন গতি ২০ এমবিপিএস, নীতিমালা আসছে: পলক

বরিশালে ঝুঁকিপূর্ন হয়ে উঠছে সাংবাদিকতা !

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

প্রিন্স তালুকদার : কীর্তনখোলা নদীর সফেদ ঢেউ, নানান রঙের নাও আর শীতল বাতাস ভেদ করা বরিশালে ক্রমেই ঝুঁকিপূর্ন হয়ে উঠছে সাংবাদিকতা। গত ২৮ আগস্ট ২০২৩, বরিশালে শেরে-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে দুই ছাত্রী র‍্যাগিংয়ের শিকার হন। ছাত্রী হলের ৬০৬ নম্বর কক্ষে রাতভর নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। একাডেমিক কাউন্সিলে নির্যাতনের শিকার ছাত্রীদের বক্তব্য গ্রহণের সময় সংবাদ সংগ্রহে যান সাংবাদিকেরা। ছাত্রীদের বক্তব্য নেওয়ার সময় কয়েকজন শিক্ষক হামলা করেন সাংবাদিকদের ওপর। এই সময় টেলিভিশনের ক্যামেরাও ভাঙচুর করেন তারা। শিক্ষক হামলা করেছেন পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের ওপর! শিরোনামটি যতবার পড়ি ততবার বিস্মিত হই। স্কুল ছেড়েছি ঢের বছর হলো। এখনো শিক্ষকদের দেখলে শ্রদ্ধায় মাথানত হয়ে আসে। পিতার মতো সম্মান করি তাদের। সেই শিক্ষকসমাজের কয়েকজনের হাতে আমার অগ্রজরা হামলার শিকার হলেন। শিক্ষকরা সাংবাদিকের ক্যামেরাও ভাঙচুর করলেন। ভিডিও ফুটেছে দেখেছি, তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। মুখের ভাষা শুনে তাজ্জব হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। কেন পেশাদার সাংবাদিকেরা সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হলেন? হামলাকারী চিকিৎসক শিক্ষকরা কী লুকাতে চেয়েছেন? র‌্যাগিংকে তারা সমর্থন করেন? নির্যাতিতদের মুখ বন্ধ রাখতে চান তারা? পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যদি সাংবাদিকেরা কোনো আইন ভঙ্গ করে থাকলে তার প্রতিকার কি তাদের ওপর হামলা, ক্যামেরা ভাঙচুর করা? চিকিৎসক শিক্ষকরা সন্ত্রাসী ভূমিকায় যদি এভাবে মাঠে নামেন, তাহলে রোগীরা কি তাদের কাছ থেকে সুচিকিৎসা আশা করতে পারেন? কোড অব এথিকস কি তাকে সন্ত্রাসী হতে উৎসাহ দেয় নাকি একজন ভালো মানুষ হতে শিক্ষা দেয়?পান থেকে চুন খসলে চিকিৎসকরা কর্ম বিরতিতে যান। চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত কেউ কর্মবিরতিতে যেতে পারেন কি? এটি কোড অব এথিকসের লঙ্ঘন। শেরে-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। ভর্তুকি দিয়ে চলে কলেজটি। জনগণের করের টাকায় দেশ কি সন্ত্রাসী তৈরি করছে? বরিশালের সাংবাদিকেরা সবার কথা বলেন। দুঃখ, বেদনা, পাওয়া না পাওয়ার গল্প সাংবাদিকই তুলে আনছেন। যার ফলে প্রতিকার পান অনেকেই। সমাজের সব পেশার, সব ধর্মের, সব শ্রেণির মানুষের কথা বলছে গণমাধ্যম। ঝুঁকি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করছেন সাংবাদিকেরা। সারাদিন টেলিভিশন, অনলাইন, পরের দিন সকালে ছাপা কাগজে সংবাদ পৌঁছে যায় সবার কাছে। তৃতীয় বিশ্বের কোনো দেশে যদি গণমাধ্যম না থাকে, সাংবাদিক না থাকেন, পরের দিন মানুষ হয়তো ঘর থেকে বের হতে নিরাপদ বোধ করবেন না। গণমাধ্যম আছে বলেই মানুষ শেষ ঠিকানা হিসেবে সাংবাদিকের কাছে আসে। গণমাধ্যমের ওপর মানুষের এখনো ভরসা আছে। ভরসা আছে সাংবাদিকদের ওপরও। সেই জায়গায় যারা হামলা করে, যারা বন্ধ করতে চায় তাদের কী নামে ডাকা হবে তা পাঠকের হাতেই ছেড়ে দিলাম।
সব চিকিৎসক শিক্ষকদের বরিশালের ঘটনায় দায়ী করছি না। কিন্তু কয়েক বছরের ঘটনা বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালগুলো অনেক তরুণ চিকিৎসকরা পেশার সম্মান ক্ষুণ্ন করছেন। সন্ত্রাসীর ভূমিকায় তাদের হাজির হতে দেখে দানবের ছবি ভেসে ওঠে। চিকিৎসক সমাজকে এই ছবি বদলাতে মাঠে নামতে হবে। গলদ খুঁজে বের করে তার ওষুধ দিতে হবে। তা না হলে ভালো সাংবাদিকতা যদি বন্ধ হয়ে যায়, তবে তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। বরিশালের ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বিচার হওয়া জরুরি। সন্ত্রাসী কেউ চিকিৎসক হতে পারেন না। মহান পেশাকে যারা কলুষিত করছেন তাদের বিচারের মুখোমুখি করা চিকিৎসক সমাজের দায়িত্ব।

 

লেখল:

সাংবাদিক ও সাহিত্যিক

সর্বশেষ