সঞ্জয় ব্যানার্জী, দশমিনা(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি।
পটুয়াখালীর দশমিনায় ১৮৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই কোন শহীদ মিনার। প্রতি বছর কলাগাছ, বাঁশের কঞ্চি ও সাদা কাগজ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করে ওই সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ২১শে ফেব্রুয়ারি মহান আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবস পালন করে আসছে। এতে করে শিক্ষার্থীরা জানতে পারছে না ভাষার সঠিক তাৎপর্য, জানাতে পারছেনা ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা। আগামী বুধবার ২১ফেব্রুয়ারী ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর দিন। এদিন দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাবে। আবার অনেক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনারের অভাবে উপজেলায় পালন করে কিন্তু বিচ্ছিন্ন ও দূরের অনেক প্রতিষ্ঠানে এই দিবস পালন করা হয়না। সরকারি তহবিল বরাদ্দ না থাকায় ও ম্যানেজিং কমিটির অবহেলার কারণে শহিদ মিনার নির্মাণ করা হচ্ছে না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
জানা যায়, দশমিনা উপজেলার সরকারি প্রাথমিক-১৪৫টি, নি¤œ মাধ্যমিক-৬টি, মাধ্যমিক-২০টি, দাখিল-১৬টি ও কলেজ-৪টি, ফাজিল-২টি, কামিল-১ ও ডিগ্রী কলেজ-১টি। এরমধ্যে মাধ্যমিক-১১টি, কলেজ-১টিতে স্থায়ী শহীদ মিনার রয়েছে।
অন্যদিকে ১৪৫টি প্রাথমিক, ৬টি নি¤œ মাধ্যমিক, ৯টি মাধ্যমিক, দাখিল-১৬টি ও কলেজ-৩টি, ফাজিল-২টি, কামিল-১ ও ডিগ্রী কলেজ-১টিতে স্থায়ী শহীদ মিনার না থাকায় প্রতি বছর ২১শে ফেব্রুয়ারি আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবসে বিপাকে পরতে হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।
২২নম্বর গুলি আউলিয়াপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আরমিন জাহান ও হৃদয় এবং ৪র্থ শ্রেনীর জান্নাত জানান, আমাদের স্কুলে শহীদ মিনার নেই। আমরা প্রতি বছর কলাগাছ দিয়ে শহীদ মিনার বানাইয়া শ্রদ্ধা জানাই। আমরা চাই স্কুলে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হউক। একইভাবে দশমিনা সরকারি আব্দুর রসিদ তালুকদার ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেনীর শিক্ষার্থী নাদিয়া, স্বর্না, আরাফাত, সুমাইয়া ও শাকিলসহ অনেকে বলেন, তাদের কলেজেও শহীদ মিনার নির্মাণ করা হউক।
এদিকে, সরকারের কাছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন ভবনের সাথে শহীদ মিনার নির্মাণের জোর দাবী জানান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রধানগন।
এবিষয়ে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি দশমিনা উপজেলা শাখার সভাপতি ও ২২নম্বর গুলি আউলিয়াপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমান জানান, উপজেলার প্রাথমিক কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। তাই ভবিষ্যৎ প্রজম্ম ভাষা শহীদের ইতিহাস ও সম্মান জানাতে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ দরকার। সরকারের কাছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন ভবনের সাথে শহীদ মিনার নির্মাণের জোর দাবী জানান। একইভাবে দাবী করেন আউলিয়াপুর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শহিদুল ইসলাম জানান, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মানের জোড় দাবী জানাই।
এবিষয়ে উপজেলা একাডেমিক সুপার ভাইজার মু. নেছার উদ্দিন বলেন, উপজেলায় ১১টি মাধ্যমিক ও একটি কলেজে শহীদ মিনার রয়েছে। তবে এই ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
এবিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হিটলারুজ্জামান বলেন, উপজেলায় ১৪৫টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে কিন্তু কোন বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই। এতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারছেনা শিক্ষার্থীরা।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসা. নাফিসা নাজ নীরা বলেন, এই বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তপক্ষের সাথে আলাপ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদেও শহীদ মিনার নির্মানের নির্দেশনা দেওয়া হবে।