বরিশালে ‘সাড়ে তিনশ’ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত শহর রক্ষা বাধ দখলের মহোৎসব

প্রকাশের তারিখ: মার্চ ২৮, ২০২৪ | ৪:৩৯ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক ::: বরিশালে সরকারের সাড়ে তিনশ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সাড়ে ৫ কিলোমিটারের শহর রক্ষা বাধে চলছে দখলের মহোৎসব। স্থানীয়রা ইচ্ছেমত নদীর অভ্যন্তরসহ দুই পাশ দখলে মেতে উঠেছে। গত কয়েক দিনে শহর রক্ষা বাধ ঘেষে প্রতিদিন গড়ে উঠছে অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা। এতে করে নদী দখল-দূষণের পাশাপাশি ভেস্তে যাচ্ছে এ প্রকল্পের সুফল। এর পিছনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদাসীনতাকে দায়ী করেছে সচেতন মহল। তাই অবিলম্বে বাধ দখল মুক্ত করে ওয়াকওয়ে নির্মাণের দাবি উঠেছে।

সরজমিনে দেখা যায়, নগরের বেলতলা খেয়াঘাট থেকে চরবাড়িয়া পর্যন্ত নির্মিত এ শহর রক্ষা বাধে গত কয়েক দিন ধরে দখলের হিড়িক পড়েছে। বাধের দুই পাশ দখল করে ইতিমধ্যে গড়ে উঠেছে স্বমিল, দোকান, ব্যক্তিগত কার্যালয় ও ইটবালু পাথর বিক্রির প্রতিষ্ঠান। এরপরও গত কয়েক দিন ধরে ইচ্ছেমত বাধ দখলের পাশাপাশি নদীর মধ্যে খুটি দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে টং দোকান। কেউবা বাধের মধ্যেই ইট রেখে নিয়মিত বাণিজ্য করছে। এ কারণে বাধের ব্লক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে নদীর পানি শহরে প্রবেশের ঝুঁকি আরও বেড়েছে।

বেলতলা এলাকার বাসিন্দা মকবুল হোসেন বলেন, বহুবছরের অবহেলিত কীর্তনখোলা নদীর পাড় পানি উন্নয়ন বোর্ড সাড়ে তিনশ’ কোটি টাকা ব্যয়ে শহর রক্ষা বাধ ও জনগণের চলাচলের জন্য করলেও অবৈধ দখলদারদের কারণে ধ্বংসের পথে প্রকল্পটি। তিনি আরও বলেন, কেবল পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষর যথাযথ ভূমিকাই পারে এই বাধ রক্ষা করতে।

চরবাড়িয়ায় ঘুরতে আসা জান্নাতআরা বলেন, অবৈধ দখলদারদের কারণে বাধ দিয়ে জনসাধারণ চলাচল করতে পারে না। এছাড়া দখলের কারণে বাধের ব্লকও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দখলদার মুক্ত করা এখন সময়ের দাবি।

দখলদারদের একজন হাওলাদার মাসুদ জানান, তিনি তার ব্যক্তিগত জায়গায় দোকান নির্মাণ করছেন। তবে নদীর জমি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন হয়? এমন প্রশ্নের কোন উত্তর দেননি তিনি। উল্টো দাম্ভিকের সহিত বলেন, নিউজ করলে করেন। পেপারে লিখলে কিছু হয়না।

বরিশাল নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব ডা. মিজানুর রহমান বলেন, দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠায় বাধ ধংস হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে শহর রক্ষা বাধের মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। তাই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দপ্তর উদাসীনতা দেখালে জনসাধারণ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খালেদ বিন অলীদ বলেন, বিষয়টি আমাদের জানা ছিলো না। আপনার মাধ্যমে বিষয়টি জানলাম। শীঘ্রই সরেজমিন পরিদর্শন শেষে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী (দক্ষিণাঞ্চল) আবদুল হান্নান বলেন, সরকার সৌন্দর্য বর্ধন ও শহর রক্ষায় বাধ নির্মাণ করেছে। সেখানে যদি কেউ দখল করে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

বরিশাল জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম বলেন, এটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্প। তাই আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলে উচ্ছেদের ব্যবস্থা করবো।

© 2023 বরিশাল বাণী কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by Eclipse Web Host