আগৈলঝাড়ায় ইয়াবাসহ আটক ৪, রাতেই রহস্যজনকভাবে ৩ জনকে ছেড়ে দিল পুলিশ

প্রকাশের তারিখ: এপ্রিল ২৬, ২০২৪ | ৪:৪৩ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক ::: বরিশালের আগৈলঝাড়ায় পুলিশী অভিযানে বিপুল পরিমান ইয়াবাসহ চারজনকে পুলিশ আটক করে আনার পর রাতেই রহস্যজনকভাবে তিন জনকে ছেড়ে দিয়ে এক জনের কাছ থেকে মাত্র ১০পিচ ইয়াবা উদ্ধার দেখিয়ে শুক্রবার সকালে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অপরদিকে অর্থের বিনিময়ে মাদক ব্যবসায়িদের ছেড়ে দেয়ার ঘটনায় উপরজলা শহর জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও একাধিক বিস্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে ওসির নিজস্ব লোক হিসেবে পরিচিত এসআই মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে এসআই মিল্টন, কনস্টবল কবির, বরকত উল্যাহ, কম্পিউটার অপারেটর সাইমুম রহমান ঝিলাম বাকাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৯০ পিচ ইয়াবাসহ মাদকের ক্রেতা-বিক্রেতা বাকাল গ্রামের বাসিন্দা থানার সামনের ব্যবসায়ি সুলতান আহমেদ এর ছেলে মুসফিকুর রহমান রিফাত (৩২), একই গ্রামের মৃত পরিতোষ দাসের ছেলে গোপাল দাস, নারায়ণ শীলের ছেলে ইন্দ্রজিৎ শীল ও মৃত সুরেণ রায়ের ছেলে সুশান্ত রায়কে গ্রেফতার করে। পরে রাতে রিফাতের বাবা সুলতানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পুলিশ লোক দেখানো নাটকীয় একটি অভিযান চালায়।

সূত্র মতে, চার জন আটকের পর থানায় নিলে ওই মাদক ক্রেতা-বিক্রেতাদের পাঁচ লাখ টাকার বিনিময়ে চার জনকে ছাড়িয়ে নিতে পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করা একটি চক্র গভীর রাত পর্যন্ত থানা ও আশপাশ এলাকায় অবস্থান করে। এর সাথে একজন ঠিকাদার ব্যবসায়িও ছিলেন। মোটা অংকের টাকায় রফা হলে তিন জনেক ছেড়ে দিয়ে রিফাতকে আটক রাখা হয়। অবশেষে রাত বারোটার পরে থানা অফিসার ইন চার্জ মো. আলম চাঁদ নিজের বাসা থেকে পুনরায় থানার অফিস কক্ষে এসে রিফাত বাদে বাকি তিন জনকে ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দেন।

এদিকে মাদক উদ্ধার অভিযানে নেতৃত্বদানকারী ও মামলার বাদী এসআই মনিরুজ্জামান জানান, বৃহস্পতিবার রাত সোয়া এগারোটার দিকে থানা ব্রীজ সংলগ্ন একটি দোকানের সামনে অভিযান চালিয়ে মুসফিকুর রহমান রিফাতকে ১০পিচ ইয়াবাসহ তারা আটক করেন। এ সময় রিফাতের কাছ থেকে মাদক বিক্রির ১২ হাজার ২শ টাকা জব্দ করা হয়। মাদক উদ্ধার ও আটকের ঘটনায় রিফাতকে আসামী করে তিনি বাদী হয়ে শুক্রবার সকালে মামলা দায়ের করেন, নং-১২(২৬.৪.২৪)।
চার জন আটকের পর তিন জনকে ছেড়ে দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে এসআই মনিরুজ্জামান জানান, অন্য কারনে তিন জনকে আটক করা হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদের পরে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তবে অন্য কি কারনে আটক করা হয় সে বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু বলেননি।

মাদকসহ ব্যবসায়িদের আটকের পরে অহরহ ছেড়ে দেয়ার ঘটনায় জনমনে পুলিশের কার্যক্রম নিয়ে নেতিবাচক প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা উর্ধতন প্রশাসনের কাছে মাদকসহ আটকের পরে ছেড়ে দেয়ার ঘটনার সঠিক তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ারও আহŸান জানিয়েছেন।

থানা অফিসার ইন চার্জ মো. আলম চাঁদ বলেন, একজনকে মাদকসহ আটক করে মামলা দেয়া হয়েছে। বাকি তিনজন সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাফেরা করায় আদের আটকের পরে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে গৌরনদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শারমিন সুলতানা রাখি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

© 2023 বরিশাল বাণী কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by Eclipse Web Host