বরিশালে ৮ঘন্টা বন্ধ থাকার পর ফের বাস চলাচল স্বাভাবিক

প্রকাশের তারিখ: মে ৫, ২০২৪ | ৮:২৭ অপরাহ্ণ

শামীম আহমেদ ::: বরিশালে বাস শ্রমিকদের দফায় দফায় সংঘর্ষের জের ধরে বিক্ষুদ্ব সাধারন শ্রমিকদের বাঁধার মুখে রবিবার (৫ মে) ৮ ঘন্টা অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার সব ধরণের বাস চলাচল বন্ধ হয়েছিল। পরবর্তী তা স্বাভাবিক হয়।

এদিকে নথুল্লাবাদ শ্রমিক ইউনিয়নের সদ্য যোগদানকৃত সভাপতি কাজী কবিরের সমর্থকরা ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঠা নিয়ে মিছিল করে বাস টার্মিনাল এলাকা দখল নেওয়ার জন্য পুলিশের উপস্থিতিতে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাস শ্রমিকদের কয়েক দফা ধাওয়া করে। এ সময় বেশ কয়েকজন শ্রমিক সদস্যদের মারধর করে রক্তাক্ত জখম হয়। গণমাধ্যম কর্মীরা হামলাকারীদের ছবি ও ভিডিও ধারনকালে তাদের ক্যামেরা ছিনিয়ে নিতে না পেরে তাদের গায়ে হাতও তোলে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ দেয়।

অন্যদিকে নথুল্লাবাদ সড়কে বাস মালিক সমিতির সভাপতি অসিম দেওয়ানের পক্ষে মিছিল করার সময় পুলিশ ধারালো অস্ত্র রাম দাসহ জাহাঙ্গীর ও লিমন নামের ২ ব্যাক্তিকে আটক করে। পরবর্তীতে অসিম দেওয়ানের সমর্থকরা বাসস্টান্ডে এসে পুরাপুরি দখল নিয়ে বন্ধ থাকা বাস চলাচলের ব্যবস্থা করে।

এছাড়া নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে সকাল থেকে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশসহ অতিরিক্ত পুলিশ ও ডিবি পুলিশ মোতায়েন করার পাশাপাশি র‌্যাব সদস্যরা অবস্থান নেয়।

শনিবার (৪ মে) দুপুরে বাস শ্রমিকদের দুই গ্রুপ ও সন্ধ্যায় মাহিন্দ্রা চালকদের সঙ্গে বিক্ষুব্ধ বাস শ্রমিকদের সংঘর্ষের প্রভাবে টার্মিনাল এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এ পরিস্থিতিতে বিভিন্ন গন্তব্যের যেতে টার্মিনালে এসে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন যাত্রীরা। টার্মিনাল এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।

অপরদিকে বিচ্ছিন্নভাবে বরিশালের বাহির থেকে ঝালকাঠি ও পটুয়াখালী জেলা থেকে ছেড়ে আসা কিছুসংখ্যক দূরপাল্লার বাস টার্মিনাল এলাকা অতিক্রম করতে দেখা গেছে। তবে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বরিশাল বাসস্টান্ড থেকে দুরপাল্লাসহ অভ্যন্তরীন কোন বাস চলাচল করেনি।

উজিরপুরগামী যাত্রী রানা বলেন, সব বাস চলাচল বন্ধ। এ সুযোগে হলুদ অটোরিকশার চালকরা তিনগুণ ভাড়া আদায় করছে। ছেলের চিকিৎসা করাতে এসে আটকে আছেন বলে জানান তিনি।

বিক্ষুব্ধ বাস শ্রমিকরা বলেন, শনিবার বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি অসিম দেওয়ানের অনুসারী বাবাই কর্তৃক বাস চালক ও হেলপারকে মারধরের ঘটনার জড়িতদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত বাস চলবে না।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) আলী আশরাফ ভূঞা বলেন, দুই পক্ষের শ্রমিকদের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা চালাচ্ছি। টার্মিনাল এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে।

এরআগে শনিবার দুপুরে ২ ঘণ্টাব্যাপী শ্রমিকরা দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ভাঙচুর চালিয়েছে। এ সময় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করায় সারাদেশের সঙ্গে বরিশালের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এ ঘটনায় অন্তত ১০ শ্রমিক আহত হয়েছে।

পুলিশ বলছে, নথুল্লাবাদ টার্মিনাল কেন্দ্রীক পরিবহণ সেক্টরের শ্রমিক নেতাদের মধ্যে দু’টি গ্রুপ বিদ্যমান। তাদের মধ্যে থাকা বিরোধের সূত্র ধরেই এ ঘটনা ঘটেছে। ফলে টার্মিনালের ভেতরে ও বাইরে সংঘর্ষ-ভাঙচুর, হাতাহাতির ঘটনা ঘটিয়েছে শ্রমিকরা।

এ বিষয়ে বাশ শমিক ইউনিয়নের সভাপতি কাজী কবির বলেন- আমরা কোন ধরনের অশান্তি বিশৃঙ্খলা চাই না। এখানে আমাদের লোক কারো উপরে হামলা করে নাই। যা কিছু হয়েছে বাহিরে তারা বহিরাগত তারা আমাদের লোক না।

© 2023 বরিশাল বাণী কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by Eclipse Web Host