মহিপুর মৎস্যবন্দরে প্রকাশ্যে চলছে ’মিনি ক্যাসিনো’, ফেসবুকে ভাইরাল

প্রকাশের তারিখ: আগস্ট ৯, ২০২০ | ৭:৩২ অপরাহ্ণ

পটুয়াখালী প্রতিনিধি ::: পটুয়াখালীর মহিপুর মৎস্যবন্দরে প্রকাশ্যে চলছে ’মিনি ক্যাসিনো’। প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলে এ মিনি ক্যাসিনো। মৎস্যবন্দরের আড়ৎপট্রি’র পশ্চিম দিকে পুরাতন ফরেষ্ট অফিস এলাকায় তাবু টানিয়ে মৎস্য শ্রমিক ও জেলেদের টার্গেট করে চলছে এ ক্যাসিনো, যা স্থানীয় ভাষায় বলা হচ্ছে লটারী’র জুয়া।

এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একজন সচেতন নাগরিক আপলোড করে এটি বন্ধে ষ্ট্যাটাস দেয়ার পর এ নিয়ে পুলিশ প্রশাসনের বক্তব্য ভিডিওটি তাঁদের দৃষ্টি গোচর হয়নি। এখনই খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মহিপুর থানা থেকে ৪শ’ ফুট দূরত্বে মৎস্যবন্দরের শিববাড়িয়া নদীতীরে (থানার সামনের চা দোকানী আম্বিয়া’র পুত্র) রিপন (২৮) নামের এক যুবক পার্শ্ববর্তী তালতলি উপজেলার ক’জুয়াড়ীকে নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও প্রভাবশালীদের শেল্টারে এ মিনি ক্যাসিনো বা লটারী জুয়া চালিয়ে আসছে। মিনি ক্যাসিনো’র এক একটি লটারী বিক্রী হচ্ছে ৫০ থেকে ৫০০ টাকায়। যাতে পাওয়া যাচ্ছে আকর্ষনীয় প্লাষ্টিক ও কাঁচের বিভিন্ন সামগ্রীসহ মোবাইল পর্যন্ত।

কালে ভদ্রে দু’চার জনকে বিভিন্ন সামগ্রী পেতে দেখা গেলেও মোবাইলসহ দামী উপকরণ পেতে দেখা যায়নি কাউকে। আর এভাবে সর্বশান্ত হচ্ছে গরীব জেলেরা ও এলাকার যুব সমাজ। যা থেকে প্রতিদিন আয় হচ্ছে ২৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। মিনি ক্যাসিনো’র এ আয় থেকে মাসোয়ারা পাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসনসহ কতিপয় সাংবাদিক।

এতে মৎস্যবন্দরের সচেতন নাগরিকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ওই মিনি ক্যাসিনো’র ভিডিও ক্লিপ আপলোড করে তা বন্ধে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষনের পরও বন্ধ করা যাচ্ছেনা এ জুয়া।

মহিপুর মৎস্যবন্দরের সচেতন নাগরিক এস আলম হাওলাদার বলেন, ’আমি মহিপুর আইন শৃংখলা কমিটির সভায় বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি’র উপস্থিতিতে এর আগে এ জুয়া নিয়ে কথা বলার পর কিছুদিন এটি বন্ধ ছিল। বর্তমানে প্রশাসনের নাকের ডগায় নতুন উদ্যমে শুরু হয়েছে এ মিনি ক্যাসিনো। এতে গরীব জেলেরা ও এলাকার যুব সমাজ সর্বশান্ত হলেও মাসোয়ারা পাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন ও কতিপয় সাংবাদিক। তাই এটি বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে শীঘ্র পদক্ষেপ গ্রহনের দাবী তাঁর।’

এস আলম হাওলাদার বলেন, ’আমি একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে এ জুয়া বন্ধে আমার ফেসবুকে এর ভিডিও আপলোড করে ষ্ট্যাটাসও দিয়েছি।’

মহিপুর মৎস্যবন্দরের আড়ৎ মালিক সমিতির সভাপতি ফজলু গাজী বলেন,’গত এক সপ্তাহ ধরে প্রকাশ্যে এ জুয়া চলছে। এটি বন্ধে বর্তমান ওসিকে বলে কোন লাভ নেই।’

এ বিষয়ে মহিপুর ওসি মো: মনিরুজ্জামান বলেন, ’আমার কাছে এ সংক্রান্ত কোন সংবাদ নেই। তবে আমি জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।’

কলাপাড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহম্মেদ আলী বলেন, ’এ ধরনের কোন ইনফরমেশন আমার জানা নেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওটি আমার দৃষ্টি গোচর হয়নি। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

© 2023 বরিশাল বাণী কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by Eclipse Web Host