ঝালকাঠিতে শিক্ষকের বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতী ও দুর্নীতির অভিযোগ

প্রকাশের তারিখ: আগস্ট ১১, ২০২০ | ১০:১৪ অপরাহ্ণ

নিজেস্ব প্রতিবেদক: ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলাধীন পশ্চিম সুবিদপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের যৌথ ব্যাংক একাউন্ট থেকে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে অর্ধলক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার ও উক্ত টাকা দিয়ে কোন উন্নয়ন কাজ না করার সুনির্দৃষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেছে। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান ফোরকান লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে এই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক খাদিজা বেগমের চেক জালিয়াতীসহ সকল দূর্নীতি-অনিয়মের হাত থেকে বিদ্যালয়টি রক্ষায় তদন্ত পূর্বক বিচারের আবেদন জানিয়েছে।

এদিকে কমিটির সভাপতি নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে একমাস পূর্বে লিখিত অভিযোগ দিলে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা অনিকা রানী দত্ত কে তদন্তের দায়িত্ব দিলে তিনি জাল স্বাক্ষর ও কাজে অনিয়মের সত্যতা পেয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছে। তাছাড়া কমিটির সভাপতির স্বাক্ষর জাল করা নিয়ে অভিযোগ উত্থাপনের পর সোনালী ব্যাংক নলছিটি শাখা ব্যবস্থাপক আনসার আলীও জালজালিয়াতীর বিষয়টি সত্য স্বীকার করে এ কারনে গত ৩ মাস পর্যন্ত শিক্ষক খাদিজা বেগমের বেতন স্থগিত রাখা হয়েছে বলে জানান।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, অভিযোগকারী মিজানুর রহমান ফোরকান পশ্চিম সুবিদপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসাবে দীর্গ দিন ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। কিন্তু বিগত ২৩/০৩/২০২০ইং তারিখ তাকে না জানিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক খাদিজা বেগম গোপনে সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে সোনালী ব্যাংক নলছিটি শাখায় বিদ্যালয়ের একাউন্ট (নং-২০৬৮১) থেকে নিজ নামে ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করেন।

উক্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক খাদিজা বেগমের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে ১৭মে ২০১৭ইং তারিখেও নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ করা হলে তিনিবিষয়টি উপজেলা ভূমি অফিসারের কাছে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়ে ছিলেন। তবে রহস্য জনক কারনে উক্ত অভিযোগের বিষয়ে পরবর্তী কোন পদক্ষেপ গ্রহন না করায় সে আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এছাড়া গত ২৭ আগষ্ট ২০১৯ইং তারিখ অত্র বিদ্যালয়ের উন্নয়ন খাতে বরাদ্দকৃত ৫০ হাজার টাকা প্রধান শিক্ষকের নামে সোনালী ব্যাংক নলছিটি শাখা থেকে উত্তোলনের পর সঠিক ভাবে কাজ না করে অনিয়মের আশ্রয় নেন বলে অভিযোগে দাবী করেন।
এ বিষয়ে তদন্তে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা অনিতা রানী দত্ত জানায়, নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়ার পর সরেজমিন তদন্ত করেছি। অভিযোগে দুই অংশের মধ্যে স্বাক্ষর জালের বিষয়টি আমার চোখে দেখা মতে সত্য প্রতিয়মান হয়েছে। অপরাংশে উক্ত টাকা ব্যায়ে বিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজের ক্ষেত্রে আংশিক অনিয়ম হয়েছে বলে প্রতিয়মান হয়েছে। আমি যতোটুকু সত্যতা পেয়েছি শিগ্রই তা উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবো।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক খাদিজা বেগমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভায় আলোচনা সাপেক্ষে রেজুল্যেশন করে টাকা উত্তোলনের পর উন্নয়নমূলক কাজ করানো হয়েছে। এখোন ব্যক্তিগত শত্রুতার কারনে সভাপতি আমাকে হয়রানি ও নাজেহাল করার জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট এসব অভিযোগ করছে। স্বাক্ষর জালের বিষয়ে বলেন, সভাপতির বেশ কয়েক রকম স্বাক্ষর আছে আর আমি যদি স্বাক্ষর জাল করতাম ব্যাংক কর্মকর্তারা কি টাকা দিতো। এসব অভিযোগ চালাচালির কারনে আমার বেতন তুলিনি, কেউ বেতন স্থগিত করেনি।

© 2023 বরিশাল বাণী কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by Eclipse Web Host