আম্ফানের তান্ডবে লন্ডভন্ড ঘরবাড়ি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ভেসে গেছে চিংড়ি ঘের

প্রকাশের তারিখ: মে ২১, ২০২০ | ৪:১১ অপরাহ্ণ

মনির হোসেন, মোংলাঃ
মোংলায় ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে ঘরবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, উপড়ে পড়েছে গাছপালা। এছাড়াও মোংলার পশুর নদীতে একটি টুরিষ্ট বোট ডুবে গেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। একই সাথে ভেসে গেছে শত শত চিংড়ি ঘের। বুধবার সন্ধ্যায় ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তান্ডবে উপজেলার সোনাইলতলা ইউনিয়নের আমড়াতলা চাঁপড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও পৌর এলাকার মোংলা প্রি- ক্যাডেট স্কুলসহ আরো বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পাশাপাশি অনেক বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের স্থাপনাও ভেঙে গেছে ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডবে।  তবে ঝড়ে এখানে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টায় মোংলা সমুদ্র বন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত বহাল রেখেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এর প্রভাবে বৃহস্পতিবার এ এলাকার উপর দিয়ে প্রচণ্ড ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়া অব্যাহত রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রাহাত মান্নান বলেন, সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নেয়া লোকজনের মাঝে বৃহস্পতিবার সকালেও খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
বুধবার দিনে এবং রাতে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে নেওয়া হয় ৪৮ হাজার মানুষকে। ঝড় কিছুটা কমে যাওয়ায় তারা এখন নিজ বাড়িঘরে চলে যাচ্ছেন। তবে ঝড়ে প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের তালিকা পাওয়ার পর জানানো হবে বলেও জানান তিনি।
বন্দরের পশুর চ্যানেলের তীরবর্তী কানাইনগর, কলাতলা, সুন্দরতলাসহ বিভিন্ন জায়গার দুর্বল বেড়িবাঁধের কয়েকটি জায়গা ধ্বসে গেছে।
তবে আবহাওয়া অফিসের দেয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী, কয়েক ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের কথা বলা হলেও মোংলা সমুদ্র বন্দরের পশুর চ্যানেলসহ সুন্দরবনের নদ-নদীর পানির উচ্চতা অনেকটা স্বাভাবিকই ছিল। ফলে মোংলাসহ আশপাশ এলাকায় জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি।
যদিও বেড়িবাঁধ ভেঙে কিংবা উপচে জোয়ারের যে পানি বাঁধের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেছিল তা আবার ভাটার সময়ে নেমে গেছে। এদিকে আম্পানের তাণ্ডবে পূর্ব সুন্দরবনের ঢাংমারী স্টেশন, লাউডোব, দুবলা ও মরাপশুর ক্যাম্পের জেটি, ঘরবাড়িসহ অন্যান্য স্থাপনা এবং বনের গাছপালার বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. বেলায়েত হোসেন। তবে এতে কোনো জেলে নৌকা ডুবি, জেলে নিখোঁজ কিংবা হতাহতের খবর নেই বলেও জানান তিনি। শক্তিশালী আম্পান শক্তি হারিয়ে চলে গেলেও গোটা পশ্চিম উপকূলে রেখে গেছে ক্ষত চিহ্ন। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ঘূর্নিঝড়ের তান্ডবে মোংলার মেছেরশাহ সড়কে গাছ উপড়ে পড়লে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা তা অপসারণ করে সড়কে যান চলাচলের উপযোগী করে দেন।

© 2023 বরিশাল বাণী কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by Eclipse Web Host