আম্ফানের মধ্যে পাখির প্রতি বিরল ভালবাসা দেখালো ববি শিক্ষার্থী

প্রকাশের তারিখ: মে ২১, ২০২০ | ১১:২৮ অপরাহ্ণ

বরিশাল বাণী:

সুপার সাইক্লোন আম্ফানের তান্ডবে যখন সবকিছু লন্ডভন্ড। এমন সময়ে একটি পাখির ছানার প্রতি মমতা দেখিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগে অধ্যায়নরত সজিবুল ইসলাম সজল।

কাউনিয়া প্রথম গলি ‘সুরমা নিবাস’ এ হঠাৎ বাসার ছাদে একটি ছোট পাখির ছানা এসে পড়ে। বৃষ্টিস্নাত পাখির ছানাটি উড়তে পারেনা। ছানাটিকে তুলে নিয়ে রাতে একটি-দুটি করে খাইয়ে আলতো গরম রাখতে কাপড়ে মুরিয়ে রাখে। ধীরে ধীরে ছানাটি সতেজ হয়।

পরদিন সকালে দুটি বড়পাখি এসে ছাদে কিচিরমিচির করতে থাকলে তারা বুঝতে পারে যে এরাই এই ছানাটির বাবা-মা। অবশেষে বাবা মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিল। কিছুক্ষণ তিনটি পাখি খুনসুটি করার পর একসাথে উড়াল দিয়ে চলে গেল। আর সেই অপরূপ দৃশ্যটি নিজের মোবাইল ক্যামেরায় ভিডিও ধারন করে সজল। সাথে সজলের বাবা মা, বড়ভাই ও ছোটবোন তানিশাও মুগ্ধ হয়ে দেখে এসব।

এ বিষয়ে অনুভূতি জানিয়ে নিজ ফেসবুক ওয়ালে ভিডিও সহ একটি পোস্ট দেয় সজল। সেখানে তার ব্যক্ত করা অনুভুতি বাক্যগুলো নিম্নে হুবহু তুলে ধরা হলো।

ঘুর্নিঝড় আম্ফান প্রভাবে এই বুলবুল পাখির বাচ্চাটাকে আশ্র‍য় দেই একটা রাত। পাখিটা উড়তে সক্ষম ছিলোনা। রাতে কয়েকটা ভাত খাওয়াই আর পানি খাওয়াই একজনের কথায়। পরদিন সকালে আরো বড় দুইটা বুলবুল পাখি(বুঝতে বাকি নাই যে এরা বাবা মা) খাবার নিয়ে আইসা ছাদ এ কিচিরমিচির আওয়াজ শুরু করছে। ছাদ এর পাশে আমার রুম হওয়ায় ঘুম থেকে উঠে বাচ্চা পাখিটাকে ওদের কাছে দেই। এরপরেই যা দেখলাম, যেটা আসলে মন থেকে অনুভব করতে পেরেছি।
গতকাল সন্ধ্যায় যখন বাচ্চাটাকে নিয়ে আসি এই বড় পাখি দুটো লক্ষ্য করেছে যে আমি নিয়ে আসছি, ভোর হতেই তারা হাজির। পাখিটার জন্যে খাবার নিয়ে হাজির, যথারীতি আমাকে দেখে সামনে আসতে পারছেনা পাখি দুইটা।
তাই একটু আড়াল হয়ে পৃথিবীর সবথেকে সুন্দর মুহুর্ত টা ক্যামেরা বন্দি করলাম। পাখিটাকে তার বাবা মা খাবার খাওয়াচ্ছে, তারা সারারাত অপেক্ষা করেছে কখন ভোর হবে, কখন এই ঝর শেষ হবে।
সন্তানের জন্যে বাবা মায়ের ভালোবাসা টার কোন মুল্য হয়না, তাদের ভালোবাসা টা নিস্বার্থ।
ঘুম থেকে উঠে আমি আব্বু আম্মু এই দৃশ্য দেখি সাথে ক্যামেরা বন্দি করেছি।
অবশেষে পাখিটা দেখলাম আজ অল্প করে উড়তে শিখেছে।
পাখিটা হয়তো তার বাবা মার সাথে নতুন কোন ঠিকানায় চলে গেছে।
কিন্তু যা উপলব্ধি করতে পারলাম তা মূল্যহীন।
পাখিটাকে তার বাবা মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিয়ে যে সুখ টা পেলাম সেটা বলে বুঝানো যাবেনা।

 

© 2023 বরিশাল বাণী কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by Eclipse Web Host