দাফনের আগে কেঁদে ওঠা শিশুটির নাম রাখা হল ‘মরিয়ম’

প্রকাশের তারিখ: অক্টোবর ১৭, ২০২০ | ৮:১৯ অপরাহ্ণ

চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করার পর দাফনের সময় কেঁদে ওঠা নবজাতকটির নাম রাখা হয়েছে মরিয়ম। তাকে এখনো ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নবজাতক ইউনিটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে।
নবজাতকটির বাবা ইয়াসিন বলেন, এটি তার দ্বিতীয় বাচ্চা। এর আগে তার ১০ বছরের ইসরাত জাহান নামে আরেকটি মেয়ে রয়েছে। তাদের বাড়ি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মালঙ্গা গ্রামে। তুরাগ ধউর নিসাতনগর এলাকায় থাকেন তারা। তার স্ত্রী গৃহিণী ও তিনি বিআরটিসির বাসচালক।
চিকিৎসকদের এমন ভুল সিদ্ধান্ত ও পরামর্শের জন্য তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি আরও জানান, দুই দিন আগে বুধবার ৬ মাস ১৬ দিনের অন্তঃসত্ত্বা অসুস্থ স্ত্রীকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে এলে গাইনি বিভাগের ২১২ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। তখন তাকে চিকিৎসকরা জানান, তার প্রেশার অনেক হাই। বাচ্চাটি ডেলিভারি না করালে তার প্রেশার কমবে না। চিকিৎসকদের কথায় সম্মতি দেওয়ার পর ওইদিন রাতেই তাকে লেবার রুমে নিয়ে নরমাল ডেলিভারির চেষ্টা করা হয়। ডেলিভারি না হওয়ায় তাকে ১১০ নম্বর ওয়ার্ডে রাখা হয়। সেখানে চিকিৎসকরা দুই দিন চেষ্টার পর গতকাল ভোরে তার আবার ব্যথা শুরু হয়। এরপর পৌনে ৫টার দিকে তার স্ত্রী শাহিনুর বেগম এক কন্যা সন্তান প্রসব করেন।
তবে চিকিৎসকরা জানান, বাচ্চাটি মৃত অবস্থায় হয়েছে। এরপর হাসপাতালের আয়া মৃত বাচ্চাটিকে প্যাকেট করে বেডের নিচে রেখে দেন এবং কোথাও নিয়ে দাফন করার জন্য বলেন। সকাল ৮টার দিকে নবজাতকটির বাবা ইয়াসিন নবজাতককে দাফন করার জন্য আজিমপুর কবরস্থানে নিয়ে যান। সেখানে এক হাজার ৫০০ টাকা সরকারি ফি দিতে না পারায় তাদের পরামর্শে রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে নিয়ে যান। সেখানে ৫০০ টাকা ফি ও কিছু বকশিস দেওয়ার পর মৃত নবজাতকটির জন্য কবর খোঁড়া শুরু হয়। কবর খোঁড়ার প্রায় শেষ পর্যায়ে শিশুর কান্নাকাটির শব্দ শুনতে পান। তিনি আশপাশে কোথাও কিছু না পেয়ে পরে পাশে রাখা নবজাতকটির দিকে খেয়াল করেন। এরপর প্যাকেট খুলে দেখেন বাচ্চাটি নড়াচড়া ও কান্নাকাটি করছে। পরে নবজাতককে দ্রুত আবার ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং চিকিৎসকরা দেখে নবজাতক বিভাগে ভর্তি করেন।

© 2023 বরিশাল বাণী কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by Eclipse Web Host