‘রাজনীতিকে পরিশীলিত, পরিমার্জিত ও সৃজনশীল করা দরকার’ : প্রাণিসম্পদমন্ত্রী

প্রকাশের তারিখ: অক্টোবর ২৬, ২০২০ | ৫:১৯ অপরাহ্ণ

অনলাইন ডেস্ক :: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, নীতির রাজাকে ধারণ ও চর্চা করাই হচ্ছে রাজনীতি। এ জন্য রাজনীতিকে আরও পরিশীলিত, পরিমার্জিত ও সৃজনশীল করা দরকার। রাজনীতি যদি পরিশীলিত, পরিমার্জিত এবং সৃজনশীল না হয় তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ ভালো হওয়ার অবকাশ থাকবে না। রাজার নীতিকে রাজনীতি বলা থেকে দূরে সরে শ্রেষ্ঠ নীতি, নৈতিকতা, সততা ও মূল্যবোধকে ধারণের মাধ্যমে শেরেবাংলাদের আদর্শকে বাস্তবায়ন করতে হবে।

সোমবার শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের ১৪৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীতে শেরেবাংলার মাজার প্রাঙ্গণে বরিশাল বিভাগ সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, একটি সমাজে যখন সৎ ও ভালো মানুষের কদর কমে যায় তখন সমাজব্যবস্থা, সভ্যতা নষ্ট হয়ে যায়। সকলের জন্য সমন্বিত চিন্তা করার জায়গা শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক ধারণ, লালন, চর্চা ও বিশ্বাস করতেন। তিনি যেটা বিশ্বাস করতেন সেটা কার্যকর করতেন। তার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তে ঋণসালিশি বোর্ড কৃষককুলকে মুক্ত করে দিয়েছিল। তিনি কৃষকের বেদনা বুঝতেন, কৃষকের চাওয়া-পাওয়া ও সমস্যা বুঝতেন। এ ভূখণ্ডের মানুষের তিনি মৌলিক পরিবর্তন আনতে চেয়েছিলেন। সে পরিবর্তন আনার লড়াইয়ে তখন রাজনীতি তত সহজ ছিল না।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বলতেন রাজনীতি নিজের বিত্তবৈভব বাড়ানোর জন্য নয়। মানুষের কল্যাণে, দেশের সেবায় আত্মোৎসর্গ করাই হচ্ছে রাজনীতি। সে জায়গা শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক ধারণ করতেন। একা সুখে না থেকে সকলকে কীভাবে সুখী রাখা যায় সেই অনুভূতি থেকে শেরেবাংলারা রাজনীতি করতেন। শেরেবাংলার রাজনীতির উত্তরসূরী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শেরেবাংলার ধারাবাহিকতায় মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনীতির মৌলিক জায়গা ধারণ করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।

শ ম রেজাউল করিম বলেন, রাজনীতিতে আমরা অনেকেই নিজের ভাগ্য পরিবর্তনের লক্ষ্য নিয়ে আসি। এ জায়গা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। যারা তথাকথিত রাজনীতি করতে চায়, যারা শুধু ক্ষমতাকেই রাজনীতি মনে করে তাদের পরিহার করতে হবে। যাদের অনেক বিত্তবৈভব আছে তাদের চেয়ে যাদের দেশপ্রেমের মন আছে তাদের আজ বড় প্রয়োজন। সকলে মিলে ন্যায়, সততা ও আদর্শের রাজনীতিকে ধারণ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, শেরেবাংলাকে যদি স্মরণ করতে চাই, মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে যদি স্মরণ করতে চাই, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে যদি স্মরণ করতে চাই, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে যদি বিশ্বাস করি তাহলে রাজনীতিতে সততার কোনো বিকল্প নেই। দেশপ্রেমের কোনো বিকল্প নেই এবং সৎ রাজনীতিকদের সামনে নিয়ে আসার কোনো বিকল্প নেই। শেরেবাংলাকে প্রকৃতপক্ষে স্মরণ করতে হলে চোখ বন্ধ করে মনের দৃষ্টিতে তাকিয়ে ভাবতে হবে শেরেবাংলা কী চেয়েছিলেন, আমরা কী করছি। আর শেরেবোংলার আদর্শের উত্তরাধিকার যারা বহন করবেন তাদের সমর্থন করতে হবে।

বরিশাল বিভাগ সমিতির সভাপতি ইতিহাসবিদ সিরাজ উদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিরোজপুর জেলা সমিতির সভাপতি ও সাবেক সচিব মো. শামসুল হক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. ইসমাইল ও শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের দৌহিত্র এ কে ফাইয়াজুল হক রাজু।

সভায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বরিশাল বিভাগ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ জলিল। এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ আলোচনা সভায় বক্তব্য প্রদান করেন। সভার পূর্বে মন্ত্রী ও অন্যান্য অতিথিবর্গ শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের মাজারে ফুলেল শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন।

© 2023 বরিশাল বাণী কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by Eclipse Web Host