কাওসার হামিদ,তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি॥
গৃহবধুকে পিটিয়ে হত্যা মামলা তুলে নিতে আদালতের সামনেই মামলার বাদীকে প্রান নাশের হুমকি দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার সাংবাদিকদের কাছে এমন অভিযোগ করেন মামলার বাদী নিহত গৃহবধুর বাবা সোহরাব গাজী।
অভিযোগ সুত্রে ও মামলার বিবরনে জানা গেছে, তালতলী উপজেলার ছাতনপাড়া এলাকার সোহরাব গাজীর মেয়ে সালমা আক্তারের ২০১৫ সালে বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের লস্করপুর এলাকার খালেক আকনের ছেলে এমাদুলের সাথে। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে সালমার বাবা নগদ টাকা ও স্বর্নালংকার সহ ৩লক্ষ টাকার মালামাল দেন। বিয়ের ৩ বছর যেতে না যেতেই যৌতুকলোভী জামাতা এমাদুল মাহেন্দ্র গাড়ী ক্রয় করার অযুহাত দিয়ে আরও ৩লক্ষ টাকা যৌতুক হিসেবে দাবী করেন। দরিদ্র সোহরাব গাজী জামাতার যৌতুকের দাবী মেটাতে না পারলে সালমার উপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন। এক পর্যায় যৌতুকের দাবীতে গত ১৮ অক্টোবর সালমার উপর দিন ব্যাপী অমানুষিক নির্মম নির্যাতন চালায়। এ ঘটনায় ওই দিন দুপুরে রান্নাও করতে পারেনি সালমা। পাশন্ড স্বামীর ইটের আঘাতে সালমার বাম চক্ষু নষ্ট হয়ে যায়। এতে অজ্ঞান হয়ে পড়েন সে। পাশন্ড স্বামীর নির্মম নির্যাতনে গভীর রাতেই মারা যায় সালমা। পরে তার গলায় রশি বেধেঁ ঘরের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে রেখে পিত্রালয় খবর দেয়। পুলিশ অমানুষিক নির্যাতনের আঘাতে নষ্ট হয়ে যাওয়া চক্ষুর রক্তাক্ত অবস্থায় সালমার লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরন করেন। এ ঘটনায় সালমা বাবা বাদী হয়ে কলাপাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে পুলিশ এমাদুলকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে। পুলিশ হত্যার রহস্য উদঘটনের জন্য বিজ্ঞ ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে এমাদুলের ৫দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। বিজ্ঞ আদালত এমাদুলের ২দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন। এসময় আদালত ভবনের সামনে (বাইরে) থাকা সালমার বাবা সোহরাব গাজীকে এমাদুলের মামাসহ তার আত্মীয়রা মামলা তুলে নেয়ার কথা বলে তর্ক করেন। শীঘ্রই এ মামলা তুলে না নিলে প্রান নাশের হুমকিও দেন তারা।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আলমগীর হোসেন জানান, আদালত ভবনের সামনে নিহত সালমার বাবা সোহরাব গাজীর সাথে এমাদুলের আত্মীয়রা তর্ক (কথার কাটাকাটি) করেছে বলে খবর পেয়েছি। মামলার সঠিক তদন্ত পূর্বক আদালতে শীঘ্রই চার্জশিট দাখিল করা হবে।