আমতলী সরকারী একে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ্যাসাইনমেন্টের নামে টাকা আদায়!

প্রকাশের তারিখ: ডিসেম্বর ১০, ২০২০ | ৭:১৮ অপরাহ্ণ

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি :: বরগুনার আমতলী সরকারী একে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ্যাসাইনমেন্টের নামে টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। টাকা জমা না দিলে এ্যাসাইনমেন্ট খাতা জমা নিচ্ছেন না স্কুল কর্তৃপক্ষ এমন অভিযোগ অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ বজলুর রহমান বলেন, শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের নির্দেশ মোতাবেক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সেশন ফি’র বকেয়া টাকা আদায় করছি। কিন্তু তার কাছে মন্ত্রনালয়ের পরিপত্র দেখতে চাওয়া হলে তিনি পরিপত্র দেখাতে পারেননি। দ্রæত এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন অভিভাবকরা।

জানাগেছে, আমতলী একে সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেনীতে ৭’শ ৮৮ জন শিক্ষার্থী আছে। করোনা ভ্ইারাসের প্রার্দূভাবের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় গত ৩১ অক্টেবার শিক্ষার্থীদের লেখাপাড়া চালিয়ে নেয়ার জন্য এ্যাসাইনমেন্ট পরীক্ষা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রনালয়। ৫ অক্টোবর এ্যাসাইনমেন্ট পরীক্ষা শুরু হয়। বর্তমানে পঞ্চম এ্যাসাইনমেন্ট পরীক্ষার খাতা জমা নেয়া হচ্ছে। আমতলী একে সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ্যাসাইনমেন্ট পরীক্ষায় সেশন ও আইসিটি ফিয়ের নামে শ্রেনী ভেদে ৮’শ ৫০ থেকে ১২’শ ৫০ টাকা আদায় করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ধার্য্যকৃত টাকা জমা না দিলে শিক্ষার্থীদের ্এ্যাসাাইনমেন্ট খাতা জমা নেয়া হচ্ছে না এমন অভিযোগ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের। বৃহস্পতিবার সকালে ষষ্ঠ শ্রেনীর শিক্ষার্থী ফাহিম শাহারিয়ার, মুসফিক মাহিন ও সপ্তম শ্রেনীর ছাত্রী তিশা মনি বিদ্যালয়ে এ্যাসাইনমেন্ট খাতা জমা দিতে আসে কিন্তু টাকা না দেওয়ায় সহকারী শিক্ষক সেকান্দার আলী ও মাওলানা শহীদুল ইসলাম তাদের এ্যাসাইনমেন্ট খাতা জমা নেয়নি। ওইদিন টাকা না নিয়ে আসায় অর্ধ-শতাধিক শিক্ষার্থীর খাতা জমা না নিয়ে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।

অভিভাবক মোঃ এনামুল হক বাচ্চু বলেন, টাকা না দেওয়ার আমার দুই সন্তানের খাতা জমা নেয়নি শিক্ষকরা। তাদেরকে বাড়ী ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। বাড়ী থেকে টাকা এনে দেওয়ায় খাতা জমা নিয়েছেন। তিনি আরো বলেন , এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মোঃ বজলুর রহমানের কাছে মৌখিক অভিযোগ দিয়েছি কিন্তু তিনি আমার অভিযোগ আমলে না নিয়ে সেশন ফির টাকা পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি এ ঘটনা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন।

শিক্ষার্থী তিশা মনি জানান, এ্যাসাইনমেন্টের ৮’শ ৫০ টাকা জমা না দেয়ায় খাতা জমা নেয়নি শিক্ষকরা। টাকা জমা দিলেই স্যারেরা খাতা জমা নেন। তিশা আরো জানান, আমার মত অনেক শিক্ষার্থীর খাতা জমা না নিয়ে স্যারেরা ফিরিয়ে দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, সহকারী শিক্ষক মোঃ সেকান্দার মিয়া ও মাওলানা শহীদুল ইসলাম দুইজন টিউটর শিক্ষক নিয়ে শিক্ষার্থীর কাছ থেকে এ্যাসাইনমেন্ট খাতা জমা নিচ্ছেন। যারা টাকা জমা দিচ্ছেন তাদের খাতা জমা নেয়া হচ্ছে আর যারা টাকা জমা দিচ্ছে না তাদের ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে।

সহকারী শিক্ষক সেকান্দার মিয়া ও মাওলানা মোঃ শহীদুল ইসলাম বলেন, এ্যাসাইনমেন্ট খাতা জমা নিয়ে সেশন ও আইসিটি ফি আদায় করছি।

আমতলী একে সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ বজলুর রহমান এ্যাসাইনমেন্টের নামে টাকা আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের নির্দেশ মোতাবেক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সেশন ফি’র বকেয়া টাকা আদায় করছি। এছাড়া কোন টাকা নেয়া হচ্ছে না।

বরগুনা সহকারী জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ শাহাদাত হোসেন বলেন, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শুধুমাত্র শিক্ষার্থীর কাছ থেকে এক বছরের বেতন নিতে পারবেন। এ্যাসাইনমেন্টের নামে কোন টাকা এবং সেশন ফি’ও আদায় করতে পারবেন না। বিদ্যালয়গুলো এই মুহুর্তে টাকা আদায় করে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

© 2023 বরিশাল বাণী কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by Eclipse Web Host