রোগীর কাছে যায়না চিকিৎসকঃ রুগ্নদশায় ঝালকাঠী সদর হাসপাতাল

প্রকাশের তারিখ: মার্চ ২৪, ২০২১ | ৬:০৮ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঝালকাঠী সদর হাসপাতাল নিজেই এখন ভুগছে রুগ্ন দশায়। ভর্তি রোগীদের কাছে মেডিকেল অফিসাররা রাউন্ডে যাননা। রোগীর স্বজনদের মুখে হিস্ট্রি শুনেই ঔষধ লেখেন তারা। এমনকি কোন রোগী বেশী অসুস্থ হয়ে পড়লে বার বার ডাকলেও ডক্টরস রুম থেকে মেডিকেল অফিসার বের হননা। বরং রোগীর লোক ডক্টরস রুমে গিয়ে সমস্যা বলার পরে সে অনুযায়ী তিনি চিকিৎসা লিখে দেন। এভাবেই খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে হাসপাতালটি। এমন অভিযোগ করেন গতকাল হাসপাতালে উপস্থিত একাধিক রোগীর স্বজনরা।

অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ঝালকাঠী জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ রতন কুমার ঢালী বলেন, ডাক্তাররা সঠিকভাবে রাউন্ড দেন। এমনকি মাঝে মাঝে আমি নিজেও সাথে থাকি। তাছাড়া আমার কাছে ইতঃপূর্বে কেউ এ ধরনের অভিযোগ দেয়নি।

এদিকে গত সোমবার একজন গলায় ফাঁস দেওয়া রোগীকে কাছে গিয়ে না দেখে রোগীর লোকদের কথা মত খিচুনী সমস্যার চিকিৎসা দেন মেডিকেল অফিসার ডাঃ সিয়াম । এরপরে সেই রোগী আরো বেশী মুমুর্ষু হয়ে পড়লেও রোগীর কাছে গিয়ে দেখেননি ঐ চিকিৎসক। অবশেষে তাকে হিস্ট্রি অফ কনভারসন (খিচুনী) লিখে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। স্পষ্ট গলায় ফাঁসের দাগ থাকার পরেও ঐ চিকিৎসক কেন তা লিখলেন না ? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ডাক্তার মূলত রোগীকে নিজ চোখে দেখেননি। তিনি রোগীর লোকদের কাছে শুনেই চিকিৎসা দিয়েছেন। অবশ্য এ কথার সত্যতা মিলেছে হাসপাতালের আরএমও ডাঃ জাফর আলী দেওয়ান এর বক্তব্যে। তিনি বলেন বলেন, রোগীর লোক প্রথমে খিচুনি সমস্যা বলেছে তাই ওটাই লেখা হয়। ছাড়পত্রে ভুল হলেও রেজিস্টারে ঠিক ভাবেই লেখা আছে।

১৭ বছরের যুবক হায়দার আলীর বাড়ি ঝালকাঠীর ভৈরবপাশা গ্রামে। সুস্পষ্ট গলায় ফাঁস এর দাগ থাকার পরেও তাকে ভালোভাবে না দেখেই খিচুনি সমস্যা বলে বরিশাল শেবাচিমে রেফান্ড করেন ডিাঃ সিয়াম। গত সোমবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটে। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে আরএমও ডাঃ জাফর আলী দেওয়ান ও ডাঃ সিয়াম মিলে তাদের রেজিস্টার খাতা ঠিক করেন। বিষয়টি সিভিল সার্জন মহোদয়ও জানেন বলে দাবী ডাঃ জাফরের।
শেবাচিমের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছেন, রোগীর গলায় ফাসের চিহ্ন স্পষ্ট। অথচ খিচুনি সমস্যা লিখে রেফা্র্ড করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, চাকুরী করতে এসে রোগীদের প্রতি এমন অবজ্ঞা ও অবহেলার জন্য ডাঃ সিয়ামের কঠোর বিচার হওয়া উচিৎ।
ঝালকাঠী জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ রতন কুমার ঢালী বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। তবে রেজিস্টারে ঠিক ভাবেই লেখা আছে।

© 2023 বরিশাল বাণী কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by Eclipse Web Host