পটুয়াখালীতে ফাঁসজাল দিয়ে চলছে পোনা নিধন, হুমকিতে জলজপ্রাণী

প্রকাশের তারিখ: মে ১০, ২০২১ | ৮:২৯ অপরাহ্ণ

পটুয়াখালীতে প্রকাশ্য দিবালোকে সাগরে নিষিদ্ধ ছোট ফাঁসের জাল দিয়ে অবাধে ঝাটকা ও সামুদ্রিক পোনামাছ নিধন চলছে। এ জালে বড় মাছের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনাও আটকা পড়ছে। বাদ যাচ্ছে না জলজ প্রাণীও। এতে হুমকিতে পড়েছে সাগরের জলজ প্রাণিসম্পদ।

কুয়াকাটার লেম্বুরবন, গঙ্গামতির চর, কাউয়ার চর, চর বিজয়সহ বিভিন্ন স্পটে অসাধু জেলেরা নির্বিচারে ইলিশের পোনা, বাগদা চিংড়ির পোনা, লবস্টার, কোরাল, ট্যাংড়া, বাইলাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ নির্বিচারে শিকার করা হচ্ছে।

পটুয়াখালী দুমকি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ ম্যানেজমেন্টে বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. ফেরদৌস আহমেদ জানান, ছোট ফাঁসের অবৈধ জাল দিয়ে মাছ ধরা ঠিক নয়। এতে পোনাসহ বিভিন্ন জলজ প্রাণী উঠে আসে। ফলে মাছের বংশবিস্তার হুমকির মধ্যে পড়ছে।

স্থানীয়রা জানান, মাছের পোনা শিকার করতে বেহুন্দিজাল, বেড়জাল, খোরা জাল, কারেন্ট জাল, সুঁতিজালসহ নানা মাছ শিকারের উপকরণ দিয়ে দিনরাত সমানতালে চলছে পোনা মাছ নিধনের মহোৎসব। আধা ইঞ্চি থেকে পৌনে এক ইঞ্চি ফাঁস জাল ব্যবহার করে অবাধে পোনা মাছ মারা হচ্ছে। এতে মৎস্য সম্পদের স্বাভাবিক প্রজনন, বংশবিস্তার ও বৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে।

পাশাপাশি জলজ সম্পদও বিনষ্ট করছেন তারা। কুয়াকাটা সাগর সংলগ্ন লেম্বুর চরসহ বিভিন্ন পয়েন্টে নিষিদ্ধ জালে যেভাবে ইলিশসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছের পোনা অবাধে হত্যা করা হচ্ছে, এভাবে চলতে থাকলে মৎস্য সম্পদ হুমকির মুখে পড়বে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলে বলেন, ‘সাগরের মাছ ধইররা সংসার চালাই। এখন জালে পোনা মাছ ওডলে আমরা কী করুম!’ অবৈধ জালের কথা জিজ্ঞেস করলে বলেন, ‘এ জাল তো দোকানে কেনতে পাওয়া যায়।’

 

আন্দারমানিক ট্যুরিজমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এম বাচ্চু জানান, সাত থেকে আটটি মাঝারি নৌকায় নিষিদ্ধ বেড় জাল ও বেহুন্দি জাল টেনে হত্যা করা হচ্ছে ইলিশসহ অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের পোনা। এখানে সামুদ্রিক ১০০ প্রকারের মাছ ও জলজ প্রাণী ডিম ছাড়ে। এছাড়া মোহনায় ডিম পাড়তে আসা কচ্ছপ এ জালে আটকা পড়ছে।

সরেজমিন গিয়ে কুয়াকাটা সংলগ্ন লেম্বুরবন এলাকায় বেহুন্দি জাল দিয়ে অনেককে প্রকাশ্য দিবালোকে মাছ ধরতে দেখা যায়। ছোট ফাঁসের বেহুন্দি ও কারেন্ট জাল দিয়ে পোনা মাছ শিকার করছেন জেলেরা।

কুয়াকাটা নৌ পুলিশের ইনচার্জ মাহমুদ হেসেন বলেন, ‘আমরা দেখামাত্রই এসব অবৈধ জাল জব্দ করি। এ অভিযান চলমান থাকবে।’

 

জানতে চাইলে কলাপাড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, আমি বিষয়টি শুনে লেম্বুরবনসহ সাগরপারের ভিভিন্ন পয়েন্টে গিয়েছিলাম এবং জেলেদের পোনা মাছ না ধরার জন্য সাবধান করে দিয়ে এসেছি।

পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্লাহ জানান, এ বিষয়ে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

© 2023 বরিশাল বাণী কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by Eclipse Web Host