হিজলায় আ.লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৩০

প্রকাশের তারিখ: মে ১৭, ২০২১ | ৫:২৩ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশালের হিজলায় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। রোববার (১৬ মে) রাতে উপজেলার হরিনাথপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। বাজার এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

রোববার দিবাগত মধ্যরাতে আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের মধ্যে কয়েক ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ৩০ জন আহত হন। রোববার রাতে সংঘর্ষ হলেও সোমবার (১৭ মে) বেলা ১২টার পর দু’পক্ষের আহত ১৩ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

তবে এ ঘটনায় সোমবার দুপুর ৩ টা পর্যন্ত কোন পক্ষ থেকেই থানায় মামলা বা লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়নি। সংঘর্ষের ঘটনায় কাউকে আটকও করেনি পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রোববার রাত ১০ টার দিকে হরিনাথপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) জহির রায়হানের সঙ্গে একই ওয়ার্ডের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোক্তার হোসেন খানের বাগবিতণ্ডা হয়। মোক্তার হোসেন খান এবার তালিকায় নাম থাকলেও অনেক গরীব ও অসহায় মানুষ প্রধান মন্ত্রীর দেয়া উপহার নগদ সহায়তা পায়নি বলে প্রতিদ্বন্দ্বী জহির রায়হানকে জানান। তিনি জহির রায়হানের কাছে টাকার হিসেব চান। এতে দুইজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। খবর পেয়ে ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী (স্থগিত নির্বাচনের) আলহাজ্ব লতিফ খানের কর্মী সমর্থকরা জহির রায়হানের পক্ষে যোগ দেন। অন্যদিকে স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) চেয়ারম্যান প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তৌফিকর রহমানের কর্মী-সমর্থকরা মোক্তার হোসেন খানের পক্ষে যোগ দেন। এরপর দু’পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে রাত ২টার দিকে পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করে। সংঘর্ষে দু’পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন।

হিজলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, সোমবার দুপুরে তৌফিকর রহমানের নয় সমর্থক ও পরে লতিফ খানের চার সমর্থককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

হরিনাথপুর বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, রাতে সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকে বাজার এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। অনেক ব্যবসায়ী ফের সংঘর্ষের আশঙ্কায় দোকানপাট খোলেননি। দু’পক্ষের মধ্যে এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে।

হরিনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান বলেন, দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে রোববার রাত সাড়ে ৮টায় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আলোচনা সভা শুরু হয়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে তৌফিকর রহমানের নেতৃত্বে একদল লোক দলীয় কার্যালয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এসময় তার (লতিফ) সমর্থকরা পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুললে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। রাত ২টার দিকে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।

হরিনাথপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তৌফিকু রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের দুই মেম্বর প্রার্থী মোক্তার হোসেন ও জহির রায়হানের মধ্যে ঝগড়ার জের ধরে তাদের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। ওই দুই প্রার্থী সম্পর্কে আপন চাচা-ভাতিজা। চেয়ারম্যান লতিফ খান ঘটনা ভিন্নদিকে নিতে এ ঘটনার সঙ্গে আমাকে জড়াচ্ছেন।

মোক্তার হোসেন জানান, প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহারের টাকা নিয়ে অনিয়ম করায় তিনি রোববার রাতে বর্তমান মেম্বর ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জহির রায়হানের কাছে প্রতিবাদ জানান। এর জের ধরে তার ওপর হামলা হলে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়।

হিজলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অসীম কুমার সিকদার জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। বাজারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ঘটনায় কোনো পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ দেননি। অভিযোগের পর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

© 2023 বরিশাল বাণী কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by Eclipse Web Host