আমতলী- তালতলীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, দুর্ভোগে পনের সহস্রাধিক মানুষ

প্রকাশের তারিখ: মে ২৬, ২০২১ | ৬:৪৯ অপরাহ্ণ

হারুন অর রশিদ, আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার জো’এর প্রভাবে জোয়ারের পানিতে ভেরীবাধ উপচে পড়ে বরগুনার আমতলী- তালতলী উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন ও আমতলী পৌরশহরের হাট- বাজারসহ কয়েকটি গ্রাম তলিয়ে গেছে। চরম দুর্ভোগে পনের’সহ¯্রাধিক মানুষ। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌরসভার উদ্যোগে খতিগ্রস্থদের মাঝে খিচুরির বিতরণ করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে মঙ্গলবার রাত থেকে থেমে বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া ছিল। বুধবার সকালের জোয়ারে পানিতে ভেরীবাঁধ ভেঙ্গে ও উপচে আমতলী পৌরশহর ও দু’উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের গ্রামে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে পৌর শহরের পুরান বাজার, গাছ বাজার, ফেরীঘাট, শশ্মানঘাট, আমুয়ারচর, লঞ্চঘাট, নয়াভাঙ্গলী, লোচা এবং আমতলী উপজেলার গাজীপুর বন্দর, কুকুয়াহাট, গুলিশাখালী, নাইয়াপাড়া, খেকুয়ানী, কলাগাছিয়া, বালিয়াতলী, পশুরবুনিয়া, ইসলামপুর তালতলী উপজেলার বড়বগী, জয়ালভাংগা, সোনাকাটা, তেতুলবাড়ীয়া, নিশানবাড়ীয়া, ছোটবগী, পঁচাকোড়ালিয়াসহ গ্রামের নি¤œাঞ্চলের ঘর-বাড়ী প্লাবিত হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ব্যবসায়ী ও এলাকায় বসবাসরত প্রায় পাঁচ সহা¯্রাধিক সাধারণ মানুষেরা। আমতলী পৌর শহরে বেশ কয়েকটি স-মিল ও কাঠ বাজার জোয়ারের পানিতে ডুবে যায়। এছাড়া শতাধিক মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে।
দু’উপজেলার ১০.০০ কিলোমিটার বেড়িবাধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ওই ভেরীবাঁধগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হলেও অর্থাভাবে বাঁধগুলো সংস্কার করা সম্ভব হয়নি। এজন্য ওইসব এলাকার মানুষের মনে আতংক বিরাজ করছে। এরই মধ্যে আজ সকালে কলাগাছিয়া গ্রামের ১৬ হাওলা খালের ¯øুইজ ও ভেরীবাঁধ ভেঙ্গে ওই গ্রামের প্রায় ৫০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আঠারগাছিয়া গাজীপুর বন্দরে জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায়।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, গতকাল রাতে ও আজ সকালে পায়রা (বুড়িশ্বর) নদীর পানি বিপদসীমার ৪০ ও ৬২ সেন্টিমিটার উপড় দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
আমতলী পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান বলেন, ঘুর্ণিঝড় ইয়াসে পৌরসভার ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছি, ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে খিচুরী বিরতণ করা হয়েছে। আগামীকাল ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা প্রস্তুত করে চাল দেয়া হবে।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার আলম মুঠোফোনে বলেন, আমতলী উপজেলার ২/১ স্পটে ভেরীবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার সংবাদ পেয়েছি। দ্রæত বাঁধগুলো মেরামতের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার জো’এর প্রভাবে উপজেলার ভেরীবাঁধের বাহিরে ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাস্তা ভেংগে নি¤œাঞ্চলের কয়েক হাজার কাঁচা বাড়ীঘর পানিতে প্লাবিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে মাঝে খিচুরী বিরতণ করা হয়েছে। তালিকা তৈরী করে তাদের সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কাওছার হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার জো’এ সোনাকাটা, নিশানবাড়ীয়া, শারিকখালী ও বড়বগী ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে মাঝে এক হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিরতণ করা হয়েছে। আগামীকাল এদের মাঝে চার মেঃ টন চাল দেয়া হবে।

© 2023 বরিশাল বাণী কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by Eclipse Web Host