আগৈলঝাড়ায় আত্মহত্যার আগে দুই পায়ে দোষীদের নাম লিখে গেলেন টুম্পা

প্রকাশের তারিখ: জুন ১০, ২০২১ | ৬:৪৪ অপরাহ্ণ

অনলাইন ডেস্ক ::: বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের রামান্দেরআক গ্রামে এক সন্তানের মা টুম্পা (৪০) তার আত্মহত্যার জন্য স্বামী, ভাসুর ও জা’কে অভিযুক্ত করেছেন। অভিযুক্তদের নাম মৃত্যুর আগে নিজের দুই পায়ে লিখে রাখে যান টুম্পা। এ ঘটনায় বুধবার (৯ জুন) রাতে টুম্পার বোন কল্পনা অধিকারী বাদী হয়ে টুম্পার স্বামী স্বপন মন্ডল, ভাসুর বিবেক মন্ডল ও জা রীতা রানী মন্ডলকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ওই রাতেই স্বপনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১০ জুন) দুপুরে স্বপনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। আর ময়নাতদন্ত শেষে বিকালে টুম্পার পরিবারের কাছে তার মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।

স্বপন মাদারীপুর জেলার ডাসার থানার নবগ্রাম এলাকার বাসিন্দা মৃত বঙ্কিম মন্ডলের ছেলে। শ্বশুবাড়ির অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে টুম্পা তার স্বামীকে নিয়ে পিতার বাড়িতেই থাকতেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. মিশু জানান, টুম্পার সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করার সময় হাটুর উপরের অংশে কলম দিয়ে তার মৃত্যুর কারণ ও মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যক্তি স্বামী স্বপন মন্ডল, ভাসুর বিবেক মন্ডল ও বিবেকের স্ত্রী রীতা মন্ডলের নাম লিখে রেখে যান। এছাড়াও তার মায়ের শ্মশানের কাছে সৎকার করার আকুতি জানিয়ে যান টুম্পা।

আগৈলঝাড়া থানার ওসি গোলাম ছরোয়ার মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে জানান, ১১ বছর আগে পারিবারিকভাবে টুম্পার সঙ্গে স্বপনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামী, ভাসুর ও জা’এর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের কারণে ৭/৮বছর আগে টুম্পা স্বামীকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসেন। টুম্পা ও স্বপন শ্রমিক হিসেবে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তাদের সংসারে ৮ বছরের ছেলে সন্তান রয়েছে।

তিনি আরও জানান, অভিযোগ পেয়েছি জমিজমা ও পারিবারিক সমস্যা সমাধানের জন্য ৮ জুন সকালে টুম্পা তার শ্বশুরবাড়ি মাদারীপুরের নবগ্রাম এলাকায় গেলে ভাসুর বিবেক মন্ডল ও জা রীতা রানী মন্ডল অকথ্য ভাষায় গালমন্দ ও মানষিক নির্যাতন চালিয়ে টুম্পাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। স্বামী, ভাসুর ও জা-এর নির্যাতন সইতে না পেরে মঙ্গলবার রাতেই টুম্পা বাবার ঘরে এসে বিষপান করে। বুধবার সকালে খবর পেয়ে পুলিশ টুম্পার মরদেহ খাটের ওপর থেকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

ওসি বলেন, এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় এক নম্বর আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।

© 2023 বরিশাল বাণী কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by Eclipse Web Host