জলদস্যু আতঙ্কে মেঘনায় ইলিশ ধরতে পারছে না জেলেরা

প্রকাশের তারিখ: জুলাই ২, ২০২১ | ১১:২৫ অপরাহ্ণ

দৌলতখান (ভোলা) প্রতিনিধিঃ
ভোলার দৌলতখানে মেঘনা নদীতে ইলিশ সহ অন্যান্য মাছ ধরার এখন ভরা মৌসুম। কিন্তু নদীতে জলদস্যু ও ডাকাতের ভয়ে মাছ ধরতে পারছেন না জেলেরা। প্রতিদিনই জলদস্যুরা হামলা চালিয়ে জাল, নৌকা ও মাছ ছিনিয়ে নিয়ে যায়। কখনও জেলেদের মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণের ঘটনা ঘটছে। তারপরও জীবনের ঝুঁকি ও রুজি-রোজগারের তাড়নায় নৌকা নিয়ে নদীতে নামছে জেলেরা।জেলেরা নির্ঘুম রাত কাটিয়ে মাছ শিকার করতে গিয়ে জাল নৌকা ও মাছ ধরার সরঞ্জামাদি হারিয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। জলদস্যুরা নৌকা ও জেলেদেরকে জিম্মি করে নৌকা ভেদে ২০-৪০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করে নিচ্ছে।জলদস্যুরা জিম্মি করে জেলেদের স্বজনদের কাছ থেকে বিকাশ বা অন্য মাধ্যমে হাজার হাজার টাকা মুক্তি পণ দাবি করে। টাকা না পাওয়া পর্যন্ত চলতে থাকে জিম্মি করা জেলেদের ওপর নির্মম নির্যাতন।

বাধ্য হয়েই ধার দেনা করে জলদস্যুদেরকে টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে আনা হয়। আর প্রাণভয়ে এসব নীরবে হজম করে যান জেলেরা। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা সংস্থাকে জানাতে ভয় পান।

জেলেদের অভিযোগ নানান ছুতায় নৌকাসহ জেলেদেরকে আটক করে হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অংকের টাকা। টাকা আদায়ের ক্ষেত্রে তারাও জলদস্যুদের কৌশলই অবলম্বন করে থাকেন।

উপজেলার মেঘনা সংলগ্ন জেলে অধ্যুষিত ভবানীপুর, পাতারঘাট, ঘোষের হাট, মাঝির হাট, সাতবাড়িয়া ও এসহাক মোড় এলাকায় সরেজমিন ঘুরে জেলেদের দেয়া বক্তব্যে এসব তথ্য জানা যায়। এ সময় তাদের চোখে মুখে ভীতির ছাপ ছিল স্পষ্ট।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এসব জেলেরা জানান, গত এক সপ্তাহে দৌলতখানের জেলেদের ১৫-২০টি নৌকা জলদস্যুদের ডাকাতির শিকার হয়েছে।

গত ২৪ জুন রাতে দৌলতখানের পাতার খাল ঘাট থেকে মোল্লা মাঝির ইঞ্জিনচালিত নৌকাটি নিখোঁজের পর আর সন্ধান পাওয়া যায়নি।

এ সব ঘটনা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা সংস্থাকে জানানো হচ্ছে না কেন এমন প্রশ্নের জবাবে জেলেরা বলেন, তাহলে আমরা জীবন নিয়েই নদী থেকে ফিরতে পারবো না।  নাম বলতে অনিচ্ছুক জেলেরা বলেন জলদস্যু নদীতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। নৌকায় হানা দিয়ে জলদস্যুরা জেলেদেরকে বেধড়ক পিটিয়ে জাল, নগদ অর্থ, মাছ, সোলার প্যানেল, জেলেদের মোবাইল ফোনসহ সব সরঞ্জাম নিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে নৌ পুলিশকে জিজ্ঞেস করলে তারা বলেন, মেঘনায় দিনরাত নৌপুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। আমরা শুনেছি একটি চক্র নৌপুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা সংস্থার নাম করে জেলেদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছে। এ ব্যাপারে আমরা কঠোর পদক্ষেপ নিবো।

© 2023 বরিশাল বাণী কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by Eclipse Web Host