রাঙ্গাবালীর ভাঙা বাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশের শঙ্কা !

প্রকাশের তারিখ: জুলাই ২৩, ২০২১ | ১১:৪১ অপরাহ্ণ
ফিরোজ ফরাজী রাঙ্গাবালী পটুয়াখালী । একদিকে পূর্ণিমার তিথি অন্যদিকে  উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে ও তৎসংলগ্ন এলাকায় লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে।  এই দুয়ে মিলে উপকূলীয় পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার নিম্নাঞ্চলসহ সংস্কারহীন ভাঙা বাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে লোকালয় প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা করছে অরক্ষিত এলাকার বাসিন্দারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পূর্ণিমার তিথি শুরু আগেই লঘুচাপের প্রভাবে শুক্রবার দুপুরের জোয়ারে উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের  চরবেষ্টিন, দক্ষিণ চরমোন্তাজ, নয়ারচর ও ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের কোড়ালিয়া লঞ্চঘাট এলাকার ভাঙা বাঁধ দিয়ে পানি ঢুকেছে।
জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের ছোবলে ওই চার এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ ভেঙে গিয়েছিল। এছাড়া চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের তিনটি গ্রামের বাঁধ অনেক আগ থেকেই ভেঙে আছে।  এ বাঁধগুলো সংস্কার না করায় জোয়ারের পানি বাড়লেই আতঙ্ক বাড়ে সেখানকার মানুষের।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য বলছে, উপজেলার ১৪ কিলোমিটার ভাঙা বাঁধের আপদকালীন জরুরি ৩ কিলোমিটার সংস্কার করা হয়েছে। তার মানে তাদের এ তথ্যই বলছে, এখনও ১১ কিলোমিটার বাঁধ সংস্কার হয়নি।
কোড়ালিয়া লঞ্চঘাট এলাকার বাসিন্দা তালাশ হাওলাদার বলেন, ‘কোড়ালিয়ার এটি কেউ বলে বাঁধ, কেউ বলে রাস্তা।  তবে যাই হোক, এটি ভাঙা থাকায় জোয়ারের পানি বাড়লে কষ্টের কোন শেষ থাকে না আমাদের। একটু জোয়ারের পানি বেশি হলেই এখানে পানি ঢুকে । আজকেও জোয়ারের পানি ঢুকছে ।’
দুর্গম চরমোন্তাজ থেকে আইয়ুব খান বলেন, ‘আজকে দুপুরে চরবেষ্টিন, দক্ষিণ চরমোন্তাজ ও নয়ারচরে জোয়ারের পানি ঢুকছে ভাঙা বাঁধগুলো দিয়ে। ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামত না করায় এই পূর্ণিমায় কয়েকদিন ওইসব গ্রামে জোয়ারের পানি ঢুকবে। ভোগান্তিতে পরবে মানুষ।’
অরক্ষিত এলাকার মানুষের দাবি, একেকটি দুর্যোগ তাদের জীবন-জীবিকা থমকে দিয়ে যায়। এর প্রধান কারণ বাঁধ ভেঙে ও ভাঙা বাঁধ দিয়ে লোকালয় পানি ঢোকে। পূর্ণিমা ও লঘুচাপের প্রভাবে দুই-তিনদিন এরকম সমস্যা হতে পারে বলে ধারণা তাদের। তাই ওইসব বাঁধ দ্রুত সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করছেন তারা।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাশফাকুর রহমান বলেন, ‘নদী-সাগর ঘেরা রাঙ্গাবালীর ভাঙা কয়েকটি বাঁধ পানি উন্নয়ন বোর্ড সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে ইতোমধ্যে ।  এখনও কয়েকটি এলাকার বাধ ভেঙে আছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ওইসব বাঁধ পরিদর্শন করেছে। আশা করছি, খুব দ্রুত বাধগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নিবে পানি উন্নয়ন বোর্ড।’
উল্লেখ্য, শুক্রবার আবহাওয়ার এক বুলেটিনে বলা হয়েছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে ও গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং সমুদ্র বন্দরগুলোর উপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

© 2023 বরিশাল বাণী কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by Eclipse Web Host