“বিসর্জিত মানবতা” —– মোহাম্মদ এমরান

প্রকাশের তারিখ: অক্টোবর ১৭, ২০২১ | ৮:৪৬ পূর্বাহ্ণ

এমন একটি হাত যখন সামনে এসে পড়ে, তখন নিজেকে আর সামলানো যায়না। কালকেও সবই ছিল, কিন্তু আজ নি:স্ব স্বামী, সন্তান কেউই বেচেঁ নেই। একাই নদীর শ্রোতে ভাসতে ভাসতে অারাকান থেকে কখন যে বাংলাদেশে এসেছে নিজেও বলতে পারছেন না। সাহায্যের অাশায় টেকনাফের শাহ্পরীর দ্বীপে রাস্তার পাশে অন্যান্য মহিলাদের থেকে একটু অালাদা হয়ে নিরবে হাত পেতে দাঁড়িয়ে থাকা নির্যাতিত, ভয়ার্ত, ক্ষুধার্ত, সংকুচিত এই মায়ের হাতটি যখন সামনে এসে পড়ে, তখন মনে পড়ে যায় মুরব্বীদের কাছে শোনা অামার দেশের মুক্তিযুদ্ধের সেই স্মৃতিপট। অার চোখ থেকে দু’ফোটা অশ্রু ফেলা ছাড়া অার কোন উপায় থাকে না।

“বিসর্জিত মানবতা”
—– মোহাম্মদ এমরান
কি দিব এই মাকে?
কি দিলেই বা এই মায়ের দূ:খ লাঘব হবে?
নাহ! কোন মূল্যই নাই তার বেদনা ঘোচাবার।

তবুও পকেটে থাকা যাত্রাপথের খরচের কিছু টাকা হাতে গুঁজে দিয়ে বিসর্জিত মানবতার পায়ে কুঠার ঠুকে চলে অাসলাম।
বুকের ভিতরটা মোচড় দিয়ে ওঠে, মনের কোনে অনেক প্রশ্ন জাগে—
এটা কি?
শুধুই হাত পাতা?
নাহ! এটা রোহিঙ্গাদের তরে বিসর্জিত মানবতা।
এটা কি?
শুধুই হাত পাতা?
নাহ! এটা একজন রোহিঙ্গা মায়ের অাকূলতা।
এটা কি?
শুধুই হাত পাতা?
নাহ! এটা একজন ক্ষুধার্ত রোহিঙ্গা মায়ের
বেঁচে থাকার ব্যাকুলতা।
এটা কি?
শুধুই হাত পাতা?
নাহ! এটা একজন সর্বহারা রোহিঙ্গা মায়ের অভিসম্পাত গাঁথা।
এটা কি?
শুধুই একটি হাত পাতা?
নাহ! এটা দূর্বল রোহিঙ্গা মুসলমানের উপর
সবল বর্মী-সৌন্যের নির্মমতা।
এটা কি?
শুধুই হাত পাতা?
নাহ! এটা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দেখে আসা
বিসর্জিত মানবতা ।।

১৬//১০/২০১৭।

© 2023 বরিশাল বাণী কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by Eclipse Web Host