স্বপ্নের পায়রা সেতু উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের তারিখ: অক্টোবর ২৪, ২০২১ | ৪:৫৮ অপরাহ্ণ

আব্দুল্লাহ আল মামুন
দুমকি (পটুয়াখালী) থেকে-
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল পটুয়াখালীর দুমকির লেবুখালীতে পায়রা নদীতে নির্মীত লেবুখালী সেতু ভার্চুয়াল মাধ্যমে গনভবন থেকে উদ্বোধন করেন। এর মধ্য দিয়ে দক্ষিনাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হলো। পায়রা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে সেতুর দক্ষিণপ্রান্তে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে স্থানীয়দের সাথে মতবিনিময় সভায় মিলিত হন প্রধানমন্ত্রী। এসময় পটুয়াখালী প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব): জাহিদ ফারুক এমপি, পটুয়াখালী ১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাড. মো. শাহজাহান মিয়া এমপি, পটুয়াখালী ২,৩ ও ৪ আসনের সাংসদবৃন্দ, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিবিয়াত সাদিক আবদুল্লাহ, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো. সাইফুল হাসান বাদল, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত, দৈনিক বাংলাদেশ বুলেটিনের সম্পাদক ও আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ আলী আশরাফ, দুমকি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুন-অর-রশীদ হাওলাদার প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধান মন্ত্রীর মূখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এর উপস্থাপনায় প্রকল্পের বিষয়ে উপস্থাপন করেন সড়ক পরিবহন বিভাগের সচিব মোঃ নজরুল ইসলাম। এসময় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পায়রা সেতু দক্ষিণাঞ্চলবাসীর আর্থসামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি অঞ্চলের পর্যটন বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভার্চুয়াল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে লেবুখালী সেতুতে যান চলাচল শুরু হয়। উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ প্রতিশ্রুত প্রকল্প হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পটুয়াখালী সফরকালে লেবুখালী নদীর পাড়ে পায়রা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পরবর্তিতে বিভিন্ন জটিলতার কারনে প্রকল্প বাস্তবায়ন বিলম্বিত হওয়ায় ২০১৫ সালে প্রাক্কলন বাড়িয়ে ৪১৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকায় উন্নীত করা হয়। সর্বশেষ ২০১৬ সালের ১২ এপ্রিল কুয়েত ফান্ড ফর ইকোনমিক ডেভোলপমেন্ট ও ওপেক ফান্ড ফর ইন্টার ন্যাশনাল ডেভোলপমেন্ট (ওএফআইডি) এর যৌথ অর্থায়নে ১১৭০.০৭ কোটি টাকা ব্যায়ে পায়রা নদীর উপর সেতু নির্মানের জন্য চীনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান লংজিন রোড এন্ড ব্রীজ কোম্পানী সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের সাথে চুক্তি সাক্ষর করে। ১৪৭০ মিটার দীর্ঘ ও ১৯.৭৬ মিটার প্রস্থ বিশিষ্ট ব্রীজটিতে মূল সেতুর ৪টি স্প্যানসহ মোট ৩২টি স্প্যান রয়েছে। নদীর জলতল থেকে সেতুটি ১৮ দশমিক ৩০ মিটার উঁচু । উভয় পাড়ে ৭ কিলোমিটার জুড়ে নির্মাণ করা হয়েছে সংযোগ সড়ক। এই সেতুতে ১৩০ মিটার গভীর পাইল বসানো হয়েছে। নদীর মাঝখানে মাত্র একটি পিলার ব্যবহার করা হয়েছে। এতে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ঠিক থাকবে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক আব্দুল হালিম । তিনি আরও জানান, দেশে প্রথমবারের মতো এই সেতুতে ‘ব্রিজ হেলথ মনিটর’ সিস্টেম স্থাপিত হয়েছে। যার ফলে বজ্রপাত ও ভূমিকম্পসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা অতিরিক্ত মালামাল বোঝাই যানবাহন চলাচলে সেতুর ভাইব্রেশন সিস্টেমে কোনো ক্ষতির সম্ভাবনা থাকলে সেই বিষয়ে সংকেত দেবে। সেতুর পরিবেশগত ক্ষতি এড়াতেই এই প্রযুক্তি সংযুক্ত করা হয়েছে।

© 2023 বরিশাল বাণী কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by Eclipse Web Host