তিন স্ত্রীর দ্বন্দ্বের জেরে বেদে পপি ও সন্তানকে হত্যা করে নদীতে নিক্ষেপ

প্রকাশের তারিখ: নভেম্বর ৯, ২০২১ | ৭:০৫ অপরাহ্ণ

বরিশাল বাণীঃ
নদীতে একই বহরে থাকা নিজের তিন স্ত্রীর দ্বন্দ্বের জেরে শ্বাসরোধে তৃতীয় স্ত্রী ও তার সন্তানকে হত্যার পর লাশ নদীতে নিক্ষেপের দায় স্বীকার করেছেন গ্রেপ্তারকৃত ঘাতক স্বামী আবুল বাশার।
গত সোমবার সন্ধ্যার পর বাশারকে বরিশালের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক মো. মওদুদ আহমদের কাছে স্ত্রী ও সাড়ে তিন বছরের নাবালক সন্তান হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন তিনি। জবানবন্দি গ্রহণ শেষে বাশারকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
আদালতে জবানবন্দিতে আবুল বাশার জানায়, তার তিনজন স্ত্রী। একই বহরে তিনটি নৌকায় তাদেরকে নিয়ে বসবাস করেন। পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তিন স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ লেগেই থাকতো। এ কারণে স্ত্রী পপিকে বহরের নৌকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বলেন তিনি।
কিš‘ পপি নৌকা ছেড়ে না যাওয়ায় গত ৪ নভেম্বর তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর তার লাশ মুলাদীর রামচর এলাকায় জয়ন্তী নদীতে ফেলে দেয় সে। এ সময় বাশার-পপি দম্পতির সাড়ে ৩ বছরের শিশু সন্তান তুহিনকে ঘুমন্ত অব¯’ায় নদীতে ফেলে দেয় সে। শিশুটিকে নদীতে ফেলে দেয়ার পর হাবুডুবু করে তলিয়ে যায়। এ সময় সে আর ওইদিকে ফিরেও তাকায়নি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মুলাদীর নাজিরপুর নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই ইমন কান্তি চৌধুরী জানান, বাশার আদালতে বলেছে সে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ নদীতে ফেলে দিয়েছে। শিশু তুহিনকেও ঘুমন্ত অব¯’ায় নদীতে ফেলে দিয়েছে। সে ক্ষেত্রে তার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত শিশুটির সন্ধান পাওয়া যায়নি। জয়ন্তী এবং আশপাশের নদীতে শিশুটির মরদেহের সন্ধান করা হ”েছ বলে জানান তিনি।
এর আগে হত্যার দায় এড়াতে স্ত্রী পপি শিশু সন্তানসহ নিখোঁজ হয়েছে মর্মে ঘটনার দিনই মুলাদী থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন বাশার নিজেই।
স্বামীর করা জিডি তদন্তে গেলে সন্দেহ হয় তদন্ত কর্মকর্তার। বাশারের অসংলগ্ন কথাবার্তায় সন্দেহ আরও ঘনিভূত হয়। পরে পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে বাশার তার স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ নদীতে ফেলে দেয়া এবং ঘুমন্ত শিশু তুহিনকেও নদীতে ফেলে দেয়ার কথা স্বীকার করেন। সে অনুযায়ী গত রবিবার রাতে জয়ন্তি নদীর নাতিরচর এলাকা থেকে পপি আক্তারের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় পপি আক্তারের ভাই চুনু সরদারের দায়ের করা মামলায় বাশারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
নিহত পপি আক্তার বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার ক্ষুদ্রকাঠী গ্রামের ফজলু সরদারের মেয়ে। অপরদিকে ঘাতক বাশার ভোলার বাসিন্দা মো. আনসারের ছেলে।

© 2023 বরিশাল বাণী কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by Eclipse Web Host