রাজৈরে হারানো শিশু রাসেল, পরিবারের সন্ধান চায় আশ্রয়দাতারা

প্রকাশের তারিখ: ডিসেম্বর ১৩, ২০২১ | ৮:৪১ অপরাহ্ণ
রাজৈরে হারানো শিশু রাসেল

জাহিদ হাসান,মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধি:
ঢাকা শহরে দাদার সাথে ঘুরতে এসেছিল শিশু রাসেল শেখ। কিন্তু কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি শেষে দাদাকে আর খুঁজে পায়নি। সে বাবা-মার কাছে ফিরে জেতে চাইলেও জানা নেই তার ঠিকানা। তবে শিশুটির পরিবারের কাছে তাকে পৌঁছে দিতে অক্লান্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সেচ্ছাসেবকলীগের নেতা আজিজুল বেপারী। তিনি ওই শিশুটিকে বর্তমানে তার নিজ বাড়ি মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার আমগ্রাম ইউনিয়নের মঠবাড়িতে আশ্রয় দিয়েছেন। ইতোমধ্যে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছে।

জানা গেছে, শনিবার (১১ ডিসেম্বর) দাদা আবু বাশার শেখের সাথে ঢাকা ঘুরতে যায় রাসেল। এসময় একটা ব্রিজের উপর থেকে সে হারিয়ে যায়। পরে বাবু বাজার এলাকায় বসে তাকে কান্নাকাটি করতে দেখে মাদারীপুরগামী চন্দ্রা পরিবহনের এক সুপারভাইজার তাকে নিয়ে আসে। এবং ছেলেটিকে তার সঠিক ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য আজিজুলের হাতে তুলে দেয়।

শিশু রাসেল জানায়, তার বাবার নাম আল-আমিন। আপন মায়ের নাম রাবেয়া, তিনি মারা গেছেন। সৎ মা তানিয়া ও দাদার নাম আবু বাশার। সে আলী হাসান একাডেমী নামের একটি কেজি স্কুলের শিশু শ্রেণীতে পড়েন। এই স্কুলে সোহেল, ইকবাল ও মুন্নি নামে তিনজন শিক্ষক আছেন। এছাড়া রাকিব (রাজমিস্ত্রির কাজ করে), রিফাত (পড়াশোনা করে) ও রাজা এই তিনজনকে ভাই হিসেবে চেনে। এসময় সে কোন স্থান থেকে, কোন রাস্তা দিয়ে, কিভাবে গিয়েছিল? তা জানতে চাইলে শিশুটি শুধু বলে, স্পিডবোটে একটি নদী পার হয়ে পরে গাড়িতে করে দাদা আমাকে ঢাকা নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তার কোনো জেলা, উপজেলা বা গ্রামের নাম বলতে পারেনি।

আশ্রয়দাতা আজিজুল বেপারী জানান, বাড়ি ফেরার পথে চন্দ্রা গাড়ির সুপারভাইজার লঞ্চে বসে বললো- এই ছেলেটার বাড়ি পদ্মার এপার হতে পারে। আপনারা কেউ একে নিয়ে একটু তার পরিবারের কাছে পৌঁছে দেবেন! কিন্তু কেউ এ দায়িত্ব নেয়নি। পরে আমি ছেলেটিকে নিয়ে তার দেওয়া তথ্যানুযায়ী অনেক খোঁজাখুঁজি করি। একপর্যায়ে আত্মীয়-স্বজন বা প্রতিবেশীদের না পেয়ে তাকে আমার বাড়ি নিয়ে আসি। এ ব্যাপারে রাজৈর থানায় জানিয়েছি।

উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা এস.এম ফজলুল হক বলেন, আমরা প্রথমতো শিশুটির বাবা-মাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করবো। আর তা সম্ভব না হলে শিশুটিকে আমরা ফরিদপুর সেভ হোমে পাঠাতে পারি। সেখানে সরকারি খরচে থাকা, খাওয়া ও লেখাপড়া করতে পারবে। আর যিনি শিশুটিকে এনেছেন তিনি যদি রাখতে চান সেক্ষেত্রে কোর্টের মাধ্যমে রাখতে পারবেন।

© 2023 বরিশাল বাণী কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by Eclipse Web Host