কাউকে ভুলে থাকার উপায় কী?

প্রকাশের তারিখ: মে ২১, ২০২২ | ৩:২৭ অপরাহ্ণ

✒️মুহাম্মাদ ইমাদুল হক ফিরদাউছ (প্রিন্স)

কাউকে ভুলে থাকতে চাইলে সবথেকে ভালো হয় নিজের মাথায় বাঁশ দিয়ে একটা জোরে বাড়ি মারা। তাহলে স্মৃতিভ্রষ্ট হয়ে তাকে আর মনে পড়বেনা। ছোট বেলায় বাংলা সিনেমায় তাই তো দেখতাম। আর এটা যদি করতে না পারেন তো ডাক্তারের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করে দেখেন এরকম কোনো ওষুধ অাছে কিনা? আমি ঠিক জানিনা এরকম ওষুধ আছে কিনা।

তবে আপনি যদি সুস্থ থেকে ভুলতে চান তো ভোলার চিন্তা বাদ দিন। অাপনি ভুলতে পারবেন নারে ভাই। এটা মেনে নিন। চাইলেই কোনো কিছু ভুলে থাকা যায়না। আমাদের মস্তিষ্ক কোনো মেমোরি কার্ড বা হার্ডডিস্ক না, যে অল্ট+ডিলিট চাপ দিলাম আর ডিলিট হয়ে গেল। আপনাকে মেনে নিতে হবে তাকে আপনি আপনার জীবনে ভুলতে পারবেন না।

এখন আসুন ভুলতে না পারলে আর কি করা যায়, তাই নিয়ে ভাবি। আসলে আমরা কেন ভুলতে চাই? ভুলতে চাই কারণ যাকে ভুলতে চাই তাকে হয়ত আমরা খুব ভালোবাসতাম, তার সঙ্গ উপভোগ করতাম, তার গল্প করা, ঠাট্টা করা, যত্ন নেয়া বিভিন্ন কিছু হতে পারে, যা তার অনুপস্থিতে বা প্রত্যাখানে আমাদেরকে কষ্ট দিয়ে চলেছে। মনে হচ্ছে কোনো ধারালো ছুড়ি দিয়ে হৃদপিণ্ড কেটে দেয়া হচ্ছে। তাকে ছাড়া আর বেঁচে থাকতে ইচ্ছে করছেনা। এই কষ্ট, বুকের মাঝের তীক্ষ্ণ ব্যাথা- দূর করার জন্যই আমরা তাকে ভুলতে চাই। আমরা তাকে ভুলতে না পারলেও এই তীক্ষ্ণ ব্যাথা কমিয়ে সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনতে পারি।

এখন এই ব্যাথা সহনীয় পর্যায়ে আনতে কি করা যায়? প্রথম কাজ তার স্মৃতি যা চোখের সামনে আছে সেগুলোকে দূর করা। তার সাথে যোগাযোগের বিন্দুমাত্র চেষ্টা না করা, মোবাইল, এসএমএস না দেয়া, সোস্যাল মিডিয়ায় ফলো না করা। দ্বিতীয় কাজ নিজেকে ব্যস্ত রাখা। এই কাজ বিভিন্ন ভাবে করা যায়। নিজের শরীরের যত্ন নেয়া, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, শরীরচর্চা করা, পরিবারের সাথে সময় কাটানো, বাচ্চাদের সাথে খুন-সুটি করা, খেলা-ধূলা করা, ঘুরতে যাওয়া, বই পড়া, সৃজনশীল কাজ করা, কোনো প্রাণি পোষা, কোনো হবিতে মনোযোগি হওয়া ইত্যাদি, ইত্যাদি। মোটকথা নিজেকে ব্যস্ত রাখা। হ্যা, মাঝে মাঝে তাকে মনে পড়বেই। পুরো-পুরি ভুলতে পারবেন না। তবে দেখবেন সেই আগের তীব্র অনুভূতি খানিকটা অসাড় হয়ে গেছে, ছুরির ধার ভোঁতা হয়ে গেছে। দেখবেন বেঁচে থাকার অনেক অনুসঙ্গ আছে। বুঝবেন হাসি, আনন্দ, কষ্ট, বেদনা নিয়েই জীবন। এগুলোকে ফেস করেই জীবনকে উপভোগ করতে হয়।

✒️লেখকঃ- সাহিত্যিক, গবেষক এবং

এশিয়ান ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের সাবেক শিক্ষক।

© 2023 বরিশাল বাণী কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by Eclipse Web Host