ঈদুল আজহার আগে-পরে ১২ দিনে (৫-১৬ জুলাই) বাংলাদেশে ২৭৪টি দুর্ঘটনায় ৩১১ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ১ হাজার ১৯৭ জন। নিহতদের মধ্যে ৪৩ নারী, ৫৮ জন শিশু রয়েছে। এর মধ্যে ১৫৪টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১২৩ জন মারা গেছেন। দুর্ঘটনায় পথচারী মারা গেছেন ৪৬ জন। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৫৩ জন।
একই সময়ে ৯টি নৌ দুর্ঘটনায় ১৩ জন মারা গেছেন এবং ৬জন নিখোঁজ রয়েছেন। ১৪টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১১ জন মারা গেছেন এবং চারজন আহত হয়েছেন।
৯টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি অনলাইন নিউজপোর্টাল এবং ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। আজ বৃহস্পতিবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে সংস্থাটি।
দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ১২৩ জন, বাসযাত্রী ৩৩ জন, ট্রাক-পিকআপ-লরি আরোহী ১৬ জন, মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার যাত্রী ১৮ জন, থ্রি-হুইলার যাত্রী ৫৭ জন, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী ১০ জন এবং বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা আরোহী আটজন নিহত হয়েছেন।
ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। ৯৩টি দুর্ঘটনায় ১০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ময়মনসিংহ বিভাগে সবচেয়ে কম ১৪টি দুর্ঘটনা ঘটেছে এবং বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে কম ১৭ জন মারা গেছেন। একক জেলা হিসেবে টাঙ্গাইল জেলায় সবচেয়ে বেশি ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। সবচেয়ে কম খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবান, মাগুরা, ঝালকাঠি, সুনামগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও ঠাকুরগাঁও জেলায়। এই ৯ জেলায় স্বল্পমাত্রার কিছু দুর্ঘটনা ঘটলেও কোনো প্রাণহানি ঘটেনি। রাজধানীতে ১৯ দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত এবং ১৭ জন আহত হয়েছেন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১০৯টি জাতীয় মহাসড়কে, ৭৭টি আঞ্চলিক সড়কে, ৬১টি গ্রামীণ সড়কে এবং ২৭টি শহরের সড়কে সংঘটিত হয়েছে।
দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ৭৬টি মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৯৯টি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ৫১টি পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেওয়া, ৪২টি যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ৬টি অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত চালক ও আরোহীদের মধ্যে ৫৯.৩৪ শতাংশের বয়স ১৪-২০ বছর এবং নিহত পথচারীদের ৩২.৬০ শতাংশ বেপরোয়া মোটরসাইকেলের ধাক্কায় নিহত হয়েছেন।
২০২১ সালের ইদুল আজহা উদযাপনকালে ৮৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৯৫ জন নিহত হয়েছিলেন। এ বছর ঈদুল আজহায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বেড়েছে ৮৫.৫৪% এবং প্রাণহানি বেড়েছে ১৯.৪৭%।