বরিশালে ব্যাপক উচ্ছেদ অভিযান চালালো প্রশাসন

প্রকাশের তারিখ: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২২ | ৭:৪৩ অপরাহ্ণ

বরিশাল বাণী: দীর্ঘদিন পরে হলে বরিশাল নগরের ভেতরে দিয়ে যাওয়া ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কের দুই পাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে প্রশাসন।

এতে করে স্থানীয়রা সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও,বরিশালের ভুরঘাটা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত মহাসড়কের দুই পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবি জানিয়েছেন পরিবহন চালকরা। এরফলে মহাসড়কে দুর্ঘটনা কিছুটা কমবে বলে মনে করেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।

বরিশাল জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারি কমিশনার মোঃ নাহিদুর রহমান জানিয়েছেন, বরিশাল নগরে সাগরদী থেকে দপদপিয়া পূরাতন ফেরিঘাট পর্যন্ত প্রায় আড়াইকিলোমিটার মহাসড়কের দুইপ্রান্তে সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে এ উচ্ছেদ অভিযান চালানো হচ্ছে। জেলা প্রশাসন এবং সড়ক ও জনপদ বিভাগে যৌথ উদ্যোগে এ অভিযানে র‌্যাব-৮, মেট্রোপলিটন পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স, বিদ্যুৎ বিভাগের সদস্যরা সহযোগীতা করছে। অভিযান শেষে সড়ক ও জনপদ বিভাগকে তাদের সম্পত্তি বুঝিয়ে দেয়া হবে।
নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ নাহিদুর রহমান বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর ঢাকা-বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। আর মহাসড়কের বরিশাল অংশ হয়ে বাকী ৫ জেলায় যানবাহন চলাচল করায় এ অংশে কয়েকগুন যানবাহনের চাপ বেড়েছে। এতে দুর্ঘটনায় সংখ্যাও কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই মহাসড়কের পাশের অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদের কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে।

তবে উচ্ছেদের আওতায় থাকা মহাসড়কের দুটি পেট্রোলপাম্পের অভিযান না চালানোর বিষয়ে তিনি বলেন, পাম্প দুটির কিছু অংশ মহাসড়কের জায়গায় রয়েছে। কিন্তু তার নীচে তেলের ট্যাংকি থাকায় ঝুঁকি এড়াতে আজ উচ্ছেদ চালানো হয়নি। তবে পাম্প দুটিকে ৭ দিনের সময় দেয়া হয়েছে, এরমধ্যে নিজ উদ্যোগে তারা মাটির নীচে থাকা ট্যাংকিগুলো অপসারন করে সড়ক ও জনপদ বিভাগের জায়গা ছেড়ে দিবে। নতুবা তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

এদিকে সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, বরিশাল শহরের মহাসড়কের দুই পাশে অবৈধ স্থাপনার কারনে যান চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছিলো। আর পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পর যানবাহনের চাপ বেশি হওয়ায় এর তীব্রতা বেড়েছে। তাই আপাতত বরিশাল শহর অংশে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে এবং এরআগে মার্কিং শেষে টানা তিন ধরে মাইকিং করা হয়েছে। এতে অনেকে নিজেরা তাদের স্থাপনা সরিয়েও নিয়েছেন আর যারা নেয়নি তাদের আজ উচ্ছেদ করা হলো । এর আওতায় দেড় শতাধিক টিনের ও আধাপাকা দোকনঘর, স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। সেইসাথে কিছু স্থাপনার অবৈধ অংশ ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে আজ। পর্যাক্রমে বরিশাল জেলার আওতাধীন মহাসড়কের সর্বত্র এ অভিযান চালানো হবে।

সাগরদী এলাকার নাঈম হোসেন বলেন, বছরের পর বছর ধরে ক্ষমতাসীনরা অবৈধভাবে সড়ক ও জনপদ বিভাগের জায়গা দখল করে যে যার মতো স্থাপনা গড়ে তুলেছিলো। সেগুলো আবার ভাড়া দিয়ে অর্থ আদায়ও করছিলো। এতে মহাসড়কটি সরু আকার ধারণ করেছিলো। এ অভিযানের মাধ্যমে সড়ক ও জনপদের বিস্তৃত জায়গা বেড়িয়ে এসেছে। এখন এই জায়গা সড়কের নির্মান কাজ দ্রুত শুরু না করা হলে আবারও দখল হয়ে যাবে।

স্থানীয় বাসিন্দা জাকারিয়া খান বলেন, সম্প্রতি বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়রের হস্তক্ষেপে সাগরদী ব্রিজের দুই পাশে দুটি বেইলি ব্রিজ বসানো হলে, নগরর আমতলার মোড় থেকে রুপাতলী হাউজিং পর্যন্ত সড়কের যানজট কমেছে। তবে সাগরদী মাদ্রাসা থেকে শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত টোলঘর পর্যন্ত অবৈধ স্থাপনার কারনে ও মহাসড়ক সরু থাকার কারনে এ থেকে পরিত্রান পায়নি দক্ষিনাঞ্চলবাসী। আজ যে জায়গা উদ্ধার হলো তাতে যদি দ্রুত সড়ক নির্মাণ না করা হয়, তাহলে সময়ের সাথে সাথে তা দখল হয়ে যাবে। আর এবারের অভিযানে জনগনের স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহন রয়েছে বিধায় কোন বাধার মুখেও পরতে হয়নি।

© 2023 বরিশাল বাণী কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by Eclipse Web Host